নতুন সংসদে যারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে নতুন মুখ যেমন আছেন, তেমনি পুরনোদেরও অনেকে আবার সংসদে ফিরে আসছেন।
Published : 10 Jan 2024, 12:14 AM
ভোটে স্বতন্ত্রের চমকের আগেই বড় এক ঝাঁকুনির মুখে পড়ে বর্তমান সংসদ সদস্যদের বড় একটি অংশ। তাদের অনেককেই নির্বাচনের টিকেট দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ; এরপর ভোটের জয়-পরাজয়ে আরও ঝরে গেছেন পুরনোদের অনেকে। সব মিলে নতুন সংসদে ১৩০ সদস্য বদলে যাচ্ছেন।
দলের সমর্থন টিকিয়ে রেখে আর ভোটারদের মন জুগিয়ে একাদশ সংসদে নিজেদের আসন ধরে রাখা পুরনোদের সঙ্গে ১৩০ বিজয়ী মুখ বুধবার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে সংসদে একেবারে নতুন মুখ যেমন আছেন, তেমনি সাবেকদেরও অনেকে ভোটের মাঠে জিতে আবার সংসদে ফিরছেন।
নির্বাচনকে ঘিরে নানান রাজনৈতিক সমীকরণে একাদশ সংসদ থেকে ছিটকে পড়া বিপুল সংখ্যক এই সংসদ সদস্যদের মধ্যে ১০৬ জনই আওয়ামী লীগের। এদের মধ্যে বড় অংশ দলের মনোনয়ন পাননি; নৌকা প্রতীকে ভোট করে দলের স্বতন্ত্রদের কাছে হেরে যাওয়ার সংখ্যাও বড়। আর কেউ কেউ জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেননি।
অন্যদিকে বর্তমান একাদশ সংসদে থাকা জাতীয় পার্টির ২৩ জনের মধ্যে ১২ জন হেরে গেছেন এবং তিনজন ভোটে অংশ নেননি (রওশন এরশাদ, সাদ এরশাদ ও কাজী ফিরোজ রশীদ)। এছাড়া বিকল্প ধারার দুইজন, ওয়াকার্স পার্টির দুইজন, জাসদের দুইজন, জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) একজন, তরীকত ফেডারেশনের একজন এবং স্বতন্ত্র একজন সংসদ সদস্য বাদ পড়েছেন।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ৬২ আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়ে স্বতন্ত্ররাই মূলত হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়েছেন। ভোটের মাঠে সরব আলোচনা তৈরির পাশাপাশি ফলেও চমক দেখিয়েছেন। তাদের কাছে ধরাশায়ী হওয়া নৌকার ৪০ এর বেশি প্রার্থী রয়েছেন। সঙ্গে দলের মনোনয়ন না পেয়ে আগেই ছিটকে যাওয়া এমপিরা রয়েছেন।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য রাজনৈতিক মিত্রদের অনেকে বিএনপিবিহীন নির্বাচনের ভোটের মাঠে নিজ দল ও ক্ষমতাসীনদের সমর্থন পেয়েও জনপ্রিয়তার বিচারে হেরে গেছেন।
সংসদে এত বড় পরিবর্তনের বিষয়ে বিশ্লেষকরা তাদের পর্যবেক্ষণ বলছেন, বর্তমান সংসদ সদস্যদের অনেকের বিষয়েই ভোটারদের মনে প্রশ্ন ছিল; যার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনের ফলাফলে। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতিতে দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ক্ষমতার লড়াইও এর কারণ। যারা হেরে গেছেন তাদের নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভও ছিল।
নতুন সংসদ থেকে বাদ পড়াদের একটা অংশ দলের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেননি। এবার মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক মন্ত্রীসহ ৭১ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছিলেন। দলের প্রতীক নৌকা ছাড়া এদের কেউ কেউ ভোট করলেও জিততে পারেননি। আর ৪৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেও হেরে গেছেন।
জাতীয় পার্টিও কয়েকটি আসনে আগের এমপিদের বাদ দিয়ে নতুন মুখকে প্রার্থী হিসেবে এনেছে। মনোনয়ন না পাওয়া এমপিদের মধ্যে অনেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে ছিলেন। তবে লাঙ্গল প্রতীক ছাড়া জাতীয় পার্টির শুধু একজন স্বতন্ত্র হিসেবে জয় পেয়েছেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত এবং অপর একটি আসনে ফলাফল স্থগিত থাকার মধ্যেই জয় পরাজয়ের এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, একাদশ সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১০৪ সদস্য দ্বাদশ সংসদে নেই। সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা জাতীয় পার্টির ১৬ জন সদস্য দ্বাদশের যাত্রায় বাদ পড়েছেন।
৭ জানুয়ারির ভোট শেষে আওয়ামী লীগের ২২২ জন এবং জাতীয় পার্টির ১১ জন্য সদস্য জয় পেয়েছেন। এছাড়া প্রথমবারের সংসদে ঢুকতে যাচ্ছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম। সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের একটি করে প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।
এবার হেরেছেন বগুড়া থেকে জিতে আসা একাদশ সংসদের একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম বাবলু। সমতলের নৃগোষ্ঠীদের একমাত্র সদস্য জুয়েল আরেং নৌকা প্রতীক নিয়েও হেরে গেছেন।
জাসদও বর্তমান সংসদে দুটি আসনই হারিয়েছে। তাদের মতো বিকল্প ধারার দুটি আসনও হাতছাড়া হয়ে গেছে। জাতীয় পার্টি জেপির একমাত্র আসনটিও এখন আর নেই। ওয়ার্কার্স পার্টি খুইয়েছে দুটি আসন।
এছাড়া হেরে গেছেন গণফোরামের একমাত্র এমপি মোকাব্বির খান। গত সংসদে ধানের শীষ প্রতীকের একমাত্র এমপি সুলতান মনসুরও দ্বাদশ সংসদে বাদ পড়াদের তালিকায় আছেন।
এর বাইরে আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী পাস করতে পারেননি।
দ্বাদশের এবারের ভোটে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী লড়াই করেছেন; তবে আগের বারের তুলনায় নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্যের সংখ্যা কমেছে। জয়ের মুখ দেখেছেন ১৯ জন নারী, যেখানে একাদশ সংসদে এ সংখ্যা ছিল ২২।
জয় পাওয়া ১৯ নারী প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জন আওয়ামী লীগ মনোনীত; বাকি ৪ জন স্বতন্ত্র হিসেবে ভোট করেন। বাকি যে ৭৭ জন নারী জিততে পারেননি, তাদের মধ্যে মেহের আফরোজ চুমকি, মমতাজ বেগম ও সানজিদা খানমের মত শক্তিশালী প্রার্থীও ছিলেন।
তবে দ্বাদশের নির্বাচনে শুধু আলোচনা নয় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। মোট ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী সংসদে এসেছেন। এর মধ্যে যেমন আছেন দলের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে আসা স্থানীয় নেতা, তেমনি ফেইসবুকের পরিচিত মুখ ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থীও।
কী বলছেন বিশ্লেষকরা
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্তের মতে বর্তমান সংসদ সদস্যের মধ্যে যারা হেরেছেন তারা বিগত দিনে তাদের ভূমিকার কারণে হেরেছেন।
তার ভাষ্য, “এমপি তকমা নিয়ে তারা গণবিরোধী কাজে লিপ্ত ছিলেন, বিশেষ করে ঘরবাড়ি দখল, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেছেন। জনগণ যখনই সুযোগ পেয়েছেন তুলনামূলক ভালো লোকের পক্ষে ভোট দিয়েছে।
“বিগত দিনগুলোতে সংসদ সদস্য থাকাকালীন যারা সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়েছে, ধর্মীয় সুঁড়সুঁড়ি দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও ভূমি দখল করেছিল তাদেরকেও সংখ্যালঘুদের একটি বড় অংশ ভোট দেয়নি।”
নির্বাচনে বেশ কয়েকজন সংখ্যালঘু প্রার্থী হেরে যাওয়া প্রসঙ্গে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সংখ্যালঘু প্রার্থীদের মধ্যে যারা হেরে গেছেন এর পেছনেও কারণ রয়েছে। স্থানীয়ভাবে জনগণ তাদের কাছ থেকে যে ভূমিকাটা আশা করেছে পরাজিতরা সেটা পালন করতে পারেনি। এছাড়া নির্বাচনে তাদের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছিল তারা ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়েছে। এসব কারণে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেনি বলে আমি মনে করি।
“অমুসলিম প্রার্থীরা যারা হেরেছে তারা একদিকে তারা নিজস্ব নির্বাচনি এলাকার জনগণের পক্ষে অবস্থান করেনি। অনেকে অত্যাচারীর ভূমিকা পালন করেছে। সে কারণে মানুষ তাদের পক্ষে ভোট দেয়নি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার মনে করেন, একাদশ সংসদের সদস্যদের যারা এবার নির্বাচিত হতে পারেননি, তাদের বড় অংশের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষের মনে প্রশ্ন ছিল; যার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনের ফলাফলে।
“ক্ষমতাশীল দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ক্ষমতার লড়াই রয়েছে। যারা হেরে গেলেন, তাদের জন্য স্থানীয় জনগণের ক্ষোভ রয়েছে। সেটা সবার জন্য নয়। যিনি এমপি হিসেবে ছিলেন, তার বিরুদ্ধে অন্যরা অনেকে জড়ো হয়ে গেছেন বলেই তিনি হেরে গেছেন।”
তার মতে, “কিছু সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনমত চলে গেছে। এর মধ্যে একটি মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও চাওয়া-পাওয়ার দূরত্বের বিষয়গুলো বোঝা যায়।”
মানবাধিকার কর্মী খুশী কবীর মনে করেন, হেরে যাওয়া সংসদ সদস্যদের বিষয়ে জনমনে নেতিবাচক ধারণা ছিল।
“যদিও সবাই বলছে একতরফা নির্বাচন হয়েছে, একতরফা নির্বাচন হলেও যারা ভোটার তারা নিজেদের মতামত দিয়েছে৷ তারা যাদেরকে চায়নি তাদেরকে ভোট দেয়নি৷”
কুমিল্লাতে বর্তমান চার সংসদ সদস্য এবার হেরে গেছেন। তাদের বাইরে দুইজন মনোনয়ন না পেয়ে ভোটেও আসেননি।
এ জেলার রাজনীতি নিয়ে খোঁজখবর রাখা আহসানুল কবীর বলেন, মানুষ ওই আসনগুলোতে পরিবর্তন চেয়েছিল বলেই পরিবর্তন হয়েছে। কুমিল্লার এই চার আসনে পরাজিত নৌকার প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব, নির্বাচনি এলাকায় কম আসা, জ্যেষ্ঠ নেতাদের অবমূল্যায়ন, কর্মীদেরকে দূরে ঠেলে দেওয়া এবং একাধিক ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় পরাজিত হয়েছেন।
এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে এমপিদের পছন্দের লোকজনকে মনোনয়ন দেওয়া এবং এলাকায় উন্নয়ন না করাসহ বিভিন্ন কারণে মানুষ পরিবর্তন ঘটিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
পুরনোদের বদলে নতুন যারা
রংপুর বিভাগ
পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়নপত্র বঞ্চিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. মজাহারুল হক প্রধান। সেখানে এবার নৌকার টিকেট নিয়ে জিতে এসেছেন নাইমুজ্জামান ভূইয়া।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনে বর্তমান এমপি মো. দবিরুল ইসলামের পরিবর্তে নৌকার টিকেট পেয়ে জিতেছেন মো. মাজহারুল ইসলাম।
দিনাজপুর-১ আসনে নৌকা নিয়ে হেরেছেন বর্তমান এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল। সেখানে জিতেছেন স্বতন্ত্র মো. জাকারিয়া।
নীলফামারী-৩ আসনে লাঙ্গলের এমপি রানা মোহাম্মদ সোহেলকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেলের কাছে হেরেছেন।
নীলফামারী-৪ আসনটি লাঙ্গলের বর্তমান এমপি আহসান আদেলুর রহমানকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তিনি হেরে যান জাতীয় পার্টির আরেক নেতা স্বতন্ত্র মো. সিদ্দিকুল আলমের কাছে।
লালমনিরহাট-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী মো. মতিয়ার রহমান নতুন এমপি হিসেবে এসেছেন। এ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এবার নির্বাচন করেছেন রংপুর-৩ আসন থেকে।
রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ দলীয় কোন্দলে নিজ দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে যান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. আসাদুজ্জামানের কাছে।
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ছেলে রাহ্গির আলমাহি এরশাদ এবার দলীয় কোন্দলে মনোনয়ন নেননি। এ আসনে তার চাচা জিএম কাদের নিজেই এ আসনে প্রার্থী হয়ে জিতেছেন।
রংপুর-৫ আসনে বর্তমান আওয়ামী লীগ এমপি এইচ এন আশিকুর রহমানের স্থানে তার ছেলে রাশেক রহমানকে নৌকার টিকিট দিলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকারের কাছে হেরে যান।
কুড়িগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবার মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগ সমর্থিত লাঙ্গলের প্রার্থী এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান জয়ী হয়েছেন।
কুড়িগ্রাম-২ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি পনির উদ্দিন আহমেদ এবারও দল ও আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হামিদুল হক খন্দকারের কাছে।
কুড়িগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এম এ মতিন এবার দলের মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে নৌকার মাঝি হয়েছিলেন সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে। তিনি জিতেছেন।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বর্তমান এমপি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবার নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে সংসদ থেকে বাদ পড়েছেন। তার পরিবর্তে তরুণ ছাত্রলীগ নেতা মো. বিপ্লব হাসান দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জিতে এসেছেন।
গাইবান্ধা-১ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি শামীম হায়দার পাটওয়ারী আওয়ামী লীগের সঙ্গে দরকষাকষিতে এ আসনে এবার নৌকার সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগারের কাছে।
গাইবান্ধা-২ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মাহবুব আরা বেগম গিনিকে বসিয়ে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুর রশিদ সরকারকে। তিনি হেরে গেছেন স্বতন্ত্র শাহ সারোয়ার কবীরের কাছে।
গাইবান্ধা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরীকে বাদ দিয়ে এবার নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয় মো. আবুল কালাম আজাদকে। তিনি জিতেছেন।
রাজশাহী বিভাগ
বগুড়া-৩ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার এবার দলীয় মনোনয়নের পাশাপাশি আওয়ামী লীগেরও সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদীর কাছে।
বগুড়া-৫ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. হাবিবর রহমান মনোনয়ন পাননি। নৌকার নিয়ে ভোট করে জয় পান মো. মজিবর রহমান (মজনু)।
বগুড়া-৭ আসনে গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনেক মারপ্যাঁচে এমপি হয়েছিলেন আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম বাবলু। এবারও তিনি স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু এবার তিনি হেরেছেন নৌকার প্রার্থী মো. মোস্তফা আলমের কাছে।
নওগাঁ-২ আসনে নির্বাচন বন্ধ। একটা কেন্দ্রের ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফল ঘোষণা স্থগিত রয়েছে।
নওগাঁ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. ছলিম উদ্দীন তরফদারকে বসিয়ে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তীকে। কিন্তু ছলিম উদ্দিন বসে না থেকে স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছিলেন এবং নির্বাচনে দ্বিগুণ ভোটে হেরে যান।
নওগাঁ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ বর্তমান এমপি মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিককে বসিয়ে নতুন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল মো. নাহিদ মোর্শেদকে। তিনি তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ এর কাছে হেরে গেছেন।
নওগাঁ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. আনোয়ার হোসেন (হেলাল)কে এবারও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ওমর ফারুকের কাছে হেরে গেছেন।
রাজশাহী-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এবার হেরে গেছেন স্বতন্ত্র মো. শফিকুর রহমানের।
রাজশাহী-৩ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মো. আয়েন উদ্দিনকে এবার বসিয়ে নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদকে এবং তিনি জিতেছেন।
রাজশাহী-৪ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি এনামুল হককে বাদ দিয়ে নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয় মো. আবুল কালাম আজাদকে। এনামুল স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েও পাস করতে পারেননি। দ্বিগুণ ভোটে জিতেছেন নৌকার আজাদ।
রাজশাহী-৫ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি মো. মুনসুর রহমান এবার নির্বাচনে নেই। তার পরিবর্তে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া মো. আব্দুল ওয়াদুদ জয়ী হয়েছেন।
নাটোর-১ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মোঃ শহিদুল ইসলাম (বকুল) নির্বাচনে দাঁড়িয়ে এবার হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবুল কালামের কাছে।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. হাবিবে মিল্লাত এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে নৌকার টিকেট নিয়ে এমপি হয়েছেন মোছা. জান্নাত আরা হেনরী।
সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রয়াত কো চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম এবার দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। স্বতন্ত্র হিসাবেও তিনি নির্বাচনে ছিলেন না। সেখানে নৌকার নতুন প্রতিনিধি হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন মো. শফিকুল ইসলাম।
সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মেরিনা জাহান দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি এবং ভোটেও তিনি ছিলেন না। তার পরিবর্তে এবার নৌকার মনোনয়ন পাওয়া চয়ন ইসলাম জিতেছেন।
পাবনা-৪ আসনে এবার আওয়ামী লীগের এমপি মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি; তিনি নির্বাচনেও দাঁড়াননি। তার পরিবর্তে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছেন গালিবুর রহমান শরীফ।
খুলনা বিভাগ
মেহেরপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানও এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। নির্বাচনে নেই তিনি। তার পরিবর্তে নৌকার টিকেট পেয়ে এমপি হয়েছেন আবু সালেহ মো. নাজমুল হক।
কুষ্টিয়া-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল হক চোধুরীর কাছে।
কুষ্টিয়া-২ আসনের বর্তমান এমপি ১৪ দলের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবারও নিজের মশাল প্রতীক ছেড়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তিনি মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামারুল আরেফিনের কাছে হেরে গেছেন।
কুষ্টিয়া-৪ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ এবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু তিনি হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের কাছে।
ঝিনাইদহ-২ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী এবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর কাছে হেরে গেছেন।
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মো. শফিকুল আজম খান এবার দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হেরে যান নৌকার নতুন প্রার্থী মো. সালাহ উদ্দিন মিয়াজীর কাছে।
যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. নাসির উদ্দিন এবার মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে ছিলেন না। তার পরিবর্তে নৌকার টিকেট পাওয়া মো. তৌহিদুজ্জামান জিতে এসেছেন।
যশোর-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ রনজিত কুমার রায় এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছেন। এনামুল হক বাবুল এবার দলের মনোনয়ন পেয়ে জিতেছেন।
যশোর-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য এবার নৌকার টিকেট পেয়ে নির্বাচনে হেরে গেছেন। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইয়াকুব আলী জয় পেয়েছেন।
যশোর-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও হেরেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মো. শাহীন চাকলাদার। স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল ইসলাম এবার এ আসনে জয়ের মুকুট পরেছেন।
মাগুরা-১ আসনে বর্তমান এমপি মো. সাইফুজ্জামান নৌকার টিকেট না পাওয়ায় নির্বাচন করেননি। দলী মনোনয়ন পেয়ে এ আসনে জিতে ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।
বাগেরহাট-৪ আসনে বর্তমান সাংসদ মো. আমিরুল আলম মিলন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। এইচ এম বদিউজ্জামান নৌকার টিকেট পেয়ে এ আসনে জয় পেয়েছেন।
খুলনা-১ আসনের বর্তমান এমপি পঞ্চানন বিশ্বাস এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে ননী গোপাল মণ্ডল দলের মনোনয়ন পেয়ে জয়লাভ করেছেন।
খুলনা-৩ আসনের টানা তিনবার সাংসদ ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানকে এবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়নি। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এবার এস এম কামাল হোসেন এ আসনে জিতেছেন।
খুলনা-৬ আসনের এমপি মো. আক্তারুজ্জামান এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচন করেননি। নৌকার টিকেট পেয়ে এ আসন থেকে জিতেছেন মো. রশিদুজ্জামান।
সাতক্ষীরা-১ আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবারের ভোটে হেরেছেন। নৌকার টিকেট পেয়ে ফিরোজ আহমেদ স্বপন এ আসন থেকে জয় পেয়েছেন।
সাতক্ষীরা-২ আসনটি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দিলেও এ আসনের বর্তমান এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে ছিলেন। তবে তিনি হেরে গেছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মো. আশরাফুজ্জামানের কাছে।
সাতক্ষীরা-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ এস এম জগলুল হায়দার এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, নির্বাচনেও নেই তিনি। তার পরিবর্তে নৌকার এস এম আতাউল হক জয় পেয়েছেন।
বরিশাল বিভাগ
বরগুনা-১ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু দলীয় মনোনয়ন পেয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার টুকুর কাছে হেরে গেছেন।
বরগুনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি শওকত হাচানুর রহমান (রিমন)কে বাদ দিয়ে নৌকার নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সুলতানা নাদিরা। বর্তমান এমপি রিমন নির্বাচনে ছিলেন না, জয় পেয়েছেন নাদিরা।
পটুয়াখালী-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. আফজাল হোসেনকে বসিয়ে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের কাছে। আফজাল নির্বাচনে না থাকায় সহজে জয় পেয়েছেন রুহুল আমিন।
বরিশাল-২ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মো. শাহে আলমকে বসিয়ে সেখানে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে দেওয়া হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে। নির্বাচনে তিনি জিতেও এসেছেন।
বরিশাল-৬ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি নাসরিন জাহান রত্না এবারের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল হাফিজ মল্লিক এর কাছে হেরে গেছেন।
ঝালকাঠি-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি বজলুল হক হারুনেরও দ্বাদশ সংসদে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। কারণ রাজনীতির নতুন মেরুকরণে বিএনপির প্রবীণ নেতা মুহাম্মদ শাজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই এ আসনে নৌকার টিকেট নিশ্চিত করেছেন এবং জয়ী হয়েছেন। বজলুল হক হারুন এবার নির্বাচনেই দাঁড়াননি।
পিরোজপুর-২ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নৌকা প্রতীকে ভোট করেও হেরে গেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন মহারাজ এর কাছে পরাজিত হন তিনি।
পিরোজপুর-৩ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর ভাগ্যে জুটেছে দ্বিমুখী ধাক্কা। এবার লাঙ্গলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন এই প্রবীণ নেতা। জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের লাঙ্গল তুলে দিয়েছিলেন মো. মাশরেকুল আজম (রবি) নামের একজনের হাতে। লাঙ্গলকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য সেখানে নৌকারও কোনো সরাসরি প্রার্থী দেওয়া হয়নি। কিন্তু জাতীয় পার্টির দুই নেতাকে হারিয়ে এই আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম শাহনেওয়াজ।
ময়মনসিংহ বিভাগ
জামালপুর-১ আসনে বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আবুল কালাম আজাদকে বাদ দিয়ে নৌকা দেওয়া হয়েছে নূর মোহাম্মদকে। তিনি জিতেছেন।
জামালপুর-৪ আসনের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান এবার স্বতন্ত্র নির্বাচন করে হেরে গেছেন। তার পরিবর্তে নৌকা দেওয়া হয়েছিল মো. মাহবুবুর রহমানকে; তিনিও হেরেছেন। স্বতন্ত্র নির্বাচন করে এই আসন থেকে সংসদে যাচ্ছেন মো. আবদুর রশীদ।
জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মোঃ মোজাফ্ফর হোসেনকে বসিয়ে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদকে। সাত প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে প্রথম নির্বাচনেই জয়ী হয়ে এসেছেন তিনি।
শেরপুর-১ আসনে এবারও নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন বর্তমান এমপি মো. আতিউর রহমান আতিক। কিন্তু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছানুয়ার হোসেন ছানুর কাছে পরাজয় ঘটেছে তার।
শেরপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এ কে এম ফজলুল হককে এবার আর মনোনয়ন দেওয়া হয়নি, তিনি নির্বাচনেও নেই। তার পরিবর্তে মনোনয়ন পাওয়া এ ডি এম শহিদুল ইসলাম জয়ী হয়েছেন।
ময়মনসিংহ-১ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের এমপি জুয়েল আরেংকে এবারও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক সায়েম এর কাছে হেরে গেছেন।
ময়মনসিংহ-৩ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ এমপি নাজিম উদ্দিন আহমেদ দলীয় মনোনয়ন হারিয়ে এবার নির্বাচনে ছিলেন না। নতুন মনোনয়ন পাওয়া এ আসনে নিলুফার আনজুম পপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সোমনাথ সাহার মধ্যে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হচ্ছে।
ময়মনসিংহ-৪ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি রওশন এরশাদ এবার নির্বাচন থেকে দূরে। তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও অভিমানে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এ আসনে এবার নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান জয়ী হয়েছেন।
ময়মনসিংহ-৫ আসনের বর্তমান এমপি ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে এবার মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির সালাহ উদ্দিন আহমেদ (মুক্তি) এর জন্য আসনটি ছেড়ে দেওয়া হলেও তিনি হেরে গেছেন। জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম।
ময়মনসিংহ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মো. মোসলেম উদ্দিন এবারও মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল মালেক সরকারের কাছে হেরেছেন।
ময়মনসিংহ-৭ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মো. হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী এবার পাস করতে পারেননি। তার পরিবর্তে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ বি এম আনিছুজ্জামান।
ময়মনসিংহ-৮ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম আওয়ামী লীগের ছাড় পেয়েও নির্বাচনে জিততে পারেননি। তাকে হারিয়ে এখান থেকে নতুন এমপি হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসান সুমন।
ময়মনসিংহ-৯ আসনের বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খানকে এবার আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়নি। তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে নৌকার নতুন প্রার্থী আব্দুস সালামের কাছে হেরে গেছেন।
ময়মনসিংহ-১১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ এর কাছে হেরে গেছেন।
নেত্রকোনা-১ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মানু মজুমদার দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে এবার আর নির্বাচন করেননি। নৌকার নতুন প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রুহী এবার জিতেছেন।
নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি অসীম কুমার উকিল এবার হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর কাছে।
নেত্রকোনা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে সরিয়ে নৌকার নতুন প্রার্থী আহমদ হোসেন এবার সংসদে যাচ্ছেন। বেলাল নির্বাচনে ছিলেন না।
ঢাকা বিভাগ
টাঙ্গাইল-৩ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান এবার আর মনোনয়ন পাননি। নৌকার টিকেট দেওয়া হয় মো. কামরুল হাসান খানকে। তবে নির্বাচনে আতাউরের ছেলে আমানুর রহমান খান রানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন।
টাঙ্গাইল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান এমপি মোহাম্মদ হাছান ইমাম খাঁনকে এবার মনোনয়ন দেয়নি। তার পরিবর্তে নৌকার টিকেট পেয়েছিলেন মো. মাজহারুল ইসলাম তালুকদার। কিন্তু সব হিসাবের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি হয়ে সংসদে আসছেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেকমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
টাঙ্গাইল-৮ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় বর্তমান এমপি মো. জোয়াহেরুল ইসলাম এবার আর মনোনয়ন পাননি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায়ও নেই তিনি। এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমকে হারিয়ে এমপি হয়েছেন অনুপম শাহজাহান জয়।
কিশোরগঞ্জ-২ আসনে একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি হয়েছিলেন সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। এবার তাকে সরিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় আরেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দকে। কিন্তু ভোটে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোহরাব উদ্দিন।
মানিকগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে বসিয়ে আসনটি জাতীয় পার্টির মোহা. জহিরুল আলম রুবেলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার জনপ্রিয় এমপি কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এবার হেরে গেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ এর কাছে।
মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিকল্প ধারার একমাত্র এমপি মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী দ্বাদশ সংসদে যেতে পারছেন না। তাকে হারিয়ে এখানে এমপি হয়েছেন আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন আহমেদ।
মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মৃণাল কান্তি দাস জয় পাননি। এখানে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল।
ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আওলাদ হোসেনের কাছে হেরে সংসদ থেকে বাদ পড়ছেন। তবে ফল ঘোষণার পর এ আসনের নৌকার প্রার্থী সানজিদা খানমের আবেদনের পর মঙ্গলবার ফলাফল স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
ঢাকা-৫ আসনের এমপি কাজী মনিরুল ইসলামকে বাদ দিয়ে এবার হারুনর রশীদ মুন্নাকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচনে জিতেছেন স্বতন্ত্র মশিউর রহমান মোল্লা সজল।
ঢাকা-৬ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদ এবার আর নির্বাচনে থাকেননি। সেখানে এমপি হয়েছেন নৌকার টিকিটে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি হাজী মো. সেলিমকে সরিয়ে তার ছেলে মোহাম্মদ সোলাইমান সেলিমকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে জিতেছেন সোলাইমান।
ঢাকা-১০ আসন থেকে কিছু দিনের জন্য আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এবার তাকে বাদ দিয়ে চিত্রনায়ক ফেরদৌসকে এখান থেকে এমপি বানানো হয়েছে।
ঢাকা-১১ আসনের এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহকে বসিয়ে এবার সেখানে মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ওয়াকিল জিতেও এসেছেন।
ঢাকা-১৩ আসনের এমপি মো. সাদেক খানকে বসিয়ে সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানককে এবং তিনি জিতেছেন।
ঢাকা-১৪ আসনের বর্তমান এমপি আগা খান মিন্টুর পরিবর্তে এবার সেখানে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া যুবলীগ নেতা মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল জিতেছেন।
ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মোহাম্মদ হাবিব হাসান এবার আর নির্বাচন করেননি। এখান থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শীরিফা কাদেরকে সমঝোতার ভিত্তিতি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। তবে জিতেছেন আওয়ামী লগি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. খসরু চৌধুরী।
ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে হেরে গেছেন।
গাজীপুর-৩ আসনের মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে বাদ দিয়ে এবার এ আসনে রুমানা আলীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইকবাল স্বতন্ত্র নির্বাচন করে রুমানার কাছে হেরে যান।
গাজীপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মেহের আফরোজ চুমকি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতার উজ্জামানের কাছে হেরে গেছেন।
নরসিংদী-৩ আসনে বর্তমান আওয়ামী লীগ এমপি জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহনকে বাদ দিয়ে ফজলে রাব্বি খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি লেয়াকত হোসেন খোকা এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সারের কাছে হেরেছেন।
ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মঞ্জুর হোসেন বুলবুলকে বাদ দিয়ে নৌকার নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয় আব্দুর রহমানকে। তিনি নির্বাচনে জিতেছেন।
ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকার সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবার আর নির্বাচনে দাঁড়াননি। সেখানে শামীম হককে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তবে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ।
মাদারীপুর-৩ আসনে বর্তমান এমপি মো. আবদুস সোবহান মিয়াকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগমের কাছে হেরে গেছেন।
সিলেট বিভাগ
সুনামগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন নৌকার টিকেট না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন। এ আসনে এবার জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রনজিত চন্দ্র সরকার।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি পীর ফজলুর রহমান এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয় পাননি। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাদিক তার তিনগুণ ভোটে জিতেছেন।
সিলেট-২ আসনের বর্তমান এমপি গণফোরামের মোকাব্বির খান এবার নির্বাচনে হেরেছেন। তার পরিবর্তে নৌকার প্রার্থী শফিকুর রহমান জয় পেয়েছেন।
সিলেট-৩ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এবার দলের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেননি। এবার তার আসনে নৌকার টিকেট পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন হাবিবুর রহমান।
সিলেট-৫ আসনের বর্তমান এমপি হাফিজ আহমেদ মজুমদার এবার আওয়ামী লীগের নোনয়ন না পেয়ে ভোটে অংশ নেননি। তার আসনে মাসুক উদ্দিন আহমেদকে দল মনোনয়ন দিলেও জয় পান স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন।
মৌলভীবাজার-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবার নির্বাচন করেননি। তার আসনে নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী জয় পেয়েছেন।
মৌলভীবাজার-৩ আসনের বর্তমান সাংসদ নেছার আহমদ এবার নৌকার টিকেট না পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জয়লাভ করেছেন।
হবিগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ। এ আসনে দল এবার জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দেয় যেখানে লাঙ্গলের বদলে জয় পায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
হবিগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েও জয় পাননি। এ আসনে নৌকার প্রার্থী ময়েজ উদ্দিন শরীফ নির্বাচনে জিতেছেন।
হবিগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ ও বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহাবুব আলী এবার নৌকার টিকেট পেয়েও হেরেছেন। তার পরিবর্তে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন জয় পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিভাগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েও জিততে পারেননি। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এ কে একরামুজ্জামান এবার জয়ী হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে একাদশ সংসদের মেয়াদের শেষ সময়ে ৫ নভেম্বরে উপ নির্বাচনে জয়ী হন বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মো. শাহজাহান আলম। সমঝোতার এ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনয়ন দেয় রেজাউল ইসলাম ভূইয়াকে। তবে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে জয় হন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মঈন উদ্দিন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের এবাদুল করিম বুলবুল এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তার পরিবর্তে দল ফয়জুর রহমানকে মনোনয়ন দেয়, তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
কুমিল্লা-১ আসনের মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেননি। নৌকার টিকেটে মো. আবদুস সবুর জয় পান এই আসনে।
কুমিল্লা-২ আসনের বর্তমান সাংসদ এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিমা আহমাদ এবার নির্বাচনে হেরেছেন। তার পরিবর্তে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল মজিদ।
কুমিল্লা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন এবার জয়ের দেখা পাননি। তার আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।
কুমিল্লার-৪ আসনের বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এবার হেরে গেছেন। এ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীমো. আবুল কালাম আজাদ।
কুমিল্লা-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাশেম খান এবার নির্বাচনে জিততে পারেননি। তার আসনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র এম এ জাহের।
কুমিল্লা-৮ আসনের বর্তমান সাংসদ নাছিমুল আলম চৌধুরী এবার নির্বাচনে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন জয়লাভ করেছেন।
চাঁদপুর-১ আসনের বর্তমান এমপি মহিউদ্দিন খান আলমগীর এবার নির্বাচন করেননি। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগ সেলিম মাহমুদকে নৌকার টিকেট দেয়, তিনি জয় পেয়েছেন।
চাঁদপুর-২ আসনে নৌকার এমপি নূরুল আমিন রুহুলকে বাদ দিয়ে সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে। সাবেক এ সংসদ সদস্য আবার জয় পেয়ে সংসদে যাচ্ছেন।
ফেনী-১ আসনের বর্তমান সাংসদ জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এবার নির্বাচন করেননি। তার আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমদ চৌধুরী জয় লাভ করেছেন।
নোয়াখালী-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বেগম আয়েশা ফেরদাউস এবার নির্বাচনে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে নৌকার টিকেটে নিয়ে জয় পেয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ আলী।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নানের মনোনয়ন এবার ঋণখেলাপির অভিযোগে বাতিল হয়ে যায়। ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল্লাহ জয় পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১ আসনের বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবার নির্বাচনে অংশ নেননি। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল জয় পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-২ আসনের বর্তমান সাংসদ মহাজোটের অংশীদার তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এবার নির্বাচনের প্রচারণার শেষ পর্যায়ে এসে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এ আসনে এবার নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার জয়ের মালা পরেছেন।
চট্টগ্রাম-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন। পরে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সর দাঁড়ান। এই আসনে নৌকার প্রার্থী এস এম আল মামুন জয় পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ এবার দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচনে অংশ নেননি। এ আসন জাতীয় পার্টির মো. সোলায়মান আলম শেঠকে আওয়ামী লীগ ছেড়ে দেয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম জয়ী হয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১২ আসনের শামসুল হক চৌধুরী নৌকা প্রতীকে জয় পেয়ে একাদশ সংসদে হুইপ হয়েছিলেন । এবার দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে বড় ব্যবধানে হেরে গিয়েছেন তিনি। তার পরিবর্তে দ্বাদশ সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।
চট্টগ্রাম-১৫ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী দলের মনোনয়ন পেলেও জনতার রায় নিজের দিকে টানতে পারেননি। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব জয় পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করে ভোট শেষের আগ মুহূর্তে, ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান জয়ের দেখা পেয়েছেন।
কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ জাফর আলম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এ আসনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম জয় পেয়েছেন।
আরও পড়ুন-
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: ২৯৮ আসনে বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: কোন আসনে কে জিতল
[এ প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন কুমিল্লা প্রতিনিধি আবদুর রহমান।]