রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি, যাকে ভালো লক্ষণ বলে মনে করতে পারছেন না তার ভাই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
Published : 04 Jul 2019, 01:49 PM
বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “উনার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত থাকা মোটেই শুভ লক্ষণ নয়।”
এরশাদের শারীরিক অবস্থার সবশেষ তথ্য জানাতে পার্টি চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই ব্রিফিংয়ে আসেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, “তার (এরশাদের) ড্রাউজিনেস বেড়ে গেছে। প্রায় সময় ঘুমিয়ে আছেন। ডাক্তারদের মতে, ব্লাডে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে। সে কারণে উনার ঘুমের ভাব বেশি হয়েছে।
“উনি এখন সচেতন অবস্থায় থাকছেন না, ঘুমিয়ে থাকছেন। এটা ডাক্তারদের কাছে ভালো মনে হচ্ছে না।”
চিকিৎসকরা এখন রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করছেন বলে জানান জি এম কাদের।
এরশাদের ফুসফুস ও কিডনির অবস্থা ‘উন্নতির দিকে’ বলে বুধবার সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছিলেন তার ভাই। তবে বৃহস্পতিবার তিনি বলছেন, ফুসফুস ও কিডনির সংক্রমণ আসলে ‘সেই হারে’ কমেনি।
“এক্সরেতে দেখা যাচ্ছে যে, লাং অনেকটা ক্লিয়ার। কিন্তু ব্লাড স্ট্রিমের কাউন্টে ইনফেকশনের যে মাত্রা, সেটা কমেনি। শরীরে একটু পানি এসেছে, যতটুকু পানি নিষ্কাশন হওয়া দরকার ছিল, সেটা হচ্ছে না কিডনি কম ফাংশন করার কারণে।”
জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বুধবার বিকালে বলেছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য এরশাদকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছে পার্টি।
কিন্তু জি এম কাদের বৃহস্পতিবার বললেন, এরশাদ সিঙ্গাপুরে যাওয়ার মত শারীরিক অবস্থায় নেই।
“এখানে এসে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসককে চিকিৎসা করতে হবে- এ ধরনের প্রয়োজনীয়তা এ মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। উনার শারীরিক যে অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে.... সেটায় চিকিৎসকদের ধারণা.... আমরা চেষ্টা করতে পারি। তবে উপকার হবে কি না সন্দেহের অবকাশ আছে।”
জি এম কাদের বলেন, বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা সময়ের ব্যাপার। বড় চিকিৎসকরা সব সময় আসতে চান না।
“এখানে চিকিৎসকরা বলেছেন, আমরা যদি মনে করি, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে আনতে হবে, তাহলে আনার ব্যবস্থা করতে তারা আমাদের বলবে।”
সিএমএইচে এরশাদের যে চিকিৎসা চলছে, তা ‘বিশ্বমানের’ বলে বর্ণনা করেন তার ভাই।
তিনি বলেন, “যে কোনো অবস্থায় যে ধরনের চিকিৎসা দরকার, তার জন্য উনাদের প্রস্তুতি আছে।”
এরশাদ দীর্ঘদিন ধরেই রক্তের রোগ মাইলোডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোমে ভুগছেন। ফলে তার অস্থিমজ্জা পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন উৎপাদন করতে পারছে না।
গত ২২ জুন সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করার পর এরশাদের ফুসফুস ও কিডনিতে সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বুধবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, চেয়ারম্যানের অসুস্থতার কারণে ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া’ জাতীয় পার্টির সব সাংগঠিন কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এরশাদের সুস্থতা কামনায় জাতীয় পার্টি শুক্রবার দেশের সব মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করবে বলেও জানান তিনি।