নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পর সিদ্ধান্ত বদলে সংসদে যোগ দেওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ আবদুল কাদের সিদ্দিকী তার প্রশ্নের জবাব পেতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আরও সময় দিয়েছেন।
Published : 10 Jun 2019, 10:41 PM
সংসদে যোগদান প্রশ্নে টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে সোমবার অনুষ্ঠিত জোটের ‘স্টিয়ারিং কমিটির‘র বৈঠকের পর সাংবাদিকদের একথা জানান কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগের সভাপতি।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের উদ্যোগে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত এই জোটে যোগ দেন কাদের সিদ্দিকী।
তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৯ মে সংবাদ সম্মেলন করে কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাতজন সংসদ সদস্যের শপথ নেওয়ার সঠিক ব্যাখ্যা না পেলে তারা আর জোটে থাকবেন না।
সংসদে যোগ দেওয়া নিয়ে শরিকদের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করে পরবর্তী কর্মকৌশল ঠিক করতেই সোমবার ঢাকার উত্তরায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাড়িতে এই বৈঠক হয়।
এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানসহ জেএসডি, গণফোরাম, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্যের নেতারা অংশ নেন।
বৈঠক শেষে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “আমরা ৮ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম, কোনো উত্তর পাইনি। আজকে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।
ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার চরমপত্র দেননি দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমি কোনোদিন আল্টিমেটাম দেইনি। আমি প্রশ্ন রেখেছিলাম। অনেকে অনেকের মতো করে ইয়ে করেন। আল্টিমেটাম অন্য জিনিস।”
তবে সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে এদিনও আপত্তি জানিয়েছেন তিনি।
“সংসদে ছিটেফোঁটা ছয়-সাত সদস্য, ভাত খেতে গেলে যেমন ভাত পড়ে, এরকম ছিটেফোঁটা কয়েকজন শপথ নেওয়ায় জাতি মর্মাহত হয়েছে।”
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যের উপরই জোর দিচ্ছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি।
“আমরা বিশ্বাস করি মানুষের নিরাপত্তা নাই, প্রতিদিন মানুষ মরছে, এই যে অব্যবস্থাপনা- এর থেকে বাঁচতে হলে বৃহত্তর ঐক্য দরকার। আমরাও চাই জাতীয় বৃহত্তর ঐক্য।”
জেএসডি সভাপতি রবও সাংবাদিকদের বলেন, তারা জোটের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।
“সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য আমরা আগামী সভাটা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে করব। এই আন্দোলনের রূপ হবে ঐক্যবদ্ধ, বৃহত্তর ঐক্য।
বর্তমান সংসদকে ‘অবৈধ’ বলার পরও তাতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে রব বলেন, “আজকে আপনারা একজন মহিলা সদস্যের (রুমিন ফারহানা) বক্তব্য দেখেছেন, তিনি বলেছেন সংসদ অবৈধ। আমি বলছি, প্রথম দিনও বলেছি, আজকেও বলছি, এই সংসদ অবৈধ।”
দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের জাহিদ-উর রহমান, মোমিনুল ইসলাম, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল।