ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য পাঁচ বছর ধরে নিউ ইয়র্কে অবস্থানরত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে দলটির একজন নেতা জানিয়েছেন।
Published : 01 Nov 2019, 10:53 PM
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারের চিকিৎসকরা তার আশা ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মিল্টন ভূঁইয়া।
ওই হাসপাতাল থেকে শুক্রবার দুপুরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার শরীর ওষুধ গ্রহণ করছে না। এমনকি গতকাল থেকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসেও ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন খোকা। মাঝেমধ্যে চোখের পাতা মেলেন, আবার কখনও ঘুমিয়ে পড়ছেন।”
“চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিয়েছেন। পরম করুণাময়ের দয়ার ওপর এখন সব কিছু নির্ভর করছে।”
খোকার বিশেষ সহকারী সিদ্দিকুর রহমান মান্না বলেন, “উনি (খোকা) মাঝেমধ্যে স্বজন-শুভার্থীদের সাথে কথা বলছেন। তবে কথায় জোর নেই, খুবই দুর্বল।”
ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ২০১৪ সালের ১৪ মে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যান। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউ ইয়র্ক সিটির কুইন্সের একটি বাসায় থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সপ্তাহ তিনেক আগে মুখে ঘা দেখা দিলে এই হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।
খোকার স্ত্রী ইসমত হোসেন, ছেলে ইশরাক হোসেন ও ইশফাক এবং মেয়ে শারিকাসহ স্বজনরা নিউ ইয়র্কের ওই হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তারা সবার দোয়া চেয়েছেন।
সাদেক হোসেন খোকার অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অনেক নেতাকর্মী হাসপাতালে গিয়ে তার খোঁজ-খবর রাখছেন। বুধবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস মসজিদে তার জন্য দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
চিকিৎসার জন্য ট্যুরিস্ট ভিসায় সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন খোকা। পরে চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। তা এখনও মঞ্জুর হয়নি।
এদিকে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন নিউ ইয়র্ক কনসুলেটে জমা রয়েছে বলে ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, মারা গেলে যেন দেশে নিয়ে তাকে দাফন করা হয় সেই অনুরোধ করেছেন সাদেক হোসেন খোকা।
মুক্তিযোদ্ধা খোকা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ থেকে বিএনপিতে এসেছিলেন শুরুতেই। ব্রাদার্স ইউনিয়নের সূত্রে বিএনপির ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি খোকার ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও পরিচিত রয়েছে।
১৯৯১ ও ২০০১ সালে ঢাকার সূত্রাপুর-কোতোয়ালি আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সাদেক হোসেন খোকা অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার মৎস্য ও পশু সম্পদমন্ত্রী ছিলেন।
সাদেক হোসেন খোকা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দেশে কয়েকটি দুর্নীতি মামলা হয় এবং কয়েকটিতে সাজাও দেয় আদালত।