“আমরা দেশের মানুষকে যদি সচেতন করতে না পারি, যদি নিজেরা সচেতন না হই তাহলে এই সরকারের হাত থেকে বাঁচতে পারব না”, বলেন তিনি।
Published : 26 May 2024, 07:40 PM
আওয়ামী লীগ সরকার বার বার ক্ষমতায় থাকলে বিএনপির অস্তিত্ব থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মানুষ সচেতন না হলে দেশের ‘স্বাধীনতাও বিলীন হয়ে যাবে’ বলে শঙ্কায় তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জীবন-সংগ্রামের ওপর লেখা বইয়ের বাংলা সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রোববার বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর লেখা ‘বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইভ, হার স্টোরি’র বাংলা সংস্করণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘খালেদা জিয়া: জীবন ও সংগ্রাম’।
বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন শাহরিয়ার সুলতান। ইতি প্রকাশনা ৬৭০ পৃষ্ঠার বইটির দাম রেখেছে দুই হাজার টাকা।
গুলশানে হোটেল লেকশোরে এই আয়োজনে মির্জা আব্বাস বলেন, “এই সরকার বার বার যদি ক্ষমতায় থাকে, তাহলে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকতে দেবে না।
“সবচেয়ে বড় কথা হল এই সরকার থাকলে এ দেশের স্বাধীনতা থাকবে না, যদি দেশের সাধারণ মানুষ সচেতন না হয়। আমরা দেশের মানুষকে যদি সচেতন করতে না পারি, যদি নিজেরা সচেতন না হই তাহলে এই সরকারের হাত থেকে বাঁচতে পারব না।”
খালেদা জিয়াকে তাদের সামনে আসতে দেয়া হয় না, কথা বলতে দেওয়া হয় না দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, “উনার চিকিৎসায় বাংলাদেশের ডাক্তাররা আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন, ‘তাকে অবিলম্বে বিদেশে নেওয়া দরকার’।”
জেনেশুনে একটা মানুষকে ‘হত্যা করা হচ্ছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, “ইতিহাস সাক্ষী হয়ে থাকবে। যারা উনাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না, তারা ইতিহাসে অপরাধীর মত থাকবে।”
‘যখন সুযোগ আসবে, তাদের বিচার হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন মির্জা আব্বাস।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে এভারকেয়ার হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার কথা তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “এত নির্দয়-নিষ্ঠুর আচরণ কোনো মানুষ মানুষের সঙ্গে করতে পারে, এটা ভাবা যায় না।”
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যেসব বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে, চিকিৎসকরা সেগুলো দেখিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এই দৃশ্য দেখার পরে কেউ তাকে আটকে রাখতে পারে, এটা আমার কাছে অবিশ্বাস্য।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, “চোখ দেখাতে আমাদের প্রেসিডেন্ট ফ্যামিলিসহ চলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে, আরো অনেক নেতা যখন-তখন চলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর, লন্ডন, জার্মানিতে। অথচ বেগম জিয়াকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এভাবে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।”
অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে ও কবি আবদুল হাই শিকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, বইয়ের অনুবাদক শাহরিয়ার সুলতান, ইতি প্রকাশনার প্রকাশক জহির দীপ্তি এবং প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহর স্ত্রী দিনারজাদি বেগম রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতা আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনেরএজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, মনিরুল হক চৌধুরী, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, শ্যমা ওবায়েদ, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।
ভেঙে দেওয়া ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর মজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাম্যবাদী দল (মার্কবাদী-লেলিনবাদী) হারুন চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর, জাগপা খন্দকার লুৎফুর রহমান, ইকবাল হোসেন প্রধান, এনডিপির আবু তাহের, পিপলস পার্টির বাবুল সর্দার চাখারি, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করীম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকীও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।