“যারা জাতির পিতাকে ভালোবেসে, তাদের ভেতর কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না,” বলেন তিনি।
Published : 07 Jun 2024, 04:06 PM
বঙ্গবন্ধু হত্যার সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের কোনো স্বীকৃতি দিয়ে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেছেন, “একজন আওয়ামী লীগের নেতা হিসাবে, কর্মী হিসেবে- মানু মজুমদার সুবেদিত ছিলেন৷ তিনি ছিলেন জাতির পিতার একজন আদর্শ কর্মী। জাতির পিতাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন তিনি তার জীবনকে মৃত্যুর মুখে দাঁড় করিয়ে আপস করেন নাই। জাতির পিতা হত্যাকারীর খুনি জিয়া-মোশতাককে নির্মূল করার জন্য অস্ত্র হাতে নিয়ে তারা প্রতিরোধ করেছিল।
“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে পক্ষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমরা কাজ করেছি। সেখানে মানু মজুমদারের ভিতরে কোনো লোভ কাজ করেনি। যারা জাতির পিতাকে ভালোবেসে, তাদের ভেতর কোনো ষড়যন্ত্র ছিল না৷"
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে নেত্রকোণা-১ আসনের সাবেক এমপি মানু মজুমদারের স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের সংগঠন প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদ তাদের সাধারণ সম্পাদকের স্মরণে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
মানু মজুমদার ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার হন। পরে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১০ বছর জেল খেটে ১৯৮৫ সালে কারামুক্ত হন তিনি।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানু মজুমদার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোণা-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উদ্দেশে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার কাছে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবস্থান অনেক উপরে। অনেক উচ্চতায়। আপনাদের প্রতি তার যে দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ, তার যে ভালোবাসা, এটাকে কোনো স্বীকৃতি দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না।
“প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রতি শেখ হাসিনার যে দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে মানু মজুমদার সংসদ সদস্য হিসাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা তুলে ধরেছেন। প্রতীকী অর্থে মানু মজুমদার ছিলেন আপনাদের (প্রতিরোধ যোদ্ধা) প্রতিনিধি, তিনি অনন্য উচ্চতায়।"
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাছিম বলেন, “বিশ্বাসঘাতকদের অবস্থান সবসময় থাকে, ষড়যন্ত্রকারীরা থাকে। জাতির পিতার আদর্শের শেখ হাসিনার নেতৃত্বের একজন বিশ্বস্ত সহচর ছিলেন মানু মজুমদার।
“জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে কেউ নাকি প্রতিবাদ করেনি, এটা ছিল নির্মম অসত্য কথা। মিথ্যা কথা। কারণ আপনারা হলেন সেই সময়ের সাহসী সন্তান- যারা প্রতিরোধ যুদ্ধ রচনা করেছিলেন।”
প্রতিরোধের যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের দুঃখের সাথে, বেদনার সাথে আপনারা প্রতিবাদের মহান দায়িত্বটি পালন করেছেন। সেই মহান দায়িত্ব পালনের জন্য আমরা সারা জীবন- যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনায় বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে, যতদিন জাতির পিতার আদর্শ বিরাজমান থাকবে; ততদিন প্রতিটি যোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ মানুষের হৃদয়ে জায়গা থাকবে৷ এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই।”
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “আমরা জানি ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্টের পরবর্তী সময়ে আপনাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি নতুন করে চেতনায় সমৃদ্ধ হয়েছিল। আপনারা তৎকালীন জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাকের নির্মম নির্যাতনের দিনগুলো…সামরিক জান্তার কারাগারে রিমান্ডের নামে মাসের পর মাস কষ্ট করেছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন।
“আপনাদেরকে যারা দুষ্কৃতি বলে, ওই শ্রেণির মানুষেরা আইনের দাবি করত তৎকালীন সময়। তাদের দুষ্কৃীতি বলার মধ্য দিয়ে আপনাদের কষ্ট পাওয়ার কোনো কারণ নেই।"
প্রতিরোধ যোদ্ধা পরিষদের সভাপতি আ হ সেলিম তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কার্যনির্বাহী সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, প্রয়াত মানু মজুমদারের সহধর্মিণী ক্যামেলিয়া বিশ্বাস।