রোববার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর মতো বিএনপির আরেক জোটসঙ্গী জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবও একই ধরনের কথা বলেছেন।
মিলনায়তনে বসে স্লোগান দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘মুক্তি হবে না’ মন্তব্য করে দলটির নেতাদের সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের বাইরে বিএনপির এই ‘গণঅনশন’ কর্মসূচি শুরু করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি না মেলায় আধা ঘণ্টা পর ভেতরে গিয়ে কর্মসূচিতে বসেন তারা।
বিএনপি নেতাদের প্রতি জোরাল কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আপনারা এমনি হলের ভেতর আগামী একশ বছর গণঅনশনই বলুন, আর আমরণ অনশনই বলুন, এগুলো করে শেখ হাসিনাকে নড়াতে পারবেন না।
“শেখ হাসিনাকে নড়াতে হলে উনি যা করেছেন ঠিক তেমনি করতে হবে। ভোটের কথা বলেছেন ৩০ তারিখে, ২৯ তারিখে সব ভোট উনি চুরি করেছেন। তাহলে চোরকে সোজা করতে হলে আরেকটু শক্ত হতে হবে।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের ‘সবচেয়ে অপ্রিয় নেত্রীতে’ পরিণত হয়েছেন বলে দাবি করেন কাদের সিদ্দিকী।
“আজকেই যদি নির্বাচন হয়, আমি তো বলতে পারি- বেগম খালেদা জিয়ার সাথে শেখ হাসিনা একটা গণভোটে আসেন। ৫ শতাংশ ভোটও আপনি পাবেন না।”
বিএনপির নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তার প্যারোলে মুক্তিরও বিরোধিতা করেন কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, “প্যারোলে মুক্তি হবে বেগম জিয়ার মৃত্যু, গণতন্ত্রের মৃত্যু।”
বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ‘পায়ে পা মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে’ আন্দোলনে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন কাদের সিদ্দিকী।
“আমি বলতে চাই, খালেদা জিয়া অতি শিগগিরই মুক্তি পাবেন, তাকে জনতার আদালত মুক্তি দেবে,” বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেন তিনি।
সেখানে বক্তব্যে খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে ঢাকার অবস্থা কেমন হবে, তার একটি কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরেন তাদের আরেক জোটসঙ্গী নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
“দৃশ্যটা এ রকম যেদিন বেগম জিয়া বেরুবেন সেদিন ঢাকা মহানগরে মানুষের ঢল নামবে। সমস্ত মানুষ এক সাথে হবেন আর বেগম জিয়া তখন মানুষের মুক্তির কথা বলবেন, গণতন্ত্রের মুক্তির কথা বলবেন।”
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আ স ম রব বলেন, “শ্লোগান দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে না। যদি তাকে মুক্ত করতে চান ইনিস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে শ্লোগান দিয়ে হবে না। সকলকে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে হবে, গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে হবে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে জাতীয় নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, তিনি এখন শুধু বিএনপি নেত্রী নন।
“আমি বলতে চাই, এক লক্ষ কর্মী জেলে আছে, ৫০ লক্ষ কর্মীর মামলা আছে। দরকার হলে আরো ৫০ লক্ষ আমরা কারাগারে যেতে রাজি আছি তাহলেই খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারে।”
আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না মন্তব্য করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেন, তাদের নেত্রীর বিষয়টি অন্য নাগরিকদের মতো হলে সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে তার জামিন হত। কিন্তু ‘সরকারের কারণে’ তা হচ্ছে না।
“আমি আইনজীবী হিসেবে বলছি, আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্ত করা সম্ভবপর হবে না। আন্দোলন ছাড়া এর অন্য কোনো বিকল্প নাই।”