জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে চাপ সামলাতে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
Published : 19 Jul 2023, 11:51 PM
পরবর্তী সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম হওয়ার মধ্যে নিজেদের জোট ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বৈশ্বিক অর্থনৈকি সংকট সামাল দিয়ে উন্নয়ন অব্যাত রাখতে সরকারের পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বুধবার রাতে গণভবনে ১৪ দলের এই বৈঠক হয়। এতে জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারিসহ জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এখন মোটামুটিভাবে এমন জায়গায় আছি, অর্থনৈতিক চাপটা আছে, ডলারের ক্রাইসিস এটাতো সারা বিশ্বব্যাপী, আমাদেরও ওপরও আছে। তারপরও আমি বলবো আমাদের অর্থনীতি গতিশীল আছে। এবারও আমরা ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি।
“আমরা সমাজের সবদিকে লক্ষ্য দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।”
দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “চাল এবং অন্যান্য ফসল প্রচুর পরিমাণে আছে। আজকে আমাকে খাদ্যমন্ত্রী বলেছে, আমাদের তো চাল রাখার জায়গা নেই। এখন জায়গা খালি করি কীভাবে?
“যাদেরকে আমরা রেশন দিই, যেমন সশস্ত্র বাহিনী আছে, পুলিশ বাহিনী আছে, তাদের যাদের যাদের রাখার ব্যবস্থা আছে, তাদের আমরা একবারে তিন মাসেরটা দিয়ে দেব। ভিজিডি, ভিজিএফ মাসে মাসে যেটা দিই, সেটাও দরকার হয় তিন মাসের দিয়ে আমরা জায়গা করব এবং সেখানে নতুন করে আবার খাদ্য মজুদ করব।”
গ্রামে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “হয়ত ঢাকা শহর সবাই দেখেন, গ্রামের দিকে যাননি। গ্রামের মানুষ, গ্রামে কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নাই। আজকেও আমি খবর নিলাম বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা এসেছিলেন, জিজ্ঞেস করলাম কী অবস্থা? বলে এখানে দাম বেশি, আমাদের ওখানে সব ঠিক আছে।”
তিনি বলেন, “আজকে মানুষ অন্তত খেয়ে-পরে ভালো আছে। এখন বর্ষাকালেও শীতকালের সবজি দেখেন, সবই পাওয়া যায়। আবার সেটা দাম বেশি হলে সবাই চিৎকার-চেঁচামেচিও করে। কিন্তু আগে তো এগুলো পাওয়াই যেত না।
“মানুষের জীবন পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, সেটাও কার্যকর করতে হবে। সেখানে কিছু চ্যালেঞ্জ আমাদের আসবে। সে প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।”
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতু নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। পদ্মা সেতু, এই একটা সিদ্ধান্ত, এখন সবাই বাংলাদেশকে সমীহ করে। পদ্মা সেতুতে দক্ষিণের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার খুলে গেছে।”
ভূমিহীন গৃহহীনদের বিনামূল্যে ঘর দেওয়া, একই দিনে সারাদেশে শত সেতু ও শত সড়ক উদ্বোধন, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
“দেশে ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।”
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ২০০৮ এ আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন আমরা ঘোষণা দিয়েছি স্মার্ট বাংলাদেশ করব।”
সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ১৪ দলের নেতাদের কথাও শোনেন।