করোনাভাইরাস মহামারী সামলাতে সরকারের মধ্যে ‘অস্থিরতা কাজ করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
Published : 28 Jun 2021, 05:24 PM
লকডাউন-শাটডাউনসহ বার বার ঘোষণা পরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় মহামারী মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতারও অভিযোগ তোলেন সাবেক এই মন্ত্রী।
ইনু বলেন, “গত কয়েকদিনের পত্রিকার রিপোর্ট এবং সরকারের বক্তব্য বিবৃতি সবকিছু মেলালে যা দেখা যায় তা অতি উদ্বেগজনক। সরকারের ভেতরে আমি অস্থিরতা লক্ষ্য করছি।
“গত কয়েক দিনে লকডাউন-শাটডাউন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং তা ঘন ঘন সংশোধন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অদলবদল করা। এসব বক্তব্য বিবৃতির মধ্য দিয়ে অস্থিরতাই প্রকাশ পাচ্ছে।”
সরকারের আদেশে ‘পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও রয়েছে’ মন্তব্য করে ইনু বলেন, “এরকম পরিস্থিতিতে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। একই সঙ্গে আমি যতটুকু জানি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ নয়টি মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। এই নয়টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাও লক্ষণীয়।”
গণমাধ্যমে প্রকশিত সংবাদের প্রসঙ্গ টেনে সাবেক মন্ত্রী ইনু বলেন, “করোনায় মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। শহরেই নয়, জেলা উপজেলা শহরে সংক্রমণ ঘটেছে। ঘরে ঘরে অনেক অসুস্থ। জেলা উপজেলায় রোগীর জন্য বেড পাওয়া যায় না। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে। সরকারও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন।”
এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে ‘লকডাউন’ বা ‘শাটডাউনের’ বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন জাসদ সভাপতি। কিন্তু লকডাউনে মানুষের যে দুর্ভোগ, তা নিয়ে তার উদ্বেগ আছে।
“অভিজ্ঞতা বলে, দুই/তিন দিনের মধ্যে খাদ্যের জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকার শুরু হয়। সঙ্কট দেখা দেয়। অপরদিকে সংক্রমিত ব্যক্তির জন্য বেড, অক্সিজেনের চাহিদা ও আইসিইউর জন্য দৌড়াদৌড়ি…।
“এক্ষেত্রে জেলা উপজেলার হাসপাতালে অবিলম্বে কিছু বেড বাড়ানো উচিত। আইসিইউ হয়তো বাড়ানো যাবে না, কিন্তু হাই ফ্লো নেইজল ক্যানুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, পোর্টেবল অক্সিজেন যোগাড় করার সুযোগ রয়েছে। আমার দাবি থাকবে, একটা রোগীও যেন হাসপাতাল থেকে ফিরে না যায়, তার চেষ্টা করতে কবে।”
মহামারীর বিরুদ্ধে লড়তে টিকারও কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে ইনু বলেন, “সর্বোচ্চ টিকা কূটনীতি প্রয়োগ করে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। দেশের ভেতরে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্ব সকলকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি মনে করি টিকাই মানুষকে বাঁচাবে।”