নির্বাচন সামনে রেখে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিন ঘণ্টা সংলাপের পর যুক্তফ্রন্টের নেতা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সংলাপের শুরুটা যেভাবে হয়েছে, তাতে তিনি ‘আশাবাদী’।
Published : 02 Nov 2018, 10:33 PM
নির্বাচন সামনে রেখে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিন ঘণ্টা সংলাপের পর যুক্তফ্রন্টের নেতা এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সংলাপের শুরুটা যেভাবে হয়েছে, তাতে তিনি ‘আশাবাদী’।
সরকার যদি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ যদি তৈরি হয়, তাহলে বিকল্পধারা ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থানের মধ্যে কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের পরদিন শুক্রবার বি. চৌধুরীর ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাত পৌনে ৮টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বৈঠক; এরপর চলে রুদ্ধদ্বার আলোচনা। দুই পক্ষের ৪৪ জন নেতার আলোচনার মধ্যেই চলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আপ্যায়ন।
পৌনে ১১টার দিকে গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “আমরা খুশি হয়েছি এই জন্য যে আমাদের কথাগুলো স্পষ্টভাবে বলতে পেরেছি। সেই ভিত্তিতে কয়েকটা কথায় মতৈক্য হয়েছে।”
সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা বলেন, “আমাদের কথাগুলো তারা গ্রহণ করেছে বলে আমাদের প্রতীয়মান হয়েছে।”
সংলাপে তারা কী কী দাবি তুলে ধরেছেন এবং সেসব বিষয়ে শেখ হাসিনা কী উত্তর দিয়েছেন- তা বিস্তারিত তুলে ধরা হয় ব্রিফিংয়ে।
বি. চৌধুরী বলেন, “দাবি বাস্তবায়িত হবে কি না তা আমি বলতে পারব না। তবে তারা স্বীকার করেছেন যে এ দাবিগুলো বাস্তব। তারা স্বীকার করেছেন, এগুলো প্রণিধানযোগ্য, তারা স্বীকার করেছেন এগুলো তারা বিবেচনা করবেন এবং কোনো কোনো জায়গায় তারা স্বীকৃতি দিয়েছেন এটা এটা গ্রহণ করা হবে।
আমরা এর বেশি কিছু বলব না। আমরা দেখব তারা কীভাবে এটা বাস্তবায়িত করে। সেই হিসেবে আমরা বলব আমাদের সংলাপ আন্তরিকভাবে হয়েছে বলে মনে হয়। সরকার যদি কথা রাখেন, তাহলে এটা আশাবাদের দিকেই যাচ্ছে।”
ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা যেখানে সংলাপ নিয়ে হতাশার কথা বলেছেন, সেখানে সংলাপের পর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে কি না- তা জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “যদি সরকারকে নিরপেক্ষকরণ করা যায়, নির্বাচন কমিশন যদি সরকার থেকে পুরোপুরি আলাদা থাকতে পারে, তাহলে অবশ্যই একটি পরিবেশ তৈরি হবে। আমাদের অন্য দাবিগুলো গ্রহণ করলে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা নির্বাচনে যেতে পারি। ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করব।”
প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের যে দাবি, তা পূরণ না হলেও নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি নিরপেক্ষ হলে ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ডের অনেকটা কাছাকাছি’ পৌঁছানো সম্ভব বলে মনে করেন যুক্তফ্রন্টের শীর্ষ নেতা।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীত্বেই যে নির্বাচন হবে তা সংলাপে আবার স্পষ্ট করেছে আওয়ামী লীগ। তবে যুক্তফ্রন্টের কিছু দাবির সঙ্গে ক্ষমতাসীনরা একমত হয়েছে, যা ইতিবাচক।
“আজকে অন্তত কিছু দাবি মেনে নিল। আমরা একটা ভালো শুরু করেছি, আমরা দেখব। আমরা নিজেরা আলোচনা করব।… এক লাফেই সব হয়ে যাবে, এটা না, আমরা রাজনীতি করি।”
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, সংসদ ভেঙে দেওয়া, ইসি পুনর্গঠন, ইভিএম ব্যবহার না করা ও ভোটে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মত সাত দফা দাবি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে যান যুক্তফ্রন্ট্রের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
তারা গণভবনে ঢুকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে ব্যাংকোয়েট হলে ঢুকে নির্ধারিত আসনে বসেন।
সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকোয়েট হলে ঢুকলে বিকল্প ধারার বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আবদুল মান্নান ও শমসের মবিন চৌধুরী তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাতে জনগণ তাদের নেতৃত্ব খুঁজে নিতে পারে, কীভাবে তা খুঁজে নিতে পারে সেটাই লক্ষ্য।”
গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। উন্নয়নের ধারা সচল থাকুক। অনেক ঘাত প্রতিঘাত বাধা অতিক্রম করে আমরা গণতান্ত্রিক ধারা অবাহত রেখেছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের ধারা অবাহত থাকুক, সেটাই আমরা চাই।”
এরপর যুক্তফ্রন্টের ২১ নেতার সঙ্গে ক্ষমতাসীন জোটের ২২ নেতার রুদ্ধদ্বার আলোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এই সংলাপ চলে।
সংলাপে বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিকল্পধারার নেতা আবদুল মান্নান, শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, সহসভাপতি মাহমুদা চৌধুরী, মাহবুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও নির্বাহী সদস্য সাবেক এমপি মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী; সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা; বিএলডিপি সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন; বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া; ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ইশা; বাংলাদেশ জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান; জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী; হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের সভাপতি দীলিপ কুমার দাশ এবং লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী।
অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু, মো.আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আনিসুল হক, মাহাবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুস সোবহান গোলাপ, শ ম রেজাউল করিম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, মইনুদ্দিন খান বাদল ও সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া।
সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ গণভবনের বাইরে অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের বলেন, “ভালো আলোচনা হয়েছে, আশা করি তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।”
যুক্তফ্রন্টের সাত দফা # নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা। সংসদ ভেঙে দেওয়া, সম্ভব না হলে নিষ্ক্রিয় রাখা। # নির্বাচনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কর্মচারীদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা। নির্বাচন কমিশনকে শতভাগ রাষ্ট্রপতির অধীনে রাখা। তফসিল ঘোষণার পর এমপিরা যাতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো প্রকল্প উদ্বোধন বা প্রতিশ্রুতি দিতে না পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। প্রয়োজনে আইন করে মন্ত্রী ও এমপিদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করা। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের বিল বোর্ড, ব্যানার, পোস্টার অপসারণ করা। # নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে। প্রয়োজনে এক দিনের জন্য সংসদ ডেকে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। অথবা মন্ত্রিপরিষদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা জোট থেকে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে একটি সন্তোষজনক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। নির্বাচনে সকল প্রকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার অথবা বর্তমান সরকারের নির্বাচন বিষয়ে ক্ষমতা সীমিত করতে হবে। # নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে-সেজন্য সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে এবং নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত মোতায়েন করতে হবে। ভোটের দিন সেনাবাহিনীকে সীমিত ক্ষমতা দিতে হবে যেমন, আটক রাখার ক্ষমতা ও ভোট কেন্দ্রে থাকা। # নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা। # নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। # নির্বাচন সম্পর্কিত মামলা নির্বাচনের পর এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা। সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন অতি প্রণয়ন করা।
|
কাদেরও ‘আশাবাদী’
সংলাপ শেষে রাত পৌনে ১১টায় আওয়ামী লীগের পক্ষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে আসেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্টের অনেকগুলো দাবি তারা ‘মেনে নিয়েছেন’।
“তাদেরকে আমরা খুবই পজিটিভ বলে মনে হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তারা অত্যন্ত ইতিবাচক ও গঠনমূলক কথা বলেছে। তারা আসবে বলে মনে হয়েছে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির যে দাবি, তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ একমত এবং সরকারের মন্ত্রী এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন বা ভিত্তি স্থাপনের কাজ মোটামুটি শেষ করে ফেলেছেন।
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষা নিয়ে যুক্তফ্রন্টের দাবির বিষয়েও আওয়ামী লীগ একমত জানিয়ে কাদের বলেন, “দুই নম্বরে তারা যেটা বলেছেন, তা আমরা মেনে নিয়েছি। … এ বিষয়গুলো গতবারও ছিল, এবারও থাকবে।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে নন। তবে তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করবে। স্থানীয় প্রশাসন যেখানে প্রয়োজন মনে করবে সেখানে সেনাবাহিনী যাবে।
আর অধ্যাদেশ আকারে সংশোধিত আরপিও জারি হলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ইভিএম কতখানি ব্যবহার করা সম্ভব হবে তা এখনও ‘স্পষ্ট নয়’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর হাতেও নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী যুক্তফ্রন্ট্রের নেতাদের উদ্বেগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে জানাবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের সময় সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার বিষয়ে দুই পক্ষই একমত হয়েছেন। আর সংসদ ইতোমধ্যে ‘নিস্ক্রিয় হয়েছে’।
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, যুক্তফ্রন্টের নেতারা সংলাপে সরকার পরিবর্তন বা নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ‘জোর কোনো দবি উত্থাপন করেনি’।
“গঠনমূলক আর ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে,দে আর হ্যাপি।”
সংলাপ শেষে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সামনে এসে যুক্তফ্রন্টের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব তুলে ধরেন বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যেসব দাবি তুলে ধরেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।”
‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নে যুক্তফ্রন্টের দাবির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ‘দ্বিমত করেননি’ জানিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনকে বুঝতে হবে, এখন দায়িত্বটা নির্বাচন কমিশনের। তাদের উপলব্ধি করতে হবে, তাদের ক্ষমতা কতখানি বেশি। এখন তাদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন, প্রশ্ন করতে পারেন কেবল একটি লোক, তিনি প্রেসিডেন্ট। সরকার তাদের কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।
“এই ক্ষমতায় বলীয়ান হয়ে যদি নির্বাচন কমিশন সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যায় তাহলে তাদের পক্ষে একটি সুন্দর ভোট শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব।”
বদরুদ্দোজা বলেন, তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিলবোর্ড ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার দাবির সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘নীতিগতভাবে একমত’ হয়েছেন।
প্রানমন্ত্রী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পক্ষে থাকলেও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে তাদের ভোটের দায়িত্বে আনার বিষয়ে পুরোপুরি ভিন্নমত পোষণ করেছেন বলে জানান যুক্তফ্রন্টের নেতা।
“ইভিএমের এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ নিয়ে তো অধ্যাদেশ জারি হয়ে গেছে। তবুও তিনি অঙ্গীকার করেছেন তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করবেন।”
নির্বাচনের আগে সকল রাজবন্দিকে মুক্তিকে মুক্তি দেওয়ার যে দাবি ঐক্যফ্রন্টের ছিল, সে প্রসঙ্গে বদরুদ্দোজা বলেন, “আমরা বলেছি রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে, সন্ত্রাসীদের নয়। তিনি বলেছেন, ‘গতকালই আমরা (ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে) একমত হয়েছি। রাজবন্দিদের তালিকা চেয়েছি’।”
যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেন,“নির্বাচনকালীন সরকার বা জাতীয় সরকার গঠন প্রসঙ্গে আমাদের দাবির সাথে প্রধানমন্ত্রী একমত হন নাই। তবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ থাকবে।.. শুধু কথায় হয় না, এখন কাজে দেখার বিষয় রয়ে গেছে।”
অন্যদের মধ্যে বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, মুহাম্মদ ইউসুফ, মাহমুদা চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।