Published : 25 Jun 2020, 02:33 PM
বাংলাদেশে সর্বশেষ কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা কত? বাংলাদেশের কোন জেলায় কতজন কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন? ঢাকা শহরে এখন পর্যন্ত কোন এলাকায় কতজন কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত?
এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর পেতে আপনি কোথায় যাবেন? কার কাছে যাবেন? প্রথম প্রশ্নের উত্তর পেতে কারো কাছে যেতে হবে না। প্রতিদিন দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রশ্নের জবাব আপনি পাবেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে।
সমস্যা ওই দুই প্রশ্নের জবাব নিয়েই। আইইডিসিআর প্রতিদিন জেলাওয়ারি বা ঢাকার এলাকাভিত্তিক শনাক্তের যে সংখ্যা প্রকাশ করছে তা অসঙ্গতিপূর্ণ। কেন? কারণ আইইডিসিআর প্রকাশিত জেলা/এলাকাভিত্তিক শনাক্তের সংখ্যা মোট সংখ্যার তুলনায় ব্যাপকভাবে কম।
ব্যক্তিগতভাবে আমি 'ডেটাফুল' নামে একটি ডেটাভিত্তিক অনলাইন কনটেন্ট প্রকাশনায় যুক্ত। আমরা মার্চের শেষ দিক থেকে কোভিড-১৯ ডেটাভিত্তিক কনটেন্ট প্রকাশ শুরু করি। ডেটাফুলের ওয়েবসাইটে মে মাসের শুরু থেকে ডেটাফুলে আমরা জেলা ও ঢাকার এলাকাভিত্তিক শনাক্তের ইন্টারঅ্যাকটিভ মানচিত্র প্রকাশ করছিলাম।
৯ মে'র পর থেকে এই মানচিত্র আমরা আর হালনাগাদ করছি না। কারণ আইইডিসিআর দৈনিক শনাক্তের যে বিস্তারিত জেলা বা ঢাকার এলাকাভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করে তা অসঙ্গতিপূর্ণ।
এই অসঙ্গতিপূর্ণ শনাক্ত ডেটা ব্যবহার করে বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়মিত তথ্যগ্রাফ প্রকাশ হচ্ছে। সর্বশেষ বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ মানচিত্রও প্রকাশ হয়েছে এই অসঙ্গতিপূর্ণ ডেটাকে ভিত্তি করে। বিবিসির ২৩ জুন প্রকাশিত মানচিত্রে শনাক্তের যে সংখ্যা দেয়া আছে আইইডিসিআর'র ডেটার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ (ডেটার উৎস লেখা না থাকায় বলতে পারছি না যে বিবিসির ডেটা আইইডিসিআর থেকে নেয়া)।
২২ জুনের ওই জেলাওয়ারি সংখ্যা যোগ করলে মোট শনাক্ত সংখ্যা পাওয়া যায় ৭১,৮৪৮। অথচ ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী ২২ জুন পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯ পজিটিভের সংখ্যা ১,১৫,৭৮৬। প্রথম দিকে এই ব্যবধান এক বা দেড় হাজারে সীমিত ছিল। তবে শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আইইডিসিআর'র তালিকার ডেটা স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ের তুলনায় ৩০/৪০ হাজার পিছিয়ে গেছে!
এই অসঙ্গতি নিয়ে আইইডিসিআরের দু'জন কর্মকর্তাকে ইমেইল করা হয়েছিল গত ৩ মে। তার জবাব এখনো এসে পৌঁছেনি। আমরাও ডেটাফুলে আর জেলা/এলাকাওয়ারি শনাক্তের সংখ্যা হালনাগাদ করতে পারিনি। তবে দেশের অনেক সংবাদাধ্যম আইইডিসিআর'র অসঙ্গতিপূর্ণ ডেটা ব্যবহার করে চলেছে।