মেজর সিনহা হত্যায় ‘র’ ও ‘মোসাদের’ হাত দেখছেন ডা. জাফরুল্লাহ

কক্সবাজারে পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত ও ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2020, 10:10 AM
Updated : 9 August 2020, 10:36 AM

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার প্রতিবাদে রোববার দুপুরে রাজধানীতে এক সমাবেশ থেকে ঘটনা তদন্তে ‘নিরপেক্ষ কমিশন’ গঠনের দাবি জানান গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি।

 ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, “যে মেজর সিনহা (অবসরপ্রাপ্ত) হত্যাকাণ্ড- এটা কী ওসি প্রদীপের ঘটনা, না এর সাথে ভারতীয় র এবং ইজরাইলের মোসাদ যুক্ত আছে?

“এই ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। আমার মতে এই পু্লিশি ইনকোয়ারি দিয়ে হবে না। একটা নিরপেক্ষ কমিশন করে সেটা করতে হবে।”

৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ।

দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া রাশেদ ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ প্রামাণ্যচিত্র তৈরির জন্য মাসখানেক ধরে হিমছড়িতে ছিলেন। তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে।

কক্সবাজারের পুলিশ বলছে, রাশেদ তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে এ ঘটনায় তার দুই সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে দুটো মামলা দায়ের করে পুলিশ।

এ ঘটনায় সিনহার বোন ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যাদের মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ সাতজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনার যে বিবরণ পুলিশ দিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ১০ শতাংশ পুলিশ অফিসার আছেন তারা প্রদীপের (প্রদীপ কুমার দাশ) মতোই। বাকিরা সজ্জন।

“এই ঘটনার তদন্ত কমিশন না হলে এ্টা দেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে।”

সীমান্তে ভারতের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের পরও সরকারের নমনীয়তার সমালোচনা করে বিএনপিপন্থি এই পেশাজীবী নেতা বলেন, “প্রতিদিন ভারত সীমান্তে লোক মারছে। আমাদের আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল তাদের সংসদে আইন করে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

“আমাদের কোনো কোনো মন্ত্রী বলছেন, আমাদের সাথে ভারতের রক্তের সম্পর্ক। এই রক্ত তো দূষিত রক্ত। দূষিত রক্ত দিয়ে কী হবে? পরিচ্ছন্ন রক্ত দরকার।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের নীতি প্রয়োগের’ প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।

সংগঠনের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতির জুনায়েদ সাকি বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রচিন্তার হাসনাত কাইয়ুম, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের রকিবুল ইসলাম রিপন, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন ও সাবেক ছাত্র নেতা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বক্তব্য দেন।