ভোটের দিন ধর্ষণ: রুহুল আমিনকে আ. লীগ থেকে বহিষ্কার

ভোটের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2019, 05:17 AM
Updated : 5 Jan 2019, 05:22 AM

সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক জানান, শুক্রবার রাতে দলের জরুরি সভায় বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত হয়।

রুহুল সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন।

গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গোপাঙ্গরা’ স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে চল্লিশোর্ধ এক নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে।

ঘটনার পর এ পর্যন্ত রুহুলসহ মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রুহুল সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।

আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক বলেন, “কারও ব্যক্তিগত অপরাধের দায়িত্ব দল নিতে পারে না। গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে রুহুল আমিনের নাম উঠে আসায় তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হল। একই সঙ্গে তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হল।”

এই মামলায় গ্রেপ্তার অন্যরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত নয় বলে তাদের বিষয়ে দলের করণীয় কিছু নেই বলে তিনি জানান।

মামলার অপর আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে চরজব্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল জানিয়েছেন।

ধর্ষণের শিকার ওই নারীর অভিযোগ, ভোটের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এরপর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের ‘সাঙ্গোপাঙ্গরা’ বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।

জেলার পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসান আলী বুলু নামে এক ব্যক্তি ওই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। ভোটকেন্দ্রে তার সঙ্গেই ওই নারীর ঝামেলা হয়েছিল। পরে সে ১০ হাজার টাকায় কয়েকজন ইটভাটা শ্রমিককে ভাড়া করে।”

চরজব্বার থানায় ওই নারীর স্বামীর দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা তার বসতঘর ভাংচুর করে, ঘরে ঢুকে বাদীকে পিটিয়ে আহত করে এবং সন্তানসহ তাকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে।

মামলার এজাহারে মোট নয়জনকে আসামি করা হলেও সেখানে চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের নাম না থাকায় বুধবার রাতে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে হতাশা প্রকাশ করেন ওই নারী।

এরপর সেই রাতেই জেলা সদরের একটি হাঁস-মুরগির খামার থেকে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তবে রুহুল আমিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।

ওই নারী এখন নোয়াখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডাক্তারি পরীক্ষায় তাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে জানিয়ে ইতোমধ্যে প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।