বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অপহরণ-হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী দুই সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে দায়ী করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 30 Apr 2014, 08:03 PM
তিনি বলেছেন, “যুবলীগ-ছাত্রলীগের জঙ্গি কানেকশনে আছে। এদের সম্পর্ক জঙ্গিদের সঙ্গে, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে।
“গুম, হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ-যুবলীগ। এদের কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বড় ব্যবসায়ী, শ্রমিক সবাই অতিষ্ঠ।”
নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি অপহরণের ঘটনা নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার মধ্যে বুধবার ঢাকায় জোট শরিক জাগপার এক আলোচনা সভায় একথা বলেন খালেদা।
কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই সভা চলার মধ্যেই নারায়ণগঞ্জে অপহৃত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ছয়জনের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যায়। নজরুল যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগে।
বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, বিরোধী মত দমনের অংশ হিসেবে গুম-হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুদিন আগেই দাবি করেন, গত এক বছরে বিএনপির ৩১০ জন নেতা-কর্মী গুম অথবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
খালেদা বলেন, আলোচনা করে নিরপেক্ষ ব্যবস্থায় অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করা না হলে গুম ও খুন বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
এজন্য আলোচনা করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আলোচনার দ্বার খোলা আছে। আসুন আলোচনা করি। আলোচনা করে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন।”
বরাবরের মতো নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে পদত্যাগ করতে কমিশনারদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
“একটি আজ্ঞাবহ কমিশন। নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। সময় থাকতে নিজেরা বিদায় নিন। অবিলম্বে পদত্যাগ করুন।”
দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই মামলায় অভিযুক্ত খালেদা সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানকে ‘অন্ধ’ বলেও মন্তব্য করেন।
“দুদক চোখে দেখে না, সে আন্ধা। সে শুধু চোখে দেখে বিরোধীদের। অপকর্ম করছে আওয়ামী লীগ। আর মামলা দিচ্ছে বিরোধীদের নামে। এরা জামিন পর্যন্ত দেয় না।”
সরকারি দল ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগও করেন খালেদা।
“কোর্টগুলো পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদেরকে নির্দেশ পালন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখানো হয় তাদেরকে।”
বর্তমান সরকারকে ‘ক্রীতদাসের সরকার’ আখ্যায়িত করে তাদের পতন ঘটাতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাগপার সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসহাক প্রমুখ।
ফখরুল বলেন, “বর্তমান সরকার জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। তাই তারা অত্যাচার, নির্যাতন , গুম এবং খুন করছে। প্রতিদিন মানুষ হত্যা ও গুম হচ্ছে।
“কিন্তু গুম-খুন করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকে না, এরাও থাকবে না।”