বিএনপির আন্দোলন খরায় পড়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিভিন্ন দলের সঙ্গে তারা (বিএনপি) যে জোট গঠন করেছে বাস্তবে এর কোনো প্রভাব নেই।
এসময় আগামী নির্বাচনে দলটি স্বেচ্ছায় অংশ না নিলে জোর করা হবে না বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রোববার ঢাকার কেরানীগঞ্জের জেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি বলেন, “নির্বাচনে আপনারা না এলে আমরা জোর করে আনতে যাব না। তবে নির্বাচন করতে দেবেন না। এখানে খবর আছে। হতে দেবেন না। কীভাবে হতে দেবেন না? কত ধানে কত চাল আমরা দেখিয়ে দেব।”
বিএনপির আন্দোলন বাস্তবে ভুয়া মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কী হল ১০ দফা… কি হল এত দলীয় জোটের?"
এর আগে সরকারের বিরুদ্ধে জোট ভাঙার চেষ্টার অভিযোগ এনেছিল বিএনপি।
সেই প্রসঙ্গে কাদের বলেন, “ফখরুল সাহেব আপনাদের দল বা জোট কোনোটাই ভাঙব না আমরা। আপনাদের জোট তাসের ঘরের মতো আপনারাই ভেঙে দেবেন। এই জোট বাংলাদেশে টিকবে না, টিকতে পারে না।
তিনি বলেন, “বিএনপি অসুস্থ হয়ে অচিরেই হাসপাতালে যাবে। নির্বাচনে না গেলে আইসিইউতে যাবে। মির্জা ফখরুল আবার লাফাতে শুরু করেছে। জনগণ নাই, ঢাল তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার।
“নির্বাচনে আসবেন না ভালো কথা, সংবিধান আছে; নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। চৌদ্দ সালে আপনারা আসেননি বয়কট করেছেন, নির্বাচন কি হয়নি? হয়েছে। কী দিয়ে নির্বাচন প্রতিরোধ করবেন, আগুন-সন্ত্রাস? যে হাতে আগুন নিয়ে আসবেন সেই হাত আমরা পুড়িয়ে দেব। ভোটকেন্দ্র ভাঙতে আসবেন হাত ভেঙে দেব।”
দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, “ওদের (বিএনপি) মতিগতি খারাপ। এজন্য উল্টাপাল্টা কথা বলতে শুরু করেছে। তাদের আন্দোলনের গতি যত কমছে অভিযোগ তত বাড়ছে। পাবলিক নাই, নেতাকর্মীও কমছে।”
সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিল গণতন্ত্র মঞ্চ এবং ১২ দলীয় একটি নতুন জোট।
গত ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো যুগপৎভাবে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন করছে। গত দুই মাসে তারা দেশব্যাপী গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচি করেছে। আর আগামী ৪ মার্চ পদযাত্রার নতুন কর্মসূচি পালনের কথাও রয়েছে।
এ বিষয়ে কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব ক্ষমতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, যে স্বপ্ন দেখিয়ে হাড়ি-পাতিল-কম্বল নিয়ে সভা সমাবেশ স্থলে সাত দিন আগে থেকে হাজির। কেউ লাল কার্ড, কেউ হলুদ কার্ড দেখায়।
“কেউ বলে ১০ তারিখে দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায়, কেউ বলে ১১ তারিখে এয়ারপোর্টে ছুটে যেতে… সেদিন না কি বিদেশে পালিয়ে যাওয়া তারেক রহমান ফিরে আসবে। এ দলও ক্ষমতা ফিরে পেতে চায়! এ দেশে হারানো ক্ষমতা ফিরে যাওয়া কঠিন।”
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে আবার চক্রান্ত হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিবিরে গোলমাল পাকানোর চক্রান্ত… এসব আমরা জানি। এসব করে শেখ হাসিনাকে হটাবেন ক্ষমতার মঞ্চ থেকে?
“মনে রাখবেন পঁচাত্তর আর ২০২৩ এক নয়, ২০২৩ আর ২০০১ এক নয়। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার অস্বাভাবিক সরকার। তত্ত্বাবধায়ক প্রধান বঙ্গভবনে শপথ নিয়ে কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ১৩ জন সচিবকে বরখাস্ত করল। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের মানুষ চায় না।”
এসময় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন কাদের।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুনের সঞ্চালনায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য দেন।