ইসি চাইলে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে: তথ্যমন্ত্রী

“আইনজ্ঞরা মনে করেন গাইবান্ধা ৫ উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে,” বলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2022, 03:06 PM
Updated : 19 Oct 2022, 03:06 PM

নির্বাচন কমিশন চাইলে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ‘ভোট কেন্দ্রের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন’ বলে আইনজ্ঞদের মতামত তুলে ধরেন।

বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, "আইনজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে ভোটের গোপন বুথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে কে কাকে ভোট দিচ্ছে তা দেখা মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং গাইবান্ধা ৫ উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেই কাজটি করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে।

"এই বিষয় নিয়ে আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক সমালোচনা দেখছি এবং বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালও এটির সমালোচনা করে সংবাদ ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে, আজকেও প্রকাশিত হয়েছে।"

তথ্যমন্ত্রী বলেন, "আমার নিজের বক্তব্য নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণের এবং গণমাধ্যমে সাংবাদিক ও বোদ্ধা ব্যক্তিদের অভিমত হচ্ছে- গোপনকক্ষ গোপনকক্ষই এবং মানুষ গোপনেই ভোট দেবে এটি তার অধিকার। ক্যামেরা লাগিয়ে কে কোন মার্কায় কাকে ভোট দিচ্ছে সেটি যদি দেখা হয় তাহলে গোপনকক্ষ তো আর গোপন থাকল না এবং সেটি আবার অন্যদের দেখানো হয়, তাহলে আইনজ্ঞরা বলছেন সেটি হচ্ছে ‘ইনফ্রিঞ্জমেন্ট অব প্রাইভেসি’ বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন।

"প্রত্যেকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রয়েছে। সাধারণ জনগণ এবং আইনজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর হস্তক্ষেপের অর্থ মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ।"

হাছান মাহমুদ বলেন, "আপনারা জানেন যে, এর আগের মেয়র নির্বাচনে শামীম ওসমান সাহেব সম্ভবত কাকে ভোট দিয়েছিলেন সেটি গণমাধ্যমের সামনে দেখিয়েছিলেন। এর ফলে নির্বাচন কমিশন তাকে নোটিস করেছে যে, আপনি এভাবে কাকে ভোট দিয়েছেন সেটি গণমাধ্যমে দেখাতে পারেন না, জনসম্মুখে দেখাতে পারেন না।

“যে নির্বাচন কমিশন আগে নোটিস দিয়েছিল সেই নির্বাচন কমিশন যদি নিজেই সেটি দেখে এবং অন্যদের দেখায় তবে সেটি ‘ইনফ্রিঞ্জমেন্ট অব প্রাইভেসি।"

ভোট কেন্দ্রে অবশ্যই সিসি ক্যামেরা থাকতে পারে, অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ সেখানে ঢুকছে কি না বা সেখানে কোন গণ্ডগোল বা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে কি না সেটি দেখার জন্য অবশ্যই তা থাকতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন যদি সেটি সহায়ক মনে করে, থাকতে কোনো বাধা নেই।

“কিন্তু গোপনকক্ষে ক্যামেরা লাগালে তো কে কোথায় ভোট দিচ্ছে সেটি দেখার সুযোগ আছে। সুতরাং সেটি লাগিয়ে কে কোন মার্কায় ভোট দিচ্ছে সেটি দেখাকে বিশেষজ্ঞরা মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বলছেন, সেটিই আমি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।"

ঢাকা থেকে সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ইসির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "দেখুন, আমি তো আজকে কয়েক দশক ধরে ভোট দিচ্ছি, কিন্তু ইভিএমে ভোট দেই নাই। আমারও তো জানতে হবে কিভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হয়।

“গ্রামে তো মানুষ জিজ্ঞেস করে- 'ভোট ক্যামনে দিব'। তখন প্রার্থীর এজেন্ট, নির্বাচনী কর্মকর্তা যারা থাকেন, তারা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, ভোট দিতে সাহায্য করেন। নির্বাচন কমিশন দূরবীক্ষণের মাধ্যমে দেখেছেন। তারা কে এজেন্ট, কে কর্মকর্তা আর কে বহিরাগত, সেই সব চেহারা কিভাবে শনাক্ত করেছেন তা জানা নেই।"