দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মানবিক চেতনার উন্নয়নের সমন্বয় ঘটিয়ে বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এসব না করলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিহত করা সহজ হবে না।
Published : 18 Dec 2023, 07:37 PM
বিজয়ের ৫২ বছর উদযাপন হলো মাত্র দুদিন আগে। সরকারি-বেসরকারি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস পালন করা এখন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যক্তিগতভাবেও অনেকেই ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে নবীন-প্রবীণেরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এখনো অন্তরায় হয়ে আছে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের লক্ষ্য ছিল যেটা, সেই রাজনীতিকে এরা ধ্বংস করতে চায়। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিবিরোধী এ অপশক্তিকে প্রতিহত করব, পরাজিত করব।
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি যে অঙ্গীকার করেছেন, তা বাস্তবায়নে শতভাগ আন্তরিক থাকবেন, এই আশা নিয়েই দু-চার কথা বলা প্রয়োজন মনে করছি। একাত্তরে এক গৌরবোজ্জ্বল যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অপশক্তিকে প্রতিহত করেছিলাম, পরাজিত করেছিলাম। কিন্তু দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অন্তরায় অপশক্তি স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে আবার ফিরে এলো কীভাবে? কোন শক্তির দুর্বলতা ও কোন শক্তির পৃষ্ঠপোষকতা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে সহায়তা করল, তা কী আমরা ভেবে দেখেছি?
এটা তো অস্বীকার করা যাবে না যে, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলমন্ত্র। আশা ছিল, রক্তমূল্যে কেনা বাংলাদেশে বৈষম্য থাকবে না, প্রতিটি মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা থাকবে, শিক্ষা-চিকিৎসার অধিকার বঞ্চিত থাকবে না কেউ। সে জন্যই যুদ্ধ জয়ের পর নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের ৪টি মূলনীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের শুরুই হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তি ছিল ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদ। আবার পাকিস্তানে গণতন্ত্রের নাম-নিশানা ছিল না। শাসন ব্যবস্থা ছিল পুরোপুরি আমলাতান্ত্রিক এবং সামরিক কর্তৃত্বের অধীন।
পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাসে কোনো সাধারণ নির্বাচন হয়নি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী নির্বাচিত দল ও নেতার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়েছিল। নানা তালবাহানা ও আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণের পর ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর সামরিক অভিযান চালিয়ে জেনোসাইডের সূচনা করা হয়েছিল। বাধ্য হয়েই জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে অস্ত্র হাতে ৯ মাস যুদ্ধ করেছিল বীর বাঙালি। ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে এসেছে প্রত্যাশিত বিজয়।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিদ্ধস্ত শত্রুমুক্ত সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেন। নানা প্রতিকূলতা, বাধা, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কঠিন কাজটি বঙ্গবন্ধু সফলভাবেই করছিলেন। কিন্তু সবার কাছ থেকে তিনি সমান সহযোগিতা পাননি। এমনকি আওয়ামী লীগের ভেতরেও বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শের পরিপন্থী লোকজনের সক্রিয় উপস্থিতি ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে যেমন বিপুল সমর্থন ছিল, তেমনি সংখ্যায় কম হলেও বিরোধিতাকারীও ছিল। শত্রু-মিত্র যেমন দেশের ভেতরে ছিল, তেমনি বাইরেও ছিল। ভেতরের ও বাইরের শত্রুদের সম্মিলিত অপচেষ্টায় ভয়াবহ আঘাত নেমে আসে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে দেয়। অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার জন্য ধর্মীয় স্লোগানকে মূল উপজীব্য হিসেবে ব্যবহার করে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে উল্লসিত হয়, ধর্মীয় স্লোগানকে স্বাগত জানায় এবং তাদের আত্মপ্রকাশের পথ খুঁজে পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারাকে সম্পূর্ণ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য জেলখানায় হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চার বীর নেতাকে। পরপর দুটি বর্বর হত্যাকাণ্ড রাজনীতিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদী তথা মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে হত-বিহ্বল করে দেয়। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯০ সালে এরশাদের পতন পর্যন্ত সময়সীমাটি দেশের ইতিহাসে সামরিক শাসনের কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এই সময়সীমার প্রায় পুরো অংশে দুজন সামরিক শাসক (জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ) শাসন করলেও তাঁদের নীতি, আদর্শ, উদ্দেশ্যের মধ্যে কোনো গুণগত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। এই দেড় যুগ সময়সীমার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রেরণা ও মূল্যবোধের ওপর একের পর এক আঘাত আসতে থাকে। অন্যদিকে একাত্তরের পরাজিত রাজাকার, আল বদর ও মৌলবাদীদের প্রতিষ্ঠাকল্পে একটির পর একটি পদক্ষেপ গৃহীত হতে থাকে।
আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতিতে পুঁজিবাদ ও প্রাক পুঁজিবাদী সম্পর্ক যুগপৎ বিদ্যমান। উৎপাদন কাঠামোতে এই দ্বৈত সম্পর্কের কারণে সংস্কৃতি সমতালে বিকশিত হয়নি। সমাজতাত্ত্বিক দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায়, এখানে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত না হওয়ার এটা অন্যতম প্রধান কারণ। একইসঙ্গে আধুনিক ধ্যানধারণা, মূল্যবোধ, ভাবাদর্শ, অনুসন্ধিৎসা ও বিজ্ঞানমনস্কতা হয়ে উঠতে পারেনি জীবনের নিত্যসঙ্গী। এখানে একজন অধ্যাপক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, পদার্থবিজ্ঞানী, রসায়নবিদ কিংবা আইনজীবী একই সঙ্গে আধুনিক পেশা ও গবেষণায় নিয়োজিত এবং একই সঙ্গে ধর্মান্ধ। মন ও মানসিকতায় মধ্যযুগীয়। আধুনিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত ব্যক্তির সামন্তযুগীয় ও প্রাক-সামন্তযুগীয় ভাবনা ও দর্শনের সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে সহাবস্থান আশ্চর্যের বৈকি। ফলে প্রযুক্তির বিকাশ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আধুনিকতা শিক্ষায় ও বিত্তে অগ্রসর মধ্যবিত্ত শ্রেণির একটি অংশকে প্রভাবিত করতে পারছে না।
গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক জীবনধারার পুরো সময়কালটিতে পরনির্ভরশীলতা, শিল্পায়নের অভাব, শিক্ষাক্ষেত্রে সন্ত্রাস, তীব্র বেকারত্ব, সামাজিক নৈরাজ্যবাদ, সৎ ও দক্ষ মানুষের প্রতি অবহেলা, কালো টাকার একচেটিয়া প্রাধান্য, সমাজের নিম্নতম পর্যায় থেকে শিখর পর্যায় পর্যন্ত অসৎ ও দুর্নীতিবাজদের সমাবেশ— ব্যাপক মানুষের মাঝে বিশেষত শিক্ষিত মানসে সৃষ্টি করেছে হতাশা, অনীহা ও অনাগ্রহ। এই সামাজিক সঙ্কটের সুযোগে দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে সাম্প্রদায়িক চিন্তা। অধিকন্তু মধ্যবিত্তের একাংশের পদের মোহ, চাকরি লাভের প্রত্যাশা, প্রচার প্রবণতা, অর্থের আশায় বিদেশে পাড়ি জমানো ইত্যাদি প্রপঞ্চসমূহকে অত্যন্ত কৌশলে কাজে লাগাচ্ছে মৌলবাদী শক্তি। বলা যায় অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও এরা ধর্মান্ধ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির সহযোগিতে পরিণত হচ্ছে।
এই সামগ্রিক প্রেক্ষাপটেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমরা যেটা বুঝি; সেটাকে নিয়ে কেউ কেউ এখন ঠাট্টাতামাশা করতেও কুণ্ঠা বোধ করে না। টানা তিন মেয়াদের শাসনে আওয়ামী লীগ দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করলেও দুর্নীতি, অনিয়মসহ ধনবৈষম্য বেড়ে যাওয়ায় মানুষের মনে কিছু ক্ষোভ-অসন্তোষও তৈরি হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা বিতর্কিত করার দায় থেকেও আওয়ামী লীগ মুক্ত নয়। সব মিলিয়ে দেশে আওয়ামী লীগবিরোধী একটি জনগোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে কেউ কেউ বাণিজ্যও করছে না, তা-ও নয়। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বললে ওই বিরোধী জনগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের চেতনারও বিরোধিতা করে। কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়।
সরকারের ভুল নীতি-কৌশলের কারণে যারা সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তাদের কেউ কেউ এখন নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন, নিশ্চুপ হয়ে আছেন। এটা ভালো লক্ষণ নয়। দেশের টেকসই উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য দেশ নিয়ে সবাইকে সব সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে ভাবতে হবে। যে বা যারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ঠাট্টাতামাশা করছেন বা মুক্তিযুদ্ধকে একটা অতীতের বিষয় বলছেন, তাদের মনে রাখতে হবে, এই দেশটা স্বাধীন না হলে আমরা পাকিস্তানের অধীনে থাকতাম। আর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তান এখন কোন অবস্থানে আছে তা ভেবে দেখতে বলব সবাইকে।
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি এবং একটা পতাকা ও মানচিত্র পেয়েছি। এই মানচিত্র ও পতাকাকে সম্মান করতে হবে। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতি কারও অনাস্থা, এমনকি বিদ্বেষও থাকতে পারে। কিন্তু তার জন্য মুক্তিযুদ্ধ কিংবা স্বাধীনতা বিদ্বেষী হওয়া চলবে না। মুক্তিযুদ্ধ আর আওয়ামী লীগকে এক করে দেখা ঠিক হবে না। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হলেও সব মুক্তিযোদ্ধা তো আওয়ামী লীগের সদস্য নন। গ্রামের একজন কৃষক হয়তো আওয়ামী লীগের না হয়েও নিজেদের মতো করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন অথবা কোনো না কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকেছেন। এটা তো শতভাগ সত্য বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমাদের অবিসংবাদিত নেতা। এটাকে অস্বীকার করা মানে ইতিহাসকে অস্বীকার করা। ইতিহাসকে অস্বীকার করা মানে নিজেদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরে গেলে সেটাও মুখ বুজে মেনে নেওয়া ঠিক হবে না।
বিজয়ের ৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, যোগাযোগ, তথ্য প্রযুক্তিখাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটেছে। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ দেশের বাইরেও প্রশংসিত হচ্ছে। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মানবিক চেতনার উন্নয়নের সমন্বয় ঘটিয়ে বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। এসব না করলে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিহত করা সহজ হবে না।
বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া যেমন কেউ রুখতে পারবে না; তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এগিয়ে যাওয়াকেও স্থায়ীভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তবে এজন্য প্রয়োজন বিভেদ-বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সঠিক ইতিহাস চর্চার বিকাশ ঘটানো। তাছাড়া ভালোর প্রতি সমর্থন, খারাপের প্রতি ঘৃণার মনোভাবও জাগাতে হবে। সে জন্য ভালো ও খারাপের সংজ্ঞাও স্পষ্ট হতে হবে। যারা রাজনৈতিক সংকীর্ণতাবশত বিকৃত ইতিহাস চর্চা করে চলেছেন, ইতিহাস তাদের অপরাধ মার্জনা করবে না।