‘নিরপক্ষে’ সরকারের অধীনে দ্রুত মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
Published : 26 Jul 2015, 01:44 AM
তিনি বলেছেন, “পুলিশ-র্যাব প্রশাসন দিয়ে জোর করে বেশি দিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। এ্রর পরিণতি হয় ভয়াবহ। আমরা তা চাই না। তাই সরকারকে বলব, এখনো সময় আছে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।”
শনিবার রাতে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিতদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
সরকার বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে অভিযোগ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি নেত্রী।
তিনি বলেন, “দেশে গণতন্ত্র নেই। আইনের শাসন নেই। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ। মিটিং-সভা-সমাবেশ-মিছিল-মানববন্ধন করতে পারবে না। এভাবে এক বন্ধ অবস্থার সৃষ্টি করেছে তারা(সরকার)।
“সারা দেশটাকে এভাবে তারা কারাগারে পরিণত করেছে। সরকারের একটাই কাজ- বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া। এভাবে মামলা দিয়ে তারা শুধু বিএনপি কিংবা ২০ দলেরই ক্ষতি করছে না, দেশের ক্ষতি করছে। কারণ বিদেশিরা বলবে, বাংলাদেশে কি শুধু এসব হয়! বাংলাদেশ কি গণতন্ত্রহীন থাকে?”
তিনি বলেন, “বিদেশিদের কাছে আমাদের ইমেজ নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। দেশটাকে তারা শেষ করে দিচ্ছে। আটকের নামে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে দেশের ইমেজ নষ্ট করা হচ্ছে।
“এর ফলে শ্রমবাজার আমরা হারিয়ে ফেলেছি। রেমিটেন্স কমে গেছে। এটা এই অবৈধ সরকার নিজেও স্বীকার করেছে। আমাদের পোশাকশিল্পের চাহিদাও আজ কমে যাচ্ছে।”
বর্তমানে দেশে ‘অরাজক পরিস্থিতি’ রিরাজ করছে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, “দেশের মানুষের আজ কোনো নিরাপত্তা নেই। ব্যাপক অরাজকতা চলছে। কোথাও কোনো শান্তি ও নিরাপত্তা নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই। মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, জমিদখল, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
“কেবল তাই নয়, তারা প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। যোগ্য ও ভালো অফিসার হলে তার পদোন্নতি হয় না। আমার একজন পিএস ছিলেন, তাকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধু আমার কারণে তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু অতীতে আমরা কখনো তা করিনি।”
জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম খান রুমা এবং জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি শফিকুল ইসলাম খান রুমাসহ জেলার আইনজীবীরা খালেদা জিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
ঈদের পর এটাই ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রথম কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি।
মতবিনিময় সভায় দলের নেতাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, হারুন-আল রশিদ, উকিল আবদুস সাত্তার, আবদুর রেজ্জাক খান, মাহবুবউদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম, বোরহান উদ্দিন, মহসিন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।