নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের দিন ধর্ষণের ঘটনার মামলাটি দ্রুত বিচার আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
Published : 06 Jan 2019, 09:31 PM
রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
জোটের নেতা সিপিবির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে তার প্রতি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সহযোগীরা এই পরিকল্পনা করে।
“আমরা বামজোটের পক্ষ থেকে ঘটনার নেপথ্যের পরিকল্পনাকারীসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে এজাহারভুক্ত করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা পরিচালনা করা ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর অভিযোগ, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী এখন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত শুক্রবার বেলা ২টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এসে তারা ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গত ৪ জানুয়ারি মধ্যবাগ্যা গ্রামে গিয়েছিল বামজোটের একটি প্রতিনিধিদল।”
জোটের শীর্ষ নেতা সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের অনেক ঘটনা সংগঠিত হলেও সব ঘটনা দেশবাসীর সামনে আসে না। সুবর্ণচরের ঘটনাও প্রথম থেকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “সারাদেশে নারী ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবার এবং বিরোধীমতের পরিবারের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ঐক্যফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সিপিবি নেতা লক্ষ্মী চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা মনিরউদ্দিন পাপ্পু প্রমুখ।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে এক সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন ও ইটভাটা শ্রমিক রয়েছে।
রুহুল সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। তাকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।