বিএনপি ও আওয়ামী লীগ- দুই পক্ষকেই জনসভার স্থান পাল্টানোর প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ। দুই দলই জানিয়েছে, ‘সম্ভব নয়’। ডিএমপির সিদ্ধান্ত আসছে শুক্রবার।
Published : 27 Oct 2023, 01:51 AM
ঢাকায় প্রায় তিন দশক ধরে রিকশা চালান হবিগঞ্জের আহাম্মদ উল্লাহ; জীবনে তিনি অনেক ঘটনার সাক্ষী। দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে, তার মাথায় প্রথম আসে রুটি-রুজির চিন্তা।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় দুই বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক সমাবেশের দিন কোনো সংঘাত-সহিংসতা হলে নিজে নিরাপদ থাকতে পারবেন কি না, সেই দুশ্চিন্তাও তার হচ্ছে।
আহাম্মদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাস্তায় নামবাম, একটা এক্সিডেন্ট অইতে পারে, মারামারি লাগলে আমারও সমস্যা অইতে পারে। সমাবেশ মানেই তো রাস্তাঘাট সবাই বন্ধ কইরা দিব।”
দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ গত কয়েক মাসে হয়েছে অনেকগুলোই। এক কিলোমিটারের মধ্যে দুই পক্ষই শান্তিপূর্ণ জমায়েত করার পর প্রশংসা করেছেন বিদেশিরাও। সরকারের পক্ষ থেকেও সহনশীল রাজনীতির উদাহরণ টানা হয়েছে।
তবে ২৮ অক্টোবরকে ঘিরে উদ্বেগের কারণ ১৭ বছর আগের এই দিনটির স্মৃতি।
২০০৬ সালের এই দিনটিতেও ঢাকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের সমাবেশের ছিল পাশাপাশি এলাকায়, ঘটে যায় তুলকালাম। পরে সংঘাত সহিংসতার এক পর্যায়ে জারি হয় জরুরি অবস্থা।
যা ঘটেছিল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর
সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল বিএনপি সরকারের। দিনটিতে আওয়ামী লীগ জমায়েত হয় মুক্তাঙ্গনে, বিএনপি সমাবেশ আহ্বান করে নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে, জামায়াত জড়ো হয় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে।
আগের কয়েক দিন ধরে থমথমে রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সেদিন সকাল থেকে সংঘাতময় হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুরানা পল্টন মোড়ে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে বেধে যায় সংঘাত।
লগি বৈঠা নিয়ে আসা আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে লাঠিসোঁটা নিয়ে আসা জামায়াত কর্মীরা পেরে ওঠেনি। দিনভর মুহুর্মুহু গুলি চলে, জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী নিহত হন।
সে সময় আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক জোট আন্দোলনে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, সেই প্রশ্ন নিয়ে বিরোধে।
সে সময় বিধান ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি। বিএনপি সরকারের আমলে বিচারপতিদের অবসরের বয়স সীমা দুই বছর বাড়ানোর পর কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়কের প্রধান হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।
কে এম হাসান এক সময় ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এই কারণ দেখিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে মেনে না নিয়ে আন্দোলনে যায়। একেবারে শেষ সময়ে কে এম হাসান দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন।
পরে সংবিধানে উল্লেখিত আরও কিছু ধাপ বাদ দিয়ে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের হাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব অর্পণ করে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
২৮ অক্টোবর ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন সকাল থেকে শুরু হওয়া সংঘাত নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে সন্ধ্যায় নামানো হয় বিজিবি।
এরপর সংঘাত সহিংসতা অব্যাহত থাকে। এক দফা পিছিয়ে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি স্থির হয় ভোটের তারিখ। নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট।
ভোটের ১১ দিন আগে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী, প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়েন ইয়াজউদ্দিন। শপথ নেয় ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু ৯০ দিনে ভোটের আয়োজন না করে তারা সময় নেয় প্রায় দুই বছর।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরের সেই নির্বাচনের আড়াই বছর পর উচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। ফিরে আসে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা।
এরপর বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীরা জয় পান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আন্দোলনের হুমকি দিলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভোটে আসে তার ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের পর বিএনপি অভিযোগ তোলে আগের রাতে ভোট নিয়ে নেওয়ার। এরপর তারা আবার তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ফিরে যায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা করে গত ১২ জুলাই থেকে রাজপথে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি ও সমমনারা। অক্টোবরেই চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা ছিল নেতাদের। পরে ঘোষণা হয় ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের। এদিন থেকে ‘মহাযাত্রা’ শুরুর আসার পর রাজনীতিতে ছড়ায় নতুন আলোচনা।
বিএনপি জমায়েত হতে চায় নয়া পল্টনে। পরে আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। আর জামায়াতে ইসলামী জানায়, তারা মতিঝিলে সমাবেশ করতে চায়, যদিও পুলিশ জানিয়েছে, কোনোভাবেই এর অনুমতি মিলবে না।
প্রায় দেড় দশক আগের এই দিনটির কথা এখনও ভোলেননি আহাম্মদ আলী। সামাজিক মাধ্যমের এই যুগে পুরনো ঘটনাপ্রবাহ আবার ফিরে আসছে নানাভাবে। তাই তার মত আরও হাজার হাজার মানুষ আছেন উৎকণ্ঠায়। ২৮ অক্টোবর কী হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা।
তবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ‘বড় ধরনের কোনো ঘটনার’ আশঙ্কা করছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, “আমাদের উন্নয়ন সহযোগী যারা আছে, তারাও কোনো সহিংসতা চায় না। উন্নয়ন সহযোগীদের এই বক্তব্য নৈর্ব্যক্তিকভাবে নিয়ে সেটা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য যেমন প্রযোজ্য, বিএনপির জন্যও প্রযোজ্য।”
বিএনপির এক দফা দাবি আদায়ের মত ‘সময় ও পরিস্থিতি’ এখন নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এ কারণে তাদের উচিত নির্বাচনে এসে জনগণের কাছে যাওয়া। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশে এবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কারণ, ভিন্ন কিছু হলে সেটা হজম করতে পারবে না বাংলাদেশ।”
পুলিশের চেষ্টা ‘ব্যর্থ’
ঢাকা মহানগর পুলিশ চেষ্টা করেছিল দুই দলকে রাজপথ থেকে সরিয়ে ময়দানে নিতে। বিকল্প দুটি স্থানের নাম চেয়ে চিঠি দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। কিন্তু দুই দলই পাল্টা চিঠিতে বলেছে, তাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। এখন আর পেছানো সম্ভব নয়।
বিএনপি এক থেকে সোয়া এক লাখ এবং আওয়ামী লীগ দুই লাখ লোক জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে। তবে পুলিশ এখনও কোনো দলকে সমাবেশ করার জন্য সবুজ সংকেত দেয়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) খ. মহিদ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই বড় দলকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তারা তার জবাব দিয়েছে। আমরা এগুলো দেখছি ইতিবাচকভাবে। দেখি কী সিদ্ধান্ত আসে।
“তারা (দুই দল) বলছে রাস্তায় করবে। কিন্তু আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। শুক্রবার এ বিষয়ে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানান হবে।”
দুই শিবিরের সমাবেশ ঘিরে সহিংসতা ঠেকাতে তৎপরতা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ; সমাবেশ ঘিরে ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসানোর কথা জানিয়েছে র্যাব।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ কোথায় হবে, পুলিশ সেটা নিয়ে ভাবছে। তবে জামায়াত সমাবেশের অনুমতি পাবে না, এটা সাফ জানিয়ে রেখেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, “নিবন্ধন না থাকায় জামায়াতে ইসলামীকে অনুমতি দেওয়া হবে না।”
কর্মীদের আগেই জড়ো করার পরিকল্পনা বিএনপির
বিএনপির এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবার জমায়েত বাড়াতে তারা ‘পূর্বের অভিজ্ঞতা’ কাজে লাগাবেন।
কী সেই অভিজ্ঞতা- এই প্রশ্নে সেই নেতা বলেন, “দেখা গেছে, সমাবেশের আগে পুলিশ নেতাকর্মীদের আসতে নানা রকম বাধা দেয়। নেতাকর্মীদের আগমন যাতে পুলিশ বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সেজন্য দুয়েকদিন আগে থেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী।”
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জনতার যে স্রোত নামবে, সেটা রোখা যাবে না। ভয়ভীতি, মামলা-গ্রেপ্তার করে লাভ হবে না। দিগন্তরেখায় গণতন্ত্রের মুক্তির সূর্য উঠতে শুরু করেছে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “গ্রামগঞ্জ, শহর, বাজার, বন্দর সবখানেই এখন সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে। জনগণ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। চলমান গণতান্ত্রিক সংগ্রামে জনগণের বিজয় হবেই, মানুষ তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেই।”
মহাসমাবেশ ‘সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ’ হবে, নিশ্চয়তা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আন্দোলনের ‘মহাযাত্রা’ শুরুর ঘোষণা নিয়ে আলোচনায় আসার চার দিন পর তিনি ব্রিফিং করে বলেছেন, “২৮ তারিখের কর্মসূচির পরে যে যার জায়গায় চলে যাবে এবং পরবর্তী কর্মসূচির জন্য তারা অপেক্ষা করবে।”
মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ‘মিথ্যা মামলার অজুহাতে’ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করছে বিএনপি। নেতারা জানান, ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে চার শতাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৬ হাজার ৭৮০জনকে। গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৬২০ জন।
‘মোকাবেলার’ প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের
বিএনপির ‘মহাসমাবেশকে’ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পাল্টা সমাবেশের পাশাপাশি যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে সারা দেশে পাড়া মহল্লা, অলিগলিসহ রাজধানীর মোড়ে মোড়ে সতর্ক পাহারায় থাকার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ওই দিন মূল দলের পাশাপাশি থাকবে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হবে সতর্ক পাহারা। প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্যান্ডেল টাঙিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে অবস্থান নেবেন। দলীয় সংসদ-সদস্য ও কাউন্সিলররাও তাদের অনুসারীদের নিয়ে মাঠে থাকবেন।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ঢাকার অলিগলিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবস্থানে থাকছে। দেশের মানুষকে শান্তিতে রাখতে আমরা নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সতর্ক অবস্থানে থাকব। আর সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই সতর্ক অবস্থানে থাকব।”
দলের সভাপতিমণ্ডলীর জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “তাদের (বিএনপি) বিষয়ে আমরা সতর্ক ও সজাগ আছি, সাংগঠনিকভাবে তাদের মোকাবেলা করতেও প্রস্তুত। সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস করতে এলে কঠিন জবাব দেওয়া হবে।”
নজর বিদেশিদেরও
বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সহিংসতাহীন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসও এবার বেশ তৎপর।
জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা নীতি আরোপ করে তার প্রয়োগও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই নীতির আওতায় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকারী ও তাদের নিকটাত্মীয়দের ভিসা দিচ্ছে না দেশটি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার বলেছেন, “আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কেবল ভোটের দিনের বিষয় নয়। বরং এর মানে হচ্ছে, ভোটের আগের এই মাসগুলোতে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন পক্ষ যাতে অবাধে গণতান্ত্রিক চর্চায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ পায়।”
অচলাবস্থা নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘অর্থবহ’ সংলাপের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল; ওই সুপারিশে সমর্থন দিয়েছে দেশটির সরকারও।
সর্বশেষ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে’ যুক্তরাষ্ট্র।
“সব পক্ষের শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারাটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং অতি অবশ্যই ভোটাররা।”
[প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন লিটন হায়দার]