বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনের চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। সেইসঙ্গে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছে দলটি।
Published : 15 Dec 2013, 09:43 PM
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধের মধ্যেই দশম সংসদ নির্বাচনের কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন।
এর মধ্যে রোববার রাতে এক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সরকারের পোষ্য নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের দিয়ে সাজানো প্রশাসনের সহযোগিতায় ১৫৪ জন ব্যক্তিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রহসনের নাটক নির্বাচন কমিশন মঞ্চস্থ করেছে, তা নজিরবিহীন এক লজ্জাজনক ঘটনা।
“আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, সাজানো প্রশাসনের নির্বাচনের প্রহসন ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথিত ফলাফল বাতিলসহ নির্বাচনী কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এত প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বলেছিলেন, ‘সমঝোতার’ মাধ্যমে প্রার্থী দেয়ায় এই সংখ্যা কম হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে এলেও একই প্রক্রিয়া নেয়া হত।
তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “এতে থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। এটা প্রমাণ করে, প্রধানমন্ত্রী জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস কখনোই মনে করেন না এবং জনগণের ভোটের প্রতিও তার কোনো আস্থা নেই।
“জনগণের রায়কে প্রধানমন্ত্রী ভয় পান বলেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধস পরাজয়কে এড়ানো ও গণরোষ থেকে বাঁচার জন্য ভোটারদের অর্ধেকেরও বেশি সংসদীয় আসনে ভোট দেয়ার সুযোগ না দিয়ে তথাকথিত প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার কলঙ্ককে বরণ করে নিতে কুণ্ঠিত হননি।”
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে হরতালের পর টানা অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী দল, যাতে দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগও সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে। বিজয় দিবসের পর নতুন করে অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণার আলোচনাও রয়েছে।
সংঘাতের মধ্যে জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকোর মধ্যস্থতায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপ শুরু হলেও সমঝোতার সম্ভাবনা ক্ষীণ দেখছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ফখরুল বলেন, “গত পাঁচ বছরে নির্যাতিত হয়েও শুধু দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে এখনো সঙ্কট নিরসন চাই। সব দলের অংশগ্রহণে ও নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে আমরা ইতিবাচক মনোভাব থেকে দূরে সরে আসিনি।”
“সরকারের সৃষ্ট এই সঙ্কট থেকে তাদেরই বেরিয়ে আসতে হবে,” বলেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, জয়পুরহাটে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন।
যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে রোববার বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর হরতালে সংঘাতে এই সাতজন নিহত হন।