কাজলের পক্ষে এর আগে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়েছিল। সেই আবেদনের শুনানি হবে আগামী ১৮ মার্চ।
Published : 14 Mar 2024, 03:56 PM
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনার সময় হট্টগোল ও হাতাহাতির মামলায় বিএনপি-জামায়াতপন্থি নীল প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চার দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার কাজলকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবুল কালাম আজদ।
ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুর রহমান এ বিষয়ে শুনানি শেষে আসামি কাজলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কাজলের পক্ষে এর আগে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়েছিল। সেই আবেদনের শুনানি হবে আগামী ১৮ মার্চ। সে কারণে বৃহস্পতিবার নতুন করে তার জন্য কোনো জামিন আবেদন করা হয়নি।
তার অন্যতম আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাকিম আদালতে আজ তার জামিন চাইনি। চেয়েছি তার চিকিৎসা, কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা, নিজের গাড়িতে পুলিশ প্রহরায় কারাগারে পৌছানোর সুযোগ আর এজলাসে নিজের স্ত্রী-পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ।
“বিচারক এজলাসে হাজির তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দিয়েছেন। চিকিৎসার আদেশ দিয়েছেন আর কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন।”
শুনানিতে কাজলের আরেক আইনজীবী ব্যরিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “ডিবির হেফাজতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কারাগারে তার চিকিৎসা দরকার। আর যেহেতু তিনি বার কাউন্সিলের সদস্য, পর পর দুই বার সুপ্রিমকোট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক, তিনি লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন, সে কারণে কারাগারে তিনি ডিভিশন পেতে পারেন।”
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয় গত ৬ ও ৭ মার্চ। কিন্তু ঝামেলা বাধে ভোট গণনা নিয়ে।
সম্পাদক পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ৭ মার্চ রাতেই ভোট গণনা শেষ করে ফলাফলের দাবি জানান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে সম্পাদক পদপ্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকসহ অন্যরা শুক্রবার বিকালে ভোট গণনার দাবি জানান।
এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষ হট্টগোল এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাইদ একটি পক্ষের হাতে মারধরের শিকার হন। এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পর থেকেই থেমে যায় ভোট গণনা ও ফলাফল।
এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ৯ মার্চ বিকালে আবার ভোট গণনা শুরু হয়, যা শেষ রাত সাড়ে ১০টার দিকে। সব হিসাব-নিকাশ শেষে রাত দেড়টার দিকে ফলাফল ঘোষণা শেষ হয়।
তাতে সভাপতি নির্বাচিত হন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সম্পাদক হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থী আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
তার আগে ৮ মার্চ শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন নির্বাচন সাব কমিটির কো-অপ্ট সদস্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ।২০ জনের নাম উল্লেখ করে সেখানে যুথীকে এক নম্বর এবং কাজলকে দুই নম্বর আসামি করা হয়।
পরদিন ৯ মার্চ বিকালে রাজধানীর তোপখানা রোডের চেম্বার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কাজলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১০ মার্চ আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী তাকে ৪ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
পুরনো খবর
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে হট্টগোল: রুহুল কুদ্দুস কাজল ৪ দিনের রিমান্ডে