মিলিয়ন ডলার খরচ করে বদনাম করছে বিএনপি: কাদের

ফাইল ছবি

মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে বিএন‌পি প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অভিযোগ, হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে তারা দে‌শের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ম্লান করছে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "কাঙ্ক্ষিত স্যাংশন না পেয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম চিরাচরিত ভঙ্গিতে প্রলাপ বকছে। মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে তারা প্রতিনিয়ত সরকারবিরোধী কুৎসা ও বদনাম রটাচ্ছে।

সম্প্রতি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধাদানকারী ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ছয় সদস্যের ‘লেখা’ কথিত এক চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে, বিএনপির কয়েকজন নেতাও সেটা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে লেখা কথিত সেই চিঠিতে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে সমালোচনা মুখর আওয়ামী লীগের নেতারাও। এ চিঠির সত্যাসত্যের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, “আমি জানি না এটা সত্য কি-না। এটা যদি সত্য হয়েও থাকে, এমন প্রচেষ্টা প্রথম নয়। দলটি (বিএনপি) ক্ষমতায় আসতে চায় লুট এবং অপব্যবহার করতে, যেটা তারা ২০০১-২০০৬ সময়ে করেছে।”

মঙ্গলবার বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, "বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের মান ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ম্লান করে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে বিদেশি প্রভুদের নিকট ধর্ণা দিচ্ছে এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।"

‌তি‌নি ব‌লেন, "দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও গণরায়কে অবজ্ঞা করে তারা কেবল বিদেশি প্রভুদের নিকট করুণা প্রার্থনা করছে।"

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকার ভীত নয়। কারণ আমরা সর্বদা সংবিধান, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

"যদি এই ভিসানীতি যথাযথভাবে প্রয়োগ হয় তাহলে বিএনপি নেতাকর্মীদের এর আওতায় আসার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা তারা বরাবরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে ও নির্বাচন প্রতিরোধের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতির অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে আসছে।"

তিনি বলেন, "মিথ্যাচার-অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে বিএনপি নেতারা খুনি-স্বৈরশাসক, সংবিধান ও গণতন্ত্রের হত্যাকারী স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে ভ্রান্ত মিথ তৈরি করার অপচেষ্টা করে আসছে। মূলত এই জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান ধ্বংস করেছে।

"প্যাড সর্বস্ব ভুঁইফোড়, বিবৃতিজীবী, পাকিস্তানপন্থি রাজনীতিক ও যুদ্ধাপরাধীদের ধরে এনে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল গঠন করে পাকিস্তানপন্থিদের ক্ষমতায়ন করেছিল জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম ও গণমাধ্যম থেকে মুক্তিযুদ্ধের জয়ধ্বনি ‘জয় বাংলা’ ও ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ নির্বাসনে পাঠিয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতির প্রচলন করেছিল।”

ওই সময় দিনের পর দিন দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ করে রেখে কার্যত অঘোষিতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "আজকে বিএনপির কোনো কোনো নেতার বক্তব্যে তাদের এতটাই দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে যে, তাদেরকে আর কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বলা চলে না। জনগণের প্রতি আস্থা না রেখে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিদেশি প্রভুদের পদলেহনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।"

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এ ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ‘খুনিগোষ্ঠী ও ষড়যন্ত্রকারীদের’ নিকট আত্মসমর্পণ করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী এই অপশক্তিকে উৎখাত করা হবে।