গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে বর্তমান মেয়রদের বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী এনেছে বিএনপি।
Published : 09 Apr 2018, 09:48 PM
গাজীপুরে মেয়র প্রার্থী করা হয়েছে হাসানউদ্দিন সরকারকে; খুলনায় প্রার্থী হচ্ছেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
সাবেক এই দুই সংসদ সদস্য আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন।
গাজীপুরে এম এ মান্নান এবং খুলনায় মনিরুজ্জামান মনি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের হারিয়ে এখনও মেয়রের দায়িত্বে রয়েছেন।
মনি ও মান্নান দুজন এবারও বিএনপির প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন; রোববার দলের মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন।
কিন্তু সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, হাসান সরকার ও মঞ্জুকে ধানের শীষ প্রতীক দিচ্ছেন তারা।
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি অবস্থায় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা দীর্ঘ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
ফখরুল বলেন, “আমরা আশা করি, জনগণের সমর্থন পাব। অতীতেও আমরা পেয়েছি। গত নির্বাচনে গাজীপুরে লক্ষাধিক ভোটে এবং খুলনায় ৬০/৭০ হাজার ভোটে আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করেছিলেন। এবারও আমরা আশা করি সেই ফলাফলই আসবে।”
সুষ্ঠু ভোটের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, “সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেবেন এবং প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে, পুলিশ নিরপেক্ষ থাকবে। এটাই আমরা চাই। নির্বাচন কমিশন যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে দুই সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। গাজীপুরে গতবার হেরে যাওয়া আজমতউল্লাহ খানকে বাদ দিলেও খুলনায় গতবার হেরে যাওয়া তালুকদার আব্দুল খালেককে এবারও প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। গাজীপুরে নৌকার প্রার্থী হচ্ছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতা জাহাঙ্গীর আলম।
দুটি সিটিতে বর্তমান মেয়রদের কেন মনোনয়ন দেওয়া হল না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এগুলো দলের ইন্টারন্যাল ব্যাপার।
“আপনাদের জানার জন্য বলি, আমরা সকলের সাথে কথা বলেছি, সংগঠনের স্বার্থে। মান্নান সাহেবের সাথেও কথা বলেছি। সব প্রার্থীর কাছে জানতে চেয়েছি, কী সুবিধা-অসুবিধা আছে। সব কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত হয়।”
দলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে খুলনার মেয়র মনি কিংবা গাজীপুরের মেয়র মান্নানের কোনো প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
প্রার্থী ঘোষণার আগে অসুস্থ মান্নানকে গুলশানের কার্যালয়ে ডেকে এনে তার সঙ্গে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা কথা বলেন।
এক সময়ের জাতীয় পার্টি নেতা হাসান সরকার এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং গাজীপুর জেলা কমিটির সহসভাপতি। তিনি টঙ্গি পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। জাতীয় পার্টির আমলে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু দলের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
খুলনায় মনি ছাড়াও বিএনপির প্রার্থী হতে চাইছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম মনা।
গাজীপুরে মেয়র হতে মান্নানের সঙ্গে তার ছেলে এম মনজুরুল করীম রনিও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন। তবে বিদেশে থাকায় রোববার সাক্ষাৎকারে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।
হাসান সরকার ছাড়াও প্রার্থী হতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন সালাউদ্দিন সরকার, শরাফত হোসেন, শওকত হোসেন সরকার ও আবদুল সালাম।
তফসিল অনুযায়ী, এই দুই সিটি করপোরেশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১২ এপ্রিল; যাচাই-বাছাই ১৫-১৬ এপ্রিল ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ এপ্রিল।
জাতীয় নির্বাচনের বছর এই দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই দলই গুরত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
রোববার দলের মনোনয়ন ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, জয়ী হতে পারবে, এমন প্রার্থীই বেছে নিয়েছেন তারা।