আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে অন্য কোনো দল বা জোট যদি সত্যিই নিজেদেরক ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে প্রমাণ করতে পারে, তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতায় যদি কোনো অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করে তৃতীয় শক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়—প্রথমে তার ভিকটিম হবেন রাজনীতিবিদরাই।
Published : 25 Jun 2023, 01:11 PM
২০০৬ সালের ৬ জুন। অর্থাৎ ০৬.০৬.০৬। এরকম একটি সুন্দর তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল দৈনিক যায়যায়দিন। এর সম্পাদক ছিলেন বহুল আলোচিত সাংবাদিক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমান। পত্রিকাটির উদ্বোধনী সংখ্যার প্রধান সংবাদ শিরোনাম ছিলো: ‘থার্ড ফোর্স আসছে না’। তখন বিএনপি সরকারের দিন ফুরিয়ে আসছিল। কিন্তু এই সংবাদ ভুল প্রমাণ করে দিয়ে দেশের রাজনীতিতে সত্যি সত্যি একটি তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব হলো—যেটি ওয়ান ইলেভেন বা এক-এগারোর সরকার নামে পরিচিত। প্রয়াত লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ এই সরকারের নাম দিয়েছিলেন ‘তিনোদ্দীনের সরকার’। অর্থাৎ ইয়াজউদ্দীন, ফখরুদ্দীন ও মঈনুদ্দীন। ট্র্যাজেডি হলো, যে থার্ড ফোর্স বা তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব ঘটেছিল। মাত্র কয়েক মাস পর, ২০০৭ সালের জানুয়ারির ১১ তারিখ ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দীন আহমেদের সরকার। অবশ্য নেপথ্যে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদকে এক-এগারোর ওই প্রধান কুশীলব বলে মনে করা হয়।
থার্ড ফোর্স বা তৃতীয় শক্তি শব্দগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহু বছর ধরে শ্রুত। বিশেষ করে দেশের প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএপির বাইরে গিয়ে অন্য কোনো দলের সরকার গঠন প্রশ্নে এই তৃতীয় শক্তির কথা সামনে আসে। কেউ কেউ মনে করেন, রাজনীতি তার নিজস্ব গতি ও স্বকীয়তা হারিয়ে ফেললে অরাজনৈতিক যে শক্তি শূন্যতা পূরণের দাবি নিয়ে এগিয়ে আসে সেটিই তৃতীয় শক্তি।
জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলেও এই দলটিকে মানুষ এখন আর ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে মনে করে না। বিশেষ করে দলের প্রয়াত চেয়ারম্যানের নানাবিধ কর্মকাণ্ড এবং সংসদের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তাদের ভূমিকায় অনেকেই মনে করেন, জাতীয় পার্টি ঠিক ওই অর্থে রাজনীতির তৃতীয় শক্তি নয়।
এর বাইরে দেশে যে দলটি তৃতীয় শক্তি হিসেবে আর্বিভূত হওয়ার চেষ্টা করেছিল, তার নাম জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই দলটির বিতর্কিত ভূমিকা; মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে এই দলটির শীর্ষ নেতাদের বিচার; বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই দলটির ছাত্র সংগঠনের সহিংস কর্মকাণ্ডসহ নানা কারণে ধর্মভিত্তিক এই দলটিও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে বিপুল মানুষের মনে আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তারা প্রায় এক দশক পরে সম্প্রতি রাজধানীতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রকাশ্য হলেও ১৯৭১ ইস্যুতে তারা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে আদৌ জায়গা করতে পারবে কি না—সেটি বিরাট প্রশ্ন।
বাংলাদেশের মানুষ যেহেতু ধর্মীয় ইস্যুতে সংবেদনশীল এবং যেহেতু বলা হয় যে এ দেশের মানুষ ধর্মভীরু, ফলে এখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির একটা সম্ভাবনা বরাবরই ছিল। বলা ভালো, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ভোটারের বিরাট অংশ ধর্মীয় অনুভূতি মাথায় রাখেন। যে অনুভূতিকে পুঁজি করেই সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ যুক্ত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আর সেখান থেকে আরেকটু এগিয়ে সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মই করলেন হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। অর্থাৎ দুজনেরই উদ্দেশ্য ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছে নিজেকে অনেক বেশি ধর্মভীরু হিসেবে প্রমাণ করা।
সেই বিবেচনায় দেশের একাধিক পীরের দরবার থেকে রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দলের নাম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এটি চরমোনাই পীরের দল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এই দলটি ভোট প্রাপ্তির দিক থেকে অনেক জায়গাতেই তৃতীয় এমনকি কোথাও কোথাও, বিশেষ করে যেসব নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না, সেখানে দ্বিতীয় অবস্থানেও থাকছে। ফলে অনেক সময় এ প্রশ্নও সামনে আসতে পারে যে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কি তাহলে রাজনীতির তৃতীয় শক্তি? এ বিষয়ে এখনই উপসংহারে পৌঁছানো কঠিন।
যে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা বা ধর্মভীরুতার কারণে বাংলাদেশের মূলধারার সকল রাজনৈতিক দল, অন্তত আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সব সময়ই ধর্মীয় ইস্যুতে বেশ সতর্ক থাকে বা ধর্মীয় ইস্যুতে এমনভাবে কথা বলে ও পদক্ষেপ নেয় যাতে মনে হয় যে তারা ইসলামের অনেক বড় খাদেম—সেই একই কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কখনোই বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভুত হতে পারেনি বা দেশের মানুষ কোনো বামপন্থি দলকে তৃতীয় শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে না। কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষ এটি বিশ্বাস করেন যে, বামপন্থিরা ধর্মবিরোধী। তারা ক্ষমতায় গেলে ধর্ম নষ্ট হবে। আরও স্পষ্ট করে বললে ইসলাম ধ্বংস হবে। কিন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মন থেকে এই বিশ্বাস, ধারণা বা পারসেপশন দূর করতে বামপন্থি দলগুলোর কোনো কর্মসূচি ছিল বা আছে বলে মনে হয় না। উপরন্তু তারা এ যাবৎ দেশের ক্ষমতায় থাকা তিনটি দলের চেয়ে উত্তম—সেটিও যে কথায় ও কাজে প্রমাণ করতে পেরেছে বা মানুষকে বিশ্বাস করাতে পেরেছে—সেটিও বলার সুযোগ নেই। অতএব বাংলাদেশের রাজনীতিতে বামপন্থি কোনো দল আপাতত তৃতীয় শক্তি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে নেই।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী এবং হাল আমলে নানা কারণে সরকারের অত্যন্ত বিরাগভাজন ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওইসব সম্ভাব্য পার্টিকেও তখন তৃতীয় শক্তি হিসেবে মনে করা হচ্ছিলো। কিন্তু তারা পরে আর হালে পানি পাননি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পরে দেশের রাজনীতিতে কয়েকজন মানুষ বেশ আলোচনায় আসতে থাকেন। তাদের মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না; আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া; সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন করে আলোচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর; গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
এর মধ্যে রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হক নুর মিলে গড়ে তুলেছিলেন গণঅধিকার পরিষদ নামে একটি রাজনৈতিক দল—যেটি এখনও নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়নি। খেয়াল করা দরকার, নুরুল হক নুর যে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন, রেজা কিবরিয়াকে নিয়ে গঠিত দলের নামের সঙ্গেও সেই পরিষদ শব্দটি রেখেছেন।
এ দুজন মিলে যে দলটি গড়ে তুললেন, সেটি নিয়ে রাজনীতিতে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়েছিল এবং কেউ কেউ এই দলটিকে সম্ভাবনাময় বলছিলেন এ কারণে যে, এই দলটির সঙ্গে এমন অনেক তরুণ যুক্ত যারা সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন করে এরই মধ্যে আলোচিত এবং বয়সে তরুণ বলে তারা হয়তো রাজনীতি নিয়ে ভিন্ন কিছু ভাববেন। তাদের সঙ্গে রেজা কিবরিয়ার মতো একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ—যার শরীরে শাহ এ এম এস কিবরিয়ার মতো একজন মানুষের রক্ত বইছে—তারা হয়তো সত্যি সত্যি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে একটা নতুন ধারা তৈরি করবেন। কিন্তু মানুষের এই ভ্রম ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি। কেননা তৃতীয় শক্তি হওয়া তো দূরে থাক, তারা নিজেরাই কোন্দলে জর্জরিত।
গণমাধ্যমের খবর বলছে, গত ১৮ জুন রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে গণঅধিকার পরিষদের যে বৈঠক হয়, সেখানে সদ্য গঠিত ইনসাফ কমিটির মিটিংয়ে রেজা কিবরিয়ার অংশগ্রহণ এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কথিত সদস্য মেন্দি সাফাদির সঙ্গে নুরুল হক নূরের দেখা করার ইস্যু নিয়ে হট্টগোল হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে রেজা কিবরিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার এবং রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় রেজা কিবরিয়া পাল্টা অব্যাহতি দেন নূর ও রাশেদকে।
স্মরণ করা যেতে পারে, মাস দেড়েক আগে গত ৬ মে গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বেরিয়ে যায় গণঅধিকার পরিষদ। সাতটি দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে সরকারবিরোধী এই মঞ্চটি গড়ে তোলা হয়েছিল গত বছরের ৮ অগাস্ট। আর গণঅধিকার পরিষদ গঠিত হয়েছিল এর ১০ মাস আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে। অর্থাৎ দল গঠনের দেড় বছরের মাথায় গণঅধিকার পরিষদের ভেঙে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে আরও একটি তৃতীয় শক্তি উত্থানের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেলো বলে মনে হচ্ছে।
কী কারণে রেজা ও নুরের নেতৃত্বে গঠিত এই দলটি ভেঙে গেলো—তা নিয়ে নানারকম বিচার বিশ্লেষণ চলছে। আরও চলবে। কিন্তু কথা হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো দল যে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বলয়ের বাইরে গিয়ে বড় একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারছে না—সেটি দেশের রাজনীতির জন্য শুভ না অশুভ?
বাংলাদেশের রাজনীতিও টু পার্টি পলিটিক্সনির্ভর। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আবার জোটভিত্তিক নির্বাচনী রাজনীতির কারণে এ দুই দলের বাইরে তৃতীয় কোনো দলের এককভাবে শক্তিশালী হয়ে তৃতীয় শক্তি হওয়ার সম্ভাবনা এখন নেই বললেই চলে।
গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপির আসন সংখ্যা যথেষ্ট কম এবং গত দুটি সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ভূমিকা পালন করলেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মূলত দুটি বলয়ে বিভক্ত। যে কারণে সংসদে কার আসন কত, সেই হিসাবের বাইরে গিয়ে এখনও দেশের রাজনীতি মানেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
এই দুটি দলই অন্যদের নিয়ে জোট গঠন করে। অতএব আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় জোটের আকার বাড়বে কি কমবে; বিএনপির সঙ্গে কোন কোন দল থাকবে এবং সরকার পতনের আন্দোলনে তাদের সঙ্গে রাজপথে সত্যিই কারা থাকবে—সেটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হবে। কিন্তু যে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় তা হলো, কোন ধরনের সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং নির্দলীয় সরকার না হয়ে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হলে বিএনপি ও তার শরিকরা আদৌ নির্বাচনে যাবে কি না; যদি না যায় তাহলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে?
অতীতে বিভিন্ন সময়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ ও অনৈক্যের ফলে যে অরাজনৈতিক শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে বা দখল করেছে, সেরকম কোনো ‘তৃতীয় শক্তি’ আসবে নাকি প্রধান দলগুলোর সমঝোতার মধ্য দিয়ে দেশের জন্য কল্যাণকর কিছু ঘটবে, তা এখনই বলা কঠিন। কারণ সামনের দিনগুলোয় রাজনীতির বাতাস যে এক জায়গায় স্থির থাকবে না, সেটি সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে কিছুটা আন্দাজ করা যাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ইস্যুতে দেশে সংকট তৈরি হলে এবং অসাংবিধানিক শক্তি ক্ষমতা কুক্ষিগত করলে সেটিকে ‘তৃতীয় শক্তি’ বলা হোক আর যাই বলা হোক না কেন, এ ধরনের সরকার যে দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, তা অতীতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে অন্য কোনো দল বা জোট যদি সত্যিই নিজেদেরক ‘তৃতীয় শক্তি’ হিসেবে প্রমাণ করতে পারে, তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতায় যদি কোনো অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করে তৃতীয় শক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়—প্রথমে তার ভিকটিম হবেন রাজনীতিবিদরাই। অতএব কোনো অসাংবিধানিক বা অরাজনৈতিক তৃতীয় শক্তি যাতে মানুষের কাঁধে চেপে বসতে না পারে, সেজন্য প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলকে অবশ্যই কোনো একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। না হলে যে ঘটনা ঘটবে, সেটি তাদের কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।