এদিন আরও দুই মামলায় ভিন্ন আদালতে তোলা হয় এই বিএনপি নেতা ও তার স্ত্রীকে।
Published : 05 Nov 2023, 09:37 PM
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রোববার তাকে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই)
নূরুল ইসলাম।
শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এসময় কারাগারে আব্বাসের ডিভিশন ও চিকৎসার আবেদন করেন তার আইনজীবী। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন ও সুচিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১ নভেম্বর ঢাকার শাহজাহানপুর থানার নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ঢাকার একটি আদালত। গত ৩১ অক্টোবর রাতে ঢাকার শহীদবাগ থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশের দিন কাকরাইলে সংঘর্ষ শুরু হলে তা অন্য এলাকায়ও ছড়ায়। শাহজাহানপুর এলাকায় ‘নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম’ চালানোর অভিযোগে পরদিন ২৯ অক্টোবর শাহজাহানপুর থানায় এসআই মোস্তাফিজুর রহমান আব্বাসসহ ৪৯ জনের নামোল্লেখ করে এ মামলা করেন।
এদিন বিএনপির এই নেতাকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালতেও সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তাকে হাজির করা হয়।
এ মামলায় শুনানির এক পর্যায়ে বিচারককে মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, এর আগের যখন তাকে ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল তখন তাদের ফাঁসির সেলে রাখা হয়েছিল। এবার গ্রেপ্তারের পর ফ্লোরে রাখা হচ্ছে। এবার তো হেঁটে আসছি। এর পরেরবার হয়তো হুইলচেয়ারে করে আসতে হবে।
এ সময় বিচারক বলেন, “আপনারা আবেদন করেছেন, তা আমি দেখব।”
একপর্যায়ে বিচারক মির্জা আব্বাসের আইনজীবীকে বলেন, উনার কি আর কোনো মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে? এ সময় মির্জা আব্বাস বলেন, না, চাওয়া হয়নি। বিচারক আবারও বলেন, “আজ আদেশ কী হয়
দেখেন। না হলে ৮ নভেম্বর মামলার ধার্য তারিখে এ বিষয়ে শুনব।”
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর এ মামলায় মির্জা আব্বাসের সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেন আদালত।
একই সঙ্গে ২ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন তিনি শাহজাহানপুরের একটি নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় অবৈধ সম্পদের জন্য মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে রোববার যুক্তি-তর্ক শুনানির তারিখ ধার্য করে মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাকে এদিন এ আদালতে হাজির করা হয়।
পরে এই বিএনপি নেতার পক্ষে আবারও সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার তারিখ ধার্য করার আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে ৮ নভেম্বর সময় নির্ধারণ করে দেন।
এ সময় তার আইনজীবীরা ১৯ জনের সাফাই সাক্ষীর তালিকা জমা দিলে বিচারক আটজনকে সাফাই সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেন।
এর আগে এ মামলায় ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মোট ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন ও তথ্য গোপন করার অভিযোগে ২০০৭ সালে ১৬ অগাস্ট মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক।
এদিকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে দায়ের করা দুটি নাশকতা মামলায় জামিন শুনানির জন্য এজলাসে তোলা হয়। এ দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে তারা জামিনে ছিলেন বলে দাবি করেন তাদের আইনজীবী।
এ মামলায় জামিন শুনানির জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন রেখেছেন বিচারক আছাদুজ্জামান।