ভারতের স্বার্থে বিশ্বব্যাপী ১৫ বছর ধরে পরিচালিত বিস্তৃত একটি গুজব প্রচারের নেটওয়ার্কে অন্তত সাড়ে সাতশ ভুয়া মিডিয়া আউটলেটের পাশাপাশি মৃত এক অধ্যাপক এবং একসময় প্রসিদ্ধ কিন্তু পরবর্তীতে অকার্যকর হয়ে পড়া বিভিন্ন সংস্থার নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে বিস্তৃত এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
Published : 10 Dec 2020, 04:34 PM
মৃত যে অধ্যাপকের পরিচয় চুরি করা হয়েছে তাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়; ২০০৬ সালে ৯২ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“আমাদের অনুসন্ধানে পাওয়া (গুজব প্রচারের) সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক এটি,” বলেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ডিসইনফোল্যাবের নির্বাহী পরিচালক আলেক্সান্দ্রে আলাফিলিপ।
ইইউ ডিসইনফোল্যাবই ভারতপন্থি এই ভুয়া প্রচারের নেটওয়ার্ক নিয়ে অনুসন্ধান করেছে। বুধবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা।
গুজব প্রচারের এই নেটওয়ার্ক মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে বানানো হয়েছিল বলে ইইউ ডিসইনফোল্যাবের ভাষ্য।
গত বছর এই নেটওয়ার্কটির একাংশের সন্ধান পেয়েছিল তারা। সেসময় যা সন্দেহ করা হয়েছিল, নেটওয়ার্কটি তারচেয়েও বড় এবং অনেক বেশি মজবুত বলে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে।
বিবিসি লিখেছে, নেটওয়ার্কটির সঙ্গে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইনডিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) সাহায্যে ভুয়া মিডিয়া আউটলেটের উৎপাদিত সংবাদ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচারের উপরই নির্ভরশীল ছিল এটি।
ব্রাসেলসভিত্তিক ইইউ ডিসইনফোল্যাবের গবেষকরা গতবছর এই নেটওয়ার্কের অধীনে থাকা ভারতপন্থি ২৬৫টি ওয়েবসাইটের সন্ধান পেয়েছিলেন, যা ৬৫টি দেশে সমন্বিতভাবে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এসব ওয়েবসাইটের সঙ্গে দিল্লিভিত্তিক হোল্ডিং কোম্পানি শ্রীবাস্তব গ্রুপের (এসজি) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
বুধবার ‘ইন্ডিয়ান ক্রনিকল’ শিরোনামে প্রকাশিত ইইউ ডিসইনফোল্যাবের প্রতিবেদনে অন্তত ১১৬টি দেশে ক্রিয়াশীল এসজির নিশানায় জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা ছিলেন বলে জানানো হয়।
আলাফিলিপ বলছেন, ভিন্ন ভিন্ন অংশীদারদের সমন্বয়ে বিস্তৃত অপপ্রচারের এমন নেটওয়ার্কের মুখোমুখি আগে কখনোই হননি তারা।
“গত ১৫ বছর ধরে, এমনকি গত বছর ধরা পড়ার পরও, এই নেটওয়ার্ক এত নিপুণভাবে কর্মকাণ্ড চালাতে পেরেছে, যা নেটওয়ার্কটির পেছনে থাকা কলাকুশলীদের অসাধারণ দক্ষতা ও পরিচালনা সক্ষমতার প্রমাণ। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কয়েকটি কম্পিউটারের চেয়েও বেশি কিছু লাগবে আপনার,” বলেছেন তিনি।
বড় হলেও অপপ্রচারের এ নেটওয়ার্কটির সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ থাকতে পারে, এমন ভাবনার বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গুজব প্রচার বিষয়ক নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ বেন নিমো বলেন, “নেটওয়ার্কটি বড়, এর অর্থ এই নয় যে এটি সরাসরি সরকার দ্বারা পরিচালিত।”
ইইউ ডিসইনফোল্যাবের তদন্তে শ্রীবাস্তব গ্রুপের (এসজি) সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি জাতিসংঘ অনুমোদিত অন্তত ১০টি বেসরকারি সংস্থার সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টিও উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এই সংস্থাগুলোকে ভারতীয় স্বার্থের প্রচারে এবং পাকিস্তানের সমালোচনায় ব্যবহার করা হত।
“জেনিভায় এই থিংকট্যাংক ও এনজিওগুলো লবিং, কর্মসূচি সংগঠিত করা, সংবাদ সম্মেলন ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সাইড ইভেন্টে বক্তব্য দেওয়াসহ নানান দায়িত্বে আছে। অনুমোদিত সংস্থা হিসেবে জাতিসংঘের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এদেরকে কথা বলারও সুযোগ দেওয়া হয়,” বলা হয় প্রতিবেদনে।
২০০৫ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) নতুন রূপে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কয়েক মাস পর শ্রীবাস্তব গ্রুপের এই অপপ্রচার নেটওয়ার্কের কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানিয়েছে ইইউ ডিসইনফোল্যাব।
তাদের গবেষকদের নজরে যে বেসরকারি সংস্থার নাম বিশেষভাবে এসেছে, সেটি হল কমিশন টু স্টাডি দ্য অর্গানাইজেশন অব পিস (সিএসওপি) । গত শতকের ত্রিশের দশকে প্রতিষ্ঠিত এ সংস্থাটি ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘের অনুমোদন পেলেও কয়েক বছর পরই অকার্যকর হয়ে পড়ে।
সংস্থাটির সাবেক এক চেয়ারম্যান ‘অধ্যাপক লুইস বি সোন’ ২০০৭ সালে ইউএনএইচআরসির এক অধিবেশনে এবং পরে ২০১১ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে অন্য এক অনুষ্ঠানে সিএসওপির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বলে তথ্য পাওয়ার পর ইইউ ডিসইনফোল্যাবের গবেষকদের চোখ কপালে ওঠে।
কারণ, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শীর্ষ আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ও হার্ভার্ডের ল’ ফ্যাকাল্টিতে ৩৯ বছর ধরে সদস্য হিসেবে থাকা সোন ২০০৬ সালেই মারা যান।
ইইউ ডিসইনফোল্যাবের তদন্তে উঠে আসা আরেকটি সন্দেহজনক সংস্থা হচ্ছে ইউনাইটেড স্কুল ইন্টারন্যাশনাল (ইউএসআই) । জাতিসংঘ অনুমোদিত এ সংস্থার সঙ্গেও এসজির যোগসাজশ আছে।
২০১৯ সালের মার্চে ইউএনএইচআরসির ৪০তম অধিবেশনে ইউএসআই তাদের জন্য নির্ধারিত সময় আমস্টারডমভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (ইএফএসএএস) রিসার্চ এনালিস্ট ইয়োআনা বারাকোভাকে দেয়, যিনি ওই অনুষ্ঠানে ‘পাকিস্তানের বর্বরতা’ নিয়েই কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে বারাকোভা পরে বিবিসিকে বলেন, ইএফএসএএস ছিল ইউএসআইয়ের অংশীদার। সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা সম্পর্কিত দায়ভার তার ছিল না।
বিবিসি পরে ইএফএসএএসের পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ইএফএসএএসের ওই পরিচালক ইউএনএইচসিআরের একই অধিবেশনে ইউএসআইয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, সেবার তিনিও পাকিস্তানের সমালোচনা করেন।
যে বার্তা সংস্থার মাধ্যমে এসজি তাদের ভারতের স্বার্থে গুজব প্রচারকে পুনরায় বাজারজাত ও আরও শক্তিশালী হিসেবে হাজির করত, সেটি হল এএনআই। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বার্তা সংস্থা নিজেদের পরিচয় হিসেবে লেখে, “দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ এজেন্সি; ভারত, দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্বজুড়ে যাদের ব্যুরো সংখ্যা শতাধিক”।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম বিশেষ করে টেলিভিশনগুলোতে এএনআইয়ের প্রকাশিত খবর ও নিবন্ধের ব্যাপক চাহিদা আছে।
অন্তত ১৩টি ক্ষেত্রে এএনআইকে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের পাকিস্তানবিরোধী এবং কখনো কখনো চীনবিরোধী নিবন্ধ পুনঃপ্রকাশ করতে দেখা গেছে বলে ইইউ ডিসইনফোল্যাবের তদন্তে উঠে আসে। ওই নিবন্ধগুলো প্রথম প্রকাশিত হয় এসজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভুয়া নিউজ সাইটের একটি ইইউ ক্রনিকলে।
REVEALED: Indian Chronicles – how a massive 15-year influence operation successfully targeted the EU & UN with 750+ fake local media and 10+ zombie-NGOs.
Executive Summary & full report: https://t.co/W3IAxQTOqZ
Here are the facts (1/n) pic.twitter.com/eXW6bh48gv
— EU DisinfoLab (@DisinfoEU) December 9, 2020
ভারতপন্থি গুজব প্রচারের এ নেটওয়ার্কে একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত ইপি টুডে নামে একটি ওয়েবসাইট; গত বছর ইইউ ডিসইনফোল্যাবের আংশিক তদন্ত প্রতিবেদনে ইপি টুডের নাম আসার পর সেটির স্থান দখল করে ইইউ ক্রনিকল।
এএনআই মূলত ওইসব কন্টেন্টকে বৈধতা দেয়; ফলে সেগুলো বিশ্বাসযোগ্যতার পাশাপাশি আরও বেশি বেশি প্রচারের সুযোগ পায় বলে মন্তব্য করেছেন ইইউ ডিসইনফোল্যাবের নির্বাহী পরিচালক আলাফিলিপ।
শ্রীবাস্তব গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থার ইউরোপে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচির খবরও এএনআই প্রকাশ করে; ওই একই খবর প্রকাশিত হয় এসজি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ভুয়া মিডিয়া ওয়েবসাইটেও।
অপপ্রচারের এই নেটওয়ার্ক তাদের প্রভাব বিস্তারে দুটি ফ্রন্টে কাজ করে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
জেনিভাতে এসজি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন থিংকট্যাংক ও বেসরকারি সংস্থা লবিং, প্রতিবাদ কর্মসূচির পাশাপাশি জাতিসংঘ অনুমোদিত নানান সংস্থার পক্ষে ইউএনএইচআরসিতে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ কাজে লাগায়।
আর ব্রাসেলসে তাদের নিশানায় থাকে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা (এমইপি) । ওই এমইপিদেরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভ্রমণ এবং ইইউ ক্রনিকলের মতো ভুয়া মিডিয়া আউটলেটে ‘এক্সক্লুসিভ’ নিবন্ধ লেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেসব নিবন্ধ পরে এএনআই এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে পুনঃপ্রকাশ কর।
ইইউ ডিসইনফোল্যাবের তদন্তে ঘুরে ফিরে একদল এমইপির নাম বারবার এসেছে। এদেরই একজন ফ্রান্সের এমইপি থিয়েরি মারিয়ানি, যিনি ইইউ ক্রনিকলে দুটি নিবন্ধ লিখেছেন এবং গত বছর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিতর্কিত এক সফরেও ছিলেন।
“ভারত সরকার যদি এই সংবাদমাধ্যমের (ইইউ ক্রনিকল) পেছনে থাকেও, তা আমার সমস্যা নয়। আমি যা চাই এবং অনুভব করি তাতেই স্বাক্ষর করেছি। এগুলো আমারই মত। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে এবং আমি নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমর্থক,” বিবিসিকে এমনটাই বলেছেন ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থি ন্যাশনাল র্যালির সদস্য মারিয়ানি।
দুই এমইপি, বুলগেরিয়ার অ্যাঞ্জেল জেমবাজকি ও পোল্যান্ডের গ্রেগর্জ তোবিসজোওস্কি অবশ্য তাদের নামে ইইউ ক্রনিকলে ছাপানো দুটি নিবন্ধ লেখার কথা অস্বীকার করেছেন। যদিও তাদের নামে প্রকাশিত ওই নিবন্ধগুলোও এএনআই পরে প্রকাশ করেছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, গত বছর ও চলতি বছর ইইউ ডিসইনফোল্যাব যে বিস্তৃত তদন্তে ভারতপন্থি অপপ্রচারের নেটওয়ার্কটি উন্মোচিত হয়েছে, তাতে অঙ্কিত শ্রীবাস্তব নামের একজনের কথাই বারবার উঠে এসেছে। অঙ্কিতের ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের ইমেইল ঠিকানাতেই কেনা হয়েছে চারশর বেশি ডোমেইন।
তদন্তে আরও এসেছে, এসজি মালিকানাধীন রহস্যজনক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘আগলায়া’র নাম। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে আর ঢোকা না গেলেও আগে তারা ‘হ্যাকিং/স্পাই সরঞ্জাম’ ও ‘তথ্য যুদ্ধ সংক্রান্ত সেবা’ বিক্রির বিজ্ঞাপন দিত বলে জানিয়েছে বিবিসি।
‘আগলায়া’র প্রতিষ্ঠাতা অঙ্কুর শ্রীবাস্তব নামে এক ব্যক্তি ২০১৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি কেবল ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছেই সেবা বিক্রি করেন’।
অঙ্কুরের সঙ্গে অঙ্কিত শ্রীবাস্তকের সম্পর্ক কী, কিংবা আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, তা জানা যায়নি।
তদন্তে তৃতীয় যে শ্রীবাস্তবের নাম এসেছে তিনি হলেন, ড. প্রমীলা শ্রীবাস্তব; শ্রীবাস্তব গ্রুপের চেয়ারপারসন এবং অঙ্কিত শ্রীবাস্তবের মা।
ইইউ ডিসইনফোল্যাবকে পাঞ্জাবের শিশু বিশেষজ্ঞ ড, হারসিন্দর কাউর জানান, ২০০৯ সালে তাকে যখন জেনিভায় ইউএনএইচসিআরের এক আয়োজনে মেয়ে ভ্রুণহত্যা নিয়ে লেকচার দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল. সে সময় ড. পি শ্রীবাস্তব নামে এক নারী তাকে হুমকি দিয়েছিলেন।
প্রমীলা সেসময় নিজেকে ‘ভারত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা’ বলে পরিচয় দিয়েছিল বলেও দাবি হারসিন্দরের।
শ্রীবাস্তব গ্রুপ সম্পর্কে ইইউ ডিসইনফোল্যাবের প্রতিবেদনে থাকা নানান অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে বিবিসি অঙ্কিত শ্রীবাস্তবকে মেইল পাঠালেও তার জবাব মেলেনি। দিল্লির সফদারজং এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে গেলে সেখানকার কর্মীরাও কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।
গুজব প্রচারের এই নেটওয়ার্ক সম্পর্কে ইইউ ডিসইনফোল্যাবের বিস্তৃত প্রতিবেদন প্রকাশের পরও নেটওয়ার্কটির কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে কিনা তা ‘স্পষ্ট নয়’ বলে জানিয়েছে বিবিসি।
‘ইন্ডিয়ান ক্রনিকল’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনের লেখকরা বলেছেন, তাদের অনুসন্ধান আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহারের নেপথ্য নায়কদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কাঠামো তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
“ইন্ডিয়ান ক্রনিকলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এর বিরুদ্ধে কোনো বার্তা না দেয়, তাহলে নেটওয়ার্কটির পক্ষে ফের একই ধরনের কাজ করার সুযোগ ও জায়গা দুটোই থেকে যেতে পারে,” বলেছেন তারা।