রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে কারাবরণ করতে হয়। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এবং ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময়।
Published : 16 Oct 2023, 06:08 PM
দেশ স্বাধীন হওয়ার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে গণপরিষদে গৃহীত হয় বাংলাদেশের সংবিধান। খসড়া সংবিধানের ওপর গণপরিষদে দীর্ঘ আলোচনা হয়। পরিষদের সাধারণ সদস্যরা তো বটেই, সংবিধান প্রণয়নের জন্য গঠিত কমিটির সদস্যরাও খসড়া সংবিধানের নানা অনুচ্ছেদের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব দেন। পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তাঁরা এসব বিষয়ে আলোচনা করেন। বিতর্ক করেন। এর মধ্যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে সোচ্চার ছিলেন কমিটির সদস্য মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তাঁর ভাষায়: “আমরা যাতে ন্যায়সঙ্গত, নিরপেক্ষ বিচার পেতে পারি, সেজন্য আমাদের দেশের মানুষ সংগ্রাম করেছে।
যাতে বিচারকরা নির্ভয়ে ন্যায্য বিচার করতে পারেন, সেজন্য তাঁদের স্বাধীনতা দরকার। এ দেশের মানুষ বহুদিন ধরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যে সংগ্রাম করে এসেছে, তারই ফলশ্রুতিরূপে আজ এই সংবিধানে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দাবি স্বীকার করে নিয়েছে।”
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিলেন একজন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিত্ব। তিনি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরির আজীবন সদস্য ও প্রথম সভাপতি। নোয়াখালী সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর বিশেষ অবদান ছিল। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং বিশেষ করে রামগঞ্জের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। লক্ষ্মীপুর জেলার পিছিয়ে পড়া জনপদ রামগঞ্জের যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। যদিও এই কাজের জন্য তিনি খুব বেশি সময় পাননি।
জন্ম ও শিক্ষা
মুহাম্মদ আবদুর রশিদের জন্ম লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার নাগমুদ গ্রামে। বাবা মৌলভী আবদুল মজিদ। মা খালেক জান বিবি। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিলেন সবার বড়। জাতীয় সংসদ সদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত ১৯৭৫-এ তাঁর জন্ম তারিখ ২৫ মার্চ ১৯২৫। যদিও তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার সাইফুর রশীদ বলছেন, বাবার জন্ম পয়লা জানুয়ারি ১৯২৪।
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। প্রাথমিক স্কুল পরীক্ষায় কৃতিত্বের জন্য তিনি বৃত্তি পেয়েছিলেন। ভালো ছাত্র ছিলেন বলে তাঁর মামা তাঁকে সাইকেলে করে নোয়াখালী নিয়ে এসে জিলা স্কুলে ভর্তি করে দেন। তিনি ১৯৪০ সালে এই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ডিস্টিংশানসহ মাধ্যমিক পাস করেন। তাঁর সহপাঠী আবদুল মতিন স্মৃতিকথায় লিখেছেন, “প্রাইমারি স্কুলের পরীক্ষায় কৃতিত্বের জন্য বৃত্তিপ্রাপ্ত এম এ রশীদ ক্লাস সেভেন থেকে আমার সহপাঠী ছিলেন। ক্লাস টেন পর্যন্ত তিনি ছিলেন আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয়। ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে আমরা দুজন একসঙ্গে বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার মাঝামাঝি হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর ছাত্রজীবনের ইতি ঘটে।” (আবদুল মতিন, ‘জেনেভায় বঙ্গবন্ধু’ লেখকের স্মৃতিচারণ পাঁচ অধ্যায় পৃষ্ঠা ৬০)।
তবে মুহাম্মদ আবদুর রশিদের পরিবার বলছে, তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি সম্ভবত বিএসসিতে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে পড়াশোনা শেষ করেননি। তিনি আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানেও বেশিদিন পড়াশোনা করেননি। কারণ লোহালক্কড়ের টুং টাং আওয়াজ তাঁর ভালো লাগতো না। তাঁর ছেলে স্থপতি সাজ্জাদুর রশীদ জানান, আবদুর রশিদ গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেননি। কলকাতায়ও তাঁর পড়াশোনা করতে ভালো লাগেনি। সেখান থেকে এসে তিনি ব্যবসা করতে চলে গিয়েছিলেন আসামে।
রাজনীতি
ছাত্রজীবনেই স্বদেশী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। ১৯৩৯-৪০ সালে তিনি নোয়াখালী জেলা মুসলিম ছাত্র অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪০ সালে ঢাকায় এবং ১৯৪৬ সালে নোয়াখালীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মহাত্মা গান্ধীর নোয়াখালী সফরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তিনি ১৯৪৬-৪৭ সালে নোয়াখালী রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান এবং ১৯৫০–৫৭ সালে নোয়াখালী জেলা বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে (নোয়াখালী সদর উত্তর-পশ্চিম) যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে হেরে যান। ওই নির্বাচনে জয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ সৈয়দ গোলাম সারওয়ার হোসেন।
রাজনৈতিক কারণে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে কারাবরণ করতে হয়। বিশেষ করে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন এবং ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময়।
ছাত্রজীবন থেকেই মাটি ও মানুষের সঙ্গে যুক্ত মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ১৯৫৮, ১৯৬০ ও ১৯৬২ সালের ঝড়ে বিধ্বস্ত চর এলাকায় সাহায্যের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭০ মহা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত নোয়াখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দুর্গত মানুষদের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা করেন।
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ পাকিস্তান আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬২ সালে তদানীন্তন নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ওই বছর তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় সংসদ সদস্যদের বেতনভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি বিলে তিনি বিরোধিতা করেন। এরপর ৬ দফা আন্দোলনের সপক্ষে আওয়ামী লীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমেনা বেগমের নেতৃত্বে সংসদ থেকে বেরিয়ে আসেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-৮ আসন থেকে জাতীয় পরিষদ (নং ১৫২) সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি তাতে অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মুহাম্মদ আবদুর রশিদ নোয়াখালী জেলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি হিসেবে হানাদার বাহিনীকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জোরালো ভূমিকা পালন করেন। তিনি আগরতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ভুটান ও নেপালে জনমত তৈরিতেও ভূমিকা রাখেন।
মুহাম্মদ আবদুর রশিদের ছেলে স্থপতি সাজ্জাদুর রশীদ তখন শিশু। কিছু স্মৃতি তাঁর মনে আছে।
“যুদ্ধ শুরু হলো। আমরা গ্রামের বাড়িতে। আব্বা চলে গেলেন ভারতে। কিন্তু সবাই যেহেতু জানে যে এটা রশিদ সাহেবের বাড়ি, ফলে সেখানে থাকাটা আমাদের জন্য নিরাপদ ছিল না। আমরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গেলাম। কিন্তু কেউই রাখতে চায় না। ভয় পায়। যদি পাকিস্তানি মিলিটারিরা জেনে যায় যে এই বাড়িতে রশিদ পরিবার আছে, তাহলে পুরো বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে।”
“আমরা তখন চার ভাইবোন। বড় বোন খুবই অসুস্থ ছিলেন। সত্তুরের নির্বাচনের পরে তাঁকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হলো। কিন্তু ভালো হচ্ছিলেন না। এই অবস্থায় যুদ্ধ শুরু হলো। আমরা যখন এখানে-ওখানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি, তখন তার অবস্থার আরও অবনতি হলো। আব্বার কাছে খবর পাঠানো হলো যে মেয়ের খুবই খারাপ অবস্থা। আব্বা সম্ভবত মে মাসের দিকে এসে আমাদেরকে আগরতলায় নিয়ে গেলেন।”
সাজ্জাদুর রশীদ বলছেন, “আমাদের পুরো পরিবার পাকিস্তানি আর্মির হাতে প্রায় ধরা পড়ে গিয়েছিলো।”
কীভাবে?
“৮-১০টা রিকশায় করে আমরা ভেঙে ভেঙে নোয়াখালী থেকে যাচ্ছি। লোকজন আমাদের সহযোগিতা করছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাঙ্ক রোড ক্রস করার সময় আম্মা দেখলেন যে, আমাকে নিয়ে যে রিকশাটা ছিল, সেটি দেখা যাচ্ছে না। আম্মা রিকশা দাঁড় করালেন এবং বললেন যে, আমার ছেলে ছাড়া আমি যাব না। বেশ কিছুক্ষণ পরে রিকশাটি এলো। আমাদের রিকশার চেইন পড়ে গিয়েছিল। ফলে দেরি হয়। তো আমরা যখন ছোট রাস্তা ছেড়ে মহাসড়কে উঠতে যাব তার আগ মুহূর্তে পাকিস্তানি আর্মির একটি টহল গাড়ি দ্রুত বেগে চলে গেলো।”
সাজ্জাদুর রশীদ বলেন, “আম্মা এখনও বলেন, ওইদিন যদি পেছনের রিকশাটার চেইন পড়ে না যেতো এবং ওই রিকশাটার জন্য যদি আমরা অপেক্ষা না করতাম, তাহলে হয়তো টহলরত আর্মির গাড়ির সামনে পড়ে যেতাম। একজন সংসদ সদস্যকে তাঁর পুরো পরিবারসহ ধরতে পারলে তারা নিশ্চয়ই আমাদের কাউকেই বাঁচিয়ে রাখতো না।”
তারা চিত্তখোলায় এক রাত থেকে বিলোনিয়া হয়ে আগরতলায় পৌঁছান। তাঁরা গিয়ে ওঠেন এমএলএ হোস্টেলে। সেখানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সঙ্গে দেখা। অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী সিরাজুল হক, যিনিও পরবর্তীকালে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য মনোনীত হন।
বোন নায়নার মৃত্যু প্রসঙ্গে একটি হৃদয়স্পর্শী স্মৃতিচারণমূলক গল্প লিখেছেন সাজ্জাদুর রশীদ, যেটি ছাপা হয়েছে বুয়েট অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ‘তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি’ নামে একটি স্মরণিকায়। তিনি লিখেছেন, শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে বাবা সুচিকিৎসার জন্য বোনকে কলকাতায় পাঠানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানান। জুন মাসে তাঁরা কলকাতার উদ্দেশে আগরতলা ছাড়েন। বোনকে ভর্তি করা হয় চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালে। তাঁরা সপরিবারে ওঠেন প্রাচী সিনেমা হলের পেছনে ডিক্সন লেনের তিন রুমের একটি ফ্ল্যাটে। যার একটি রুমের বাসিন্দা হয় প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরীর পরিবার। আরেকটি রুমে ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী ও গাফফার চৌধুরীর শ্যালক। পাড়ায় এই বাড়িটি ‘জয়বাংলার বাড়ি’ নামে পরিচিতি লাভ করে। যুদ্ধ চলাকালীন তাঁর বাবা মুহাম্মদ আবদুর রশিদ কখনো দিল্লি কখনো সীমান্তবর্তী যুদ্ধক্যাম্পে। আর অসুস্থ বোনকে নিয়ে ব্যস্ত তাঁর মা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পরে জানুয়ারির শেষ দিকে তাঁরা দেশে ফিরে আসেন। তাঁর অসুস্থ বোনকে ঢাকায় আনতে বঙ্গবন্ধু একটি হেলিকপ্টার পাঠান। দেশে এনে তাঁকে ভর্তি করা হয় পিজি (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। স্বাধীন দেশে ১৯৭২ সালের ৬ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়।
গণপরিষদে মুহাম্মদ আবদুর রশিদ
১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে মনসুর আলীর প্রস্তাবে খসড়া সংবিধান প্রণয়নের জন্য ৩৪ সদস্যবিশিষ্ট যে কমিটি গঠন করা হয় হয়, মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিলেন ওই কমিটির অন্যতম সদস্য।
গণপরিষদের বৈঠকে মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বেশ সক্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ে তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন।
১৯৭২ সালের ১৯ অক্টোবরের বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি স্পিকার মুহম্মদুল্লাহ্। রেওয়াজ হচ্ছে, স্পিকারের চেয়ারে যিনিই বসুন না কেন, তাঁকে ‘মাননীয় স্পিকার’ বলে সম্বোধন করা হয়। কিন্তু এই ইস্যুতে আবদুর রশিদের কিছুটা সংশয় ছিল বলে তিনি পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে স্পিকারের কাছে জানতে চান, তাঁকে ‘স্পিকার’ নাকি ‘ডেপুটি স্পিকার’ সম্বোধন করা হবে? তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অনেক দিন আগে পুরোনো অ্যাসেম্বলিতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কিছুটা বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। ফলে তিনি এ বিষয়ে স্পিকারের রুলিং প্রত্যাশা করেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার বলেন, এরই মধ্যে এ বিষয়ে রুলিং দেয়া হয়েছে যে ডেপুটি স্পিকার যখন পরিষদে সভাপতিত্ব করবেন তখন তাঁকে ‘মাননীয় ডেপুটি স্পিকার’ বলে সম্বোধন করতে হবে।
২৩ অক্টোবর বৈঠক চলাকালীন কোনো একজন সদস্য লাঠি নিয়ে প্রবেশ করলে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম চৌধুরী স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানতে চান, ‘কোনো মাননীয় সদস্য লাঠি নিয়ে পরিষদে প্রবেশ করতে পারেন কি না?’ জবাবে স্পিকার বলেন, ‘লাঠি নিয়ে পরিষদে প্রবেশ করার কোনো রীতি নেই।’ কিন্তু এ সময় মুহাম্মদ আবদুর রশীদ জানতে চান, ‘অসুস্থতাবশত কেউ যদি পরিষদে লাঠি নিয়ে আসেন, তখন কী হবে?’ এর উত্তরে স্পিকার বলেন, ‘দৈহিক বা স্বাস্থ্যগত কারণে লাঠি ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু সুস্থ শরীরে ব্যবহার করা যাবে না।’
২৫ অক্টোবর ডেপুটি স্পিকারের কাছে দুটি ব্যাপারে রুলিং চান মুহাম্মদ আবদুর রশীদ। তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘শামসুদ্দীন মোল্লা (সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য) আপনার অনুমতি না নিয়ে মানবেন্দ্র লারমার সমর্থনে বক্তব্য শুরু করেছেন এবং স্পিকারের আদেশ অমান্য করে তাঁর বক্তব্য বলেই চলেছেন। দ্বিতীয় বিষয় হলো, কোনো বক্তা তাঁর বক্তৃতা শেষ করার পর আবার যখন অন্য বক্তার বলার সুযোগ আসবে, কেবল তখনই তিনি প্রতিবাদ করে বলতে পারবেন। কিন্তু অপর সদস্যের বক্তৃতার মাঝখানে কোনো পয়েন্ট অব অর্ডার উঠিয়ে তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ করা যায় না। কারণ এটা পার্লামেন্টারি রীতির বিরোধী। আর বক্তৃতা করতে দেওয়ার অধিকার কেবল স্পিকারের হাতে।’ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ এই দুটি বিষয়ে রুলিং চাইলে ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। আমি আপনাকে অধিকারের প্রশ্নে, বৈধতার প্রশ্নে কোনো বক্তৃতা করতে দিতে চাই না।দয়া করে আপনি বসে পড়ুন।’
২৫ অক্টোবরের মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রস্তাব করেন যে, মাননীয় সদস্যবৃন্দের মধ্যে যাঁরা সামরিক শিক্ষা পেয়েছেন, তাঁদেরকে যেন ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত করা হয়। কিন্তু এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মুহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, ‘তিনি সম্ভবত জানেন না যে মুজিবনগরেই বাংলাদেশ সরকার তাঁদের লেফটেন্যান্ট জেনারেলের পদে ভূষিত করেছেন। সুতরাং, তিনি যে প্রস্তাব করেছেন, সেটা যুক্তিসঙ্গত নয়।’
গণপরিষদে খসড়া সংবিধান গৃহীত হওয়া সময় দফাওয়ারি আলোচনায় ৯৭ অনুচ্ছেদে একটি সংশোধনী আনেন মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, তাকে বহু দেশে, সারা বিশ্বের সবাই প্রয়োজনীয় বলেছেন। এটা সবাই মানবেন, আমরা যাতে ন্যায়সঙ্গত, নিরপেক্ষ বিচার পেতে পারি, তজ্জন্য আমাদের দেশের মানুষ সংগ্রাম করেছে। যাতে বিচারকরা নির্ভয়ে ন্যায্য বিচার করতে পারে, তজ্জন্য তাদের স্বাধীনতা দরকার। এ দেশের মানুষ বহুদিন ধরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যে সংগ্রাম করে এসেছে, তারই ফলশ্রুতিরূপে আজ এই সংবিধানে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে, শাসন বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দাবি স্বীকার করে নিয়েছে। তাই ৯৭ অনুচ্ছেদের এই সংশোধনী দেওয়া হয়েছে।’
এদিনের বৈঠক মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, ‘সারাদিন রোজা রেখে এত রাত পর্যন্ত কাজ করছি। কাল আবার রোজা রাখতে হবে। আমরা জানতে পারি নাই, কতক্ষণ পর্যন্ত চলবে?’ এ সময় স্পিকার বলেন, মাত্র চতুর্থ তফসিল বাকি আছে।
বাহাত্তর-পরবর্তী রাজনৈতিক জীবন
১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন মুহাম্মদ আবদুর রশীদ।
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করলে ১৯৭৫ সালে মুহাম্মদ আবদুর রশিদকে লক্ষীপুর জেলার গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। তিনি বেশ কয়েকবার নোয়াখালীর ডিসট্রিক্ট কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি রেডক্রসের আজীবন সদস্য ছিলেন এবং ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ রেডক্রসের প্রতিনিধি হিসেবে বেলগ্রেড সম্মেলনে যোগদান করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরে ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেননি। তবে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান। এই নির্বাচনে জয়ী হন জাতীয় পার্টির আ ন ম শামসুল ইসলাম। সাজ্জাদুর রশীদ বলছেন, “আব্বা ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাননি। স্থানীয় মানুষের চাপে তিনি ভোটে দাঁড়াতে বাধ্য হন। কিন্তু কেন্দ্র দখলের নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি।”
পঁচাত্তরের অগাস্ট ট্র্যাজেডির পরে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন ইস্যুতে জোহরা তাজউদ্দীন, মিজান চৌধুরী, আব্দুল মালেক উকিলসহ জাতীয় নেতারা বেশ কয়েকবার মুহাম্মদ আবদুর রশিদের বাসায় বৈঠক করেন। এছাড়া ছাত্রলীগ পুনর্গঠনেও সংগঠনটির সিনিয়র নেতারা এই বাসায় বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করেন। বিশেষ করে নুরুল ফজল বুলবুল ও বাহালুল মজনুন চুন্নুর কথা মনে করে বড় ছেলে নাইমুর রশীদ বলছেন, “ওই সময়ে তাঁরা আমাদের বাসায় রাত্রিযাপনও করেছেন। জোহরা তাজউদ্দীনও আমাদের বাসায় উঠেছিলেন।”
অগাস্ট ট্র্যাজেডির প্রতিক্রিয়া
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। স্বাধীনতার পূর্বে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় নেতারা নোয়াখালী গেলে তাঁর বাসায় থাকতেন। বাড়িটি বাংলো ধরনের ছিল বলে বঙ্গবন্ধু এটি খুব পছন্দ করতেন। মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বাড়িটি ভেঙে দালান করতে চাইলে বঙ্গবন্ধু নিষেধ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি আর্মিরা বাড়িটি পুড়িয়ে দেয়। যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু প্রথম দেখায় মুহাম্মদ আবদুর রশিদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বাড়িটা আছে কি না।
নাইমুর রশীদ জানান, ১৯৭৫ সালের অগাস্ট মাসে লক্ষীপুর জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন তাঁর মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। ১৫ অগাস্ট তাঁর নিজ জেলায় দায়িত্ব গ্রহণের কথা ছিল। গভর্নর মনোনীত হওয়ায় তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবর্ধনায় ব্যস্ত ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এমপি হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন। ১৫ অগাস্টের হত্যাযজ্ঞের পরে তিনি সেখানে আটকা পড়েন। ওই সময়ে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ ছিল। পুরো এমপি হোস্টেল আর্মিদের দখলে ছিল। তাই তাৎক্ষণিকভাবে ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়া বা প্রতিবাদ জানাতে পারেননি। কেননা এমন ঘটনার জন্য তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন না। কারফিউ উঠে যাওয়ার পরে অন্যান্য এমপিদের সঙ্গে মুহাম্মদ আবদুর রশিদও এমপি হোস্টেল ত্যাগ করেন এবং নোয়াখালীতে ফিরে যান।
শিক্ষা বিস্তার
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ছিলেন একজন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিত্ব। ১৮৯৬ সালে নোয়াখালীর পুরোনো শহর সোনাপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরি। হাজারো দুর্লভ বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে শুরু হয় নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরির পথচলা। তবে ‘সোনাপুর’ মেঘনায় ভেঙে গেলে ১৯৪৫ সালে মাইজদি শহরের প্রধান সড়কের পাশে গণপূর্ত ভবনের জায়গায় টিনশেড ঘরে নতুন করে যাত্রা শুরু করে নোয়াখালী লাইব্রেরি ও টাউন হল—যার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তিনি নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরির প্রথম সভাপতি।
নোয়াখালী সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠায়ও তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং বিশেষ করে রামগঞ্জের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। লক্ষ্মীপুর জেলার পিছিয়ে পড়া জনপদ রামগঞ্জের যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। যদিও এই কাজের জন্য তিনি খুব বেশি সময় পাননি।
পরিবার
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ নোয়াখালীর সুধারাম এলাকার কালিতারা গ্রামের আমিনুর রসুল মোক্তারের মেয়ে নুরুন্নেসা বেগমকে বিয়ে করেন ১৯৫৫ সালের ২৯ মে। এই দম্পতির চার সন্তান। বড় মেয়ে নাহিনা ইয়াসমিন নায়না ১৩ বছর বয়সে ১৯৭২ সালের ৬ মার্চ কিডনি ফেইল করে মারা যান। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। এখন তাঁদের তিন পুত্র সন্তান বেঁচে আছেন। বড় ছেলে নাইমুর রশীদ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, মেজ ছেলে সাজ্জাদুর রশীদ স্থপতি এবং ছোট ছেলে সাইফুর রশীদ ব্যারিস্টার। স্ত্রী এখনও (সেপ্টেম্বর ২০২৩) জীবিত।
সন্তানের স্মৃতি ও মূল্যায়ন
সাজ্জাদুর রশীদ পেশায় স্থপতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করেন। তিনি মনে করেন, বাঙালি খুবই বিস্মৃতিপ্রবণ। যে কারণে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অনেক সদস্যের নামও এখন মানুষ জানে না। রাষ্ট্রও তাঁদের সেভাবে মূল্যায়ন করেনি।
নিজের বাবাকে প্রচারবিমুখ লোক উল্লেখ করেন সাজ্জাদুর রশীদ বলেন, “আব্বা বঙ্গবন্ধুর ছায়ায় রাজনীতি করেছেন। একটা আদর্শ ছিল। লক্ষ্য ছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্টের পরে সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেলো। বলা যায়, আব্বা খুবই ভেঙে পড়েন। তাছাড়া আমরা তাঁর সন্তানরাও তখন ছোট। আমরা অনেক কিছুই বুঝতাম না। তবে এটুকু বুঝতাম যে আব্বা রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে অংশ নেননি মুহাম্মদ আবদুর রশিদ। তবে এলাকার মানুষের চাপে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও হেরে যান। ১৯৯০ সালের দিকে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মারা যান ২০০০ সালে। অর্থাৎ মৃত্যুর আগে প্রায় ১০ বছর তিনি একরকম নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
স্থপতি সাজ্জাদুর রশীদ বলেন, “আমরা খেয়াল করেছি, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে রাজনীতির ব্যাপারে আব্বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তবে সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। রামগঞ্জে এলাকার মানুষের সঙ্গে তিনি সময় কাটাতেন। রামগঞ্জ ছিল খুবই অবহেলিত। পশ্চাৎপদ। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আব্বা ওই এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টসহ অবকাঠামো উন্নয়নে অনেক কাজ করেন। যদিও এজন্য খুব বেশি সময় তিনি পাননি। কারণ তিনি ক্ষমতায় ছিলেন না। তবে রাজনৈতিক ক্ষমতা না থাকলেও তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে প্রচুর সামাজিক কাজ করতেন। বিশেষ করে শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তারে তাঁর কাজের কথা সর্বজনবিদিত।”
একটি কলম দেখিয়ে সাজ্জাদুর রশীদ বললেন, “এই কলমটি আমার আম্মা পরম যত্নে রেখেছেন। সংবিধান প্রণয়নের পরে বঙ্গবন্ধু সম্ভবত কমিটির সকল সদস্যকে এই ধরনের কলম উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন।”
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন না। সন্তানদেরকে রাজনীতিতে উৎসাহিত করতেন না। তিন সন্তানের কেউই রাজনীতিতে যুক্ত হননি।
সাজ্জাদুর রশীদের ভাষায়: “আব্বার সাথে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ কম হতো। আমরা থাকতাম নোয়াখালীর মাইজদিতে আমাদের বাসায়। আর আব্বা বেশির ভাগ সময় থাকতেন তাঁর নির্বাচনী এলাকা অর্থাৎ গ্রামের বাড়ি নাগমুদে। আর সংসদ অধিবেশন থাকলে ঢাকায়। ফলে আমাদের পড়াশোনাসহ যাবতীয় দেখভাল করতেন আম্মা। আব্বা যখন আসতেন তখন হয়তো আমরা পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আসলে রাজনীতিবিদদের ঘর থাকে না। বাইরের দুনিয়াটাই তাঁদের ঘর।”
মৃত্যু ও দাফন
মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বেশ কয়েক বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। হৃদযন্ত্রের সমস্যাও ছিল। দিল্লির একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন ডায়ালাইসিস করতে। সেখানে শক হলে ২০০০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁকে দাফন করা হয় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে।