Published : 10 Jun 2020, 01:47 PM
বর্তমান মার্কিন নেতৃত্বের দিকে- বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বোল-চালের দিকে তাকালে 'Fools rush in where Angels fear to tread' এই ইংরেজি আপ্তবাক্যটি মনে পড়ে যায়! সেখানকার ঘটমান বর্তমান কি বিশ্বের সবচাইতে সম্পদশালী দেশ আমেরিকার রুক্ষ-কঠিন পুঁজিবাদের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার পরিচয় বহন করছে? এ প্রশ্ন এ কারণেই সঙ্গত যে, বিগত কয়েক দশক জুড়ে আমেরিকার যে চেহারাটি বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশিত হয়েছে ও হচ্ছে তাতে এ ধারণা অমূলক নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে তার কর্তৃত্ত্ব ও সামর্থ্য হারাচ্ছে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিশ্বকে দমিয়ে রাখার দিন বুঝিবা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইতি টানতে চলেছে। এ অবধি যে আলামত দেখা যায় তাতে আগামীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক আমূল পরিবর্তন ঘটে যাওয়া বিচিত্র নয়। সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শের উদগাতা কার্ল মার্ক্স ধারণা করেছিলেন যে, বিশ্বে সমাজতন্ত্রের ঝান্ডা প্রথমে আমেরিকাতেই উড়বে। যদিও তার সে ধারণা সত্য হয়নি, তবে বর্তমানের সামগ্রিক পরিস্থিতি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে হয়তো এ কথা মনে করা অসঙ্গত হবে না যে, সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন মার্কিন মুল্লুকের গোটা অর্থনৈতিক চিত্রটিই অন্যরূপ ধারণ করবে। অর্থাৎ, গুটিকয় মানুষের হাতে আর তা হয়তো বন্দী থাকবে না, সাধারণ কর্মজীবী মানুষের ভাগ এতে প্রতিষ্ঠিত হবে একদিন।
যুক্তরাষ্ট্রে এক যাচ্ছেতাই লেজেগোবরে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সব কিছুকেই জটিল করে তুলেছেন। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ইত্যকার নানান কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে যে আমেরিকা এতকাল বিশ্বব্যাপী সর্দারী ও মাতব্বরী করে আসছে সেই মহাপরাক্রমশালী আমেরিকার আজ এ কি দশা! দুনিয়াব্যাপী মোড়লীপনা করা যে রাষ্ট্রের স্বভাবে পরিণত হয়েছিল এবং ডাণ্ডাবাজী আর হুমকি-ধামকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে যে রাষ্ট্রটি সকলের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে আসছে তার আজ এমনি বেহাল অবস্থা যে সকলের কাছে দেশটি এখন হাস্যাস্পদ ও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে করোনাভাইরাসের মতো এক ভয়ঙ্কর অণুজীব দেশটিকে নাকাল করে তুলেছে, অন্যদিকে আবার এক কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিককে হত্যার অভিযোগে সেখানকার পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ-বিদ্রোহ। বর্ণবাদের অবসানের দাবিতে গোটা যুক্তরাষ্ট্র এখন প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। আর এর প্রবল ঢেউ এসে আঘাত করছে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার দেশে দেশে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবিমৃষ্যকারিতা, বেশুমার অসত্য ভাষণ, সকল পরিস্থিতিকে হালকা করে দেখার মানসিকতা, প্রতিপক্ষের প্রতি অহেতুক ও উস্কানিমূলক বিদ্রূপবান নিক্ষেপ, শ্বেতাঙ্গদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে হাস্যকর ও বালসুলভ মন্তব্য, ধনশালীদের তথা বিগ বিজনেসকে সমস্ত রকম প্রণোদনা প্রদান আর আপামর খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য সামাজিক নেটওয়ার্কের আওতা হ্রাসসহ নানা রকম বুজরুকিপূর্ণ কাণ্ডকারখানায় আমেরিকার এক বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন দারুণভাবে ক্ষুব্ধ আর সেটিই পরিষ্কারভাবে মূর্ত হয়ে উঠেছে সেখানকার বর্তমান অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে। প্রথমত, করোনাভাইরাসকে ঘিরে ট্রাম্প সাহেব যে নাটক করে চলেছেন তাতে এমনিতেই মানুষ যারপরনাই বিরক্ত হয়ে উঠছিল আর এর উপর যখন গোদের উপর বিষফোঁড়ারূপে পুলিশের হাতে মিনিয়াপোলিসের এক কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনা ঘটে তখন মানুষের ধূমায়িত রোষ আর কোনো বাধা মানেনি। মহাসমুদ্রের ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ ঢেউয়ের আছাড়ি-বিছাড়িতে এখন গোটা মার্কিন মুল্লুক নাস্তানাবুদ হবার জোগাড়। আগামী নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ট্রাম্প কত ধরনের যে কুট-কৌশল প্রয়োগ করে চলেছেন তার ইয়ত্তা নেই! তার নিজের দলের মধ্যে এবং তার অনেক নিজস্ব এবং বিশিষ্ট কর্মকর্তার মধ্যেও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ সঞ্চারিত হতে দেখা যাচ্ছে। দেশব্যাপী ক্ষোভ-বিক্ষোভ এমন আকার ধারণ করেছে যে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করে ও হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড নামিয়েও তা প্রশমিত করা যাচ্ছে না। বিক্ষুব্ধ জনতা কারফিউসহ সব রকমের কঠোর আইনের কোনো তোয়াক্কাই করছে না। লুঠপাট, অগ্নি সংযোগ, গুলি বর্ষণ ইত্যাদি ঘটনাও ঘটে চলেছে দেদার। যাহোক, ট্রাম্প সাহেব বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে চেয়ে প্রবল সমালোচনার পাত্র হয়েছেন। শুধু কি তাই, সার্কাসের ক্লাউনের মতো নানান হাস্য রসাত্মক উক্তি করে আর ঢালাওভাবে তার সমালোচকদের বিরুদ্ধে বেশুমার অভিযোগের পাহাড় রচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকেই বিপন্ন করে তুলেছেন। তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশের আন্দোলনের চেহারা ও চরিত্রকেও হার মানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান লুটতরাজ ও অরাজকতা। অভিযোগ আছে যে, শেতাঙ্গদের মধ্যে কেউ কেউ উস্কানি জুগিয়ে পরিস্থিতি অন্য খাতে প্রবাহিত করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যেই ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের ও বাইরের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি অভিযোগ তুলেছেন যে, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে দ্বিধাবিভক্ত করে ছেড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডিং ফাদারদের সকল স্বপ্ন ও আকাঙ্খার মুখে চুনকালি লেপন করে ট্রাম্প দেশটির সকল অর্জন, গৌরব ও চেতনার মূলে কুঠারাঘাত করেছেন। ইতোমধ্যে চার চারজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট যথা: ওবামা, বুশ, ক্লিনটন ও কার্টার কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্পের।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না নিশ্চয়ই যে, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কপালে বর্ণবাদের কলংক তিলক এঁটে দিয়েছেন। বহু মার্কিন সাবেক ও বর্তমান কূটনীতিক ট্রাম্পের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি-কৌশলে দারুণভাবে বিব্রত বোধ করেছেন এবং বলেছেন যে, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার প্রশ্নে 'আমরা দেশে দেশে যে নসিহত করে ফিরি তা যে লোক দেখানো ও কেবলই নিজ স্বার্থ উদ্ধারের পায়ঁতারাবিশেষ এমনটাই মনে করা স্বাভাবিক এখন'।
যাহোক, সেই ছাত্রজীবনে দু'জন মার্কিন সাংবাদিকের লেখা একটি বই পড়েছিলাম। এর নাম ছিল 'The Invisible Government". বইটিতে মূলত ষাট দশকের কিউবা ক্রাইসিসকে ঘিরে ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে উৎখাত প্রয়াস ও ল্যাটিন আমেরিকায় মার্কিন নীতি-কৌশল বাস্তবায়নের নানা গোপন কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণী তুলে ধরেছিলেন লেখকদ্বয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় গোটা দশেক গুপ্ত সংস্থা (যেমন এফবিআই, সিআইএ ইত্যাদি) লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে বিশ্বময় মার্কিন প্রভাব বলয় তৈরির জন্য যে সব হিংসাশ্রয়ী কাণ্ডকারখানা করে ফেরে তার বিশদ বর্ণনা এটি।
যুক্তরাষ্ট্র তার মোড়লীপনা বজায় রাখতে দেশে দেশে রাজনৈতিক নেতাদের নির্মমভাবে হত্যা ও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারকে উৎখাতের জন্য সেখানে অরাজকতা সৃষ্টির এমন কোনো জঘন্য ও গণবিরোধী ভূমিকা নেই যাতে কিনা শামিল হয়নি বা হয় না। এর ভুরি ভুরি প্রমাণ ছড়িয়ে আছে বিগত সাত/আট দশকের ইতিহাসের পাতায় পাতায়। চিলিতে আলেন্দে, ঘানায় নক্রুমা, তুরস্কে মেন্দেরেজ, ইরাকে বাদশাহ ফয়সাল, ফিলিপাইনসে একিউনো, কংগোতে প্যাট্রিস লুমুম্বা, ইন্দোনেশিয়ায় সুকর্ন, আফগানিস্তানে জহির শাহ, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু, আর্জেন্টিনায় পেরোন, নিকারাগুয়ায় চে গুয়েভারা এমন অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের শিকার হতভাগ্যের মধ্যে গুটিকয় মাত্র! আর সাম্প্রতিক কালে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন ও লিবিয়ার গাদ্দাফিকে উৎখাত, হত্যা ও তাদের সাজানো বাগানরূপী দেশ দুটিকে কি জঘন্য মিথ্যাচার ও বর্বরোচিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হলো তা তো আমরা জগৎবাসী প্রত্যক্ষ করলাম। ফিলিস্তিনিদেরকে নিজ বাসভূমি থেকে কি নির্মম-নৃশংসতায় উচ্ছেদ করা হয়েছে তাও কারও দৃষ্টি এড়ায়নি! একাত্তরে আমাদের উপর হানাদার পাকিস্তানিদের পৈশাচিক নির্মমতাকে যুক্তরাষ্ট্র 'পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার' বলে অভিহিত করে কি কায়দায় হানাদারদের মদদ জুগিয়েছিল নিজ হীনস্বার্থে তাও কারও অবিদিত নয়। এক্ষেত্রে, নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ছে। ওয়ান-ইলেভেনকালে একজন মার্কিন মন্ত্রী (তিরিশোর্ধ এক অনিন্দ্যসুন্দরী মহিলা ছিলেন তিনি) এসেছিলেন বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সুষ্টু ও অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে বলে' নিশ্চিত' হন। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস এর পর দূতাবাসেই ঐ মন্ত্রীর সঙ্গে কয়েকজন বাছাই করা সাংবাদিকের একটি মত বিনিময়ের আয়োজন করে। আমিও ঐ সাংবাদিকদের একজন ছিলাম। সে যাই হোক, মন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হলে আমি জানতে চাইলাম যে, দুনিয়াজোড়া মানবাধিকারের প্রবক্তা সেজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ইত্যাদির ব্যাপারে সর্বক্ষণ শিক্ষা দিয়ে বেড়ায় যে যুক্তরাষ্ট্র সেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর কি করে আবার ১৯৭১ এ বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত জামায়াতে ইসলামকে একটি 'মডারেট ও লিবারেল ইসলামী দল' হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তা আমাদের বুঝে আসে না'। আমি এই প্রশ্নটি তুলে জানতে চাই যে, 'মন্ত্রীবর, এটা কি যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের দ্বিচারিতাসূলভ আচরণকে মেলে ধরে না?' তিনি এ প্রশ্নে স্পষ্টতই খানিক বিব্রত বোধ করেন ও বলেন যে, একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকার ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই আর এ সম্পর্কিত কোনো তথ্যপঞ্জীও তাদের পররাষ্ট্র দফতরে নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। যাহোক, তা তিনি যা-ই সেদিন বলে থাকুন না কেন যুক্তরাষ্ট্র যে নিজ ভূ-রাজনৈতিক এবং সর্বোপরি অর্থনৈতিক স্বার্থে বরাবরই এই দ্বিচারিতাপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তাতো বলাই বাহুল্য! এখানে আরেকটি উদাহরণও তুলে ধরা যাক। বঙ্গবন্ধুর এক খুনি দীর্ঘদিন ধরে বহাল তবিয়তে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছে আর তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবার ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন 'ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট' প্রাপ্ত কাউকে স্বদেশে ফেরত দিতে অপারগ বলে জানিয়ে আসছে। অথচ, রাষ্ট্রটির বিভিন্ন অঙ্গ রাজ্যে আবার মৃত্যুদণ্ডের বিধান ঠিকই কিন্ত চালু রয়েছে! বিভিন্ন দেশ থেকে পালিয়ে আসা দুর্বৃত্ত, খুনি, দুর্নীতিবাজ ও দুষ্কৃতকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এক স্বর্গ রাজ্যই বটে!
কথায় বলে 'ধর্মের কল বাতাসে নড়ে', এবার যুক্তরাষ্ট্রের এই নাজুক অবস্থার মাধ্যমে এটিই প্রকট হয়ে উঠল যে, ছল-চাতুরী, হম্বি-তম্বি আর যত্রতত্র শক্তি প্রয়োগের বুলি কপচিয়ে মানুষকে দমিয়ে রাখার দিন বুঝি আমেরিকার জন্য ফুরিয়ে আসছে। তবে এ কথাও ঠিক যে, ক্ষমতাবানেরাও এত সহজে ছেড়ে দেবার পাত্র নন, সুতরাং আগামীতে তারা আরও নানা প্রকারের ভানুমতির খেল দেখাতে যে তৎপর হবে এতে সন্দেহ কী! অবিশ্যি, করোনাভাইরাসের এই দোর্দণ্ড প্রতাপ থেকে সেখানকার সব মহলের মানুষ কিছু শিক্ষা পেলে হয়তোবা পরিস্থিতির খানিক গুণগত পরিবর্তন হলেও হতে পারে! আগামী দিনগুলিতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে নিশ্চয়ই!