সমিতির ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ চার পদে জয় পেয়েছেন বিএনপি সমর্থকরা; সম্পাদকসহ বাকি ১০ পদে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা।
Published : 10 Mar 2024, 09:52 AM
হট্টগোল, মারামারি, মামলা, গ্রেপ্তারের মত নানা নাটকীয়তার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
তাতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সম্পাদক হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থী আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
সমিতির পরিচালনা পর্ষদের ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতি এবং তিনটি সদস্য পদে নীল প্যানেলের জয় হয়েছে। আর সাদা প্যানেল পেয়েছে সহ সভাপতির দুটি, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সহ সম্পাদকের দুটি, এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের চারটিসহ দশটি পদ।
নির্বাচন সাব-কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের শনিবার গভীর রাতে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ২৬২২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন; তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবু সাঈদ সাগর পেয়েছেন ২৫৩৯ ভোট।
আর সম্পাদক পদে শাহ মঞ্জুরুল হক পেয়েছেন ৩৩১৯ ভোট; তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নীল প্যানেলের রুহুল কুদ্দুস কাজল পেয়েছেন ১৭০২ ভোট।
সহ সভাপতির দুটি পদে সাদা প্যানেলের মো. রমজান আলী সিকদার ও দেওয়ান মো. আবু দাউদ হোসেন সজল জয়ী হয়েছে। একই প্যানেলের মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন।
সাদা প্যানেলের মো. হামায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব নির্বাচিত হয়েছেন সহসম্পাদক।
কার্যনির্বাহী সদস্য পদে সাদা প্যানেল থেকে বিজয়ী হয়েছেন রাশেদুল হক খোকন, মো. রায়হান রনী, মো. বেল্লাল হোসেন (শাহীন) ও খালেদ মোশাররফ (রিপন)।
আর নীল প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছন সৈয়দ ফজলে এলাহী অভি, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয় বুধ ও বৃহস্পতিবার। ৭ হাজার ৮৮৩ জন আইনজীবীর মধ্যে ৫ হাজার ৩১৯ আইনজীবী ভোট দেন। কিন্তু ঝামেলা বাধে ভোট গণনা নিয়ে।
আইনজীবীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষে সম্পাদক পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী রাতেই ভোট গণনা শেষ করে ফলাফলের দাবি জানান।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত প্যানেল থেকে সম্পাদক পদপ্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকসহ অন্যরা শুক্রবার বিকালে ভোট গণনার দাবি জানান।
এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দুই পক্ষ হট্টগোল এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবু সাইদ একটি পক্ষের হাতে মারধরের শিকার হন। এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পর থেকেই থেমে যায় ভোট গণনা ও ফলাফল।
এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার বেলা পৌনে ৩টায় আবার ভোট গণনা শুরু হয়, যা শেষ রাত সাড়ে ১০টার দিকে। সব হিসাব-নিকাশ শেষে রাত দেড়টার দিকে ফলাফল ঘোষণা শেষ হয়।
নির্বাচন ঘিরে হট্টগোল ও মারামারির ঘটনা ঘটনায় নির্বাচন সাব কমিটির কো-অপ্ট সদস্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফ শুক্রবার শাহবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
ওই মামলায় সম্পাদক পদপ্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথিকে এক নম্বর এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য ফোরামের সম্পাদক পদপ্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে ২ নম্বর আসামি করে ২০ জনের নাম দেওয়া হয়।
মামলায় রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ছয় জনকে ইতোমধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে আইনজীবী কাজী বশির আহমেদ, তুষার, তরিকুল, এনামুল হক সুমন ও ওসমান চৌধুরীকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন