শরীর ক্লান্ত থাকলে অনেক কিছু হাস্যকর মনে হতে পারে

ক্লান্ত থাকলে অনেক কিছুই বিরক্ত লাগে। তবে উল্টোটাও ঘটতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2022, 10:41 AM
Updated : 23 Nov 2022, 10:41 AM

সামান্য বিষয় নিয়েও অদ্ভুত মজা পাওয়ার কারণ হতে পারে ঘুমের অভাব।

শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত থাকলে সাধারণ কৌতুকেই আপনার হাসি পেতে পারে। সামান্য কৌতুক, যা অন্যসময় আপনার হাসির খোরাক হতে পারত না, কিন্তু এখন যেন হাসি থামাতেই পারছেন না- এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

আপনি একা নন, অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মনোবিজ্ঞানি কায়লার শামওয়ে বলেন, “আর্বান ডিকশনারি’ ঘাটলে ‘মাফিন পয়েন্ট’ একটি শব্দ পাওয়া যায়। যার অর্থ হল ঘুমের অভাবের কারণে হাসির উদ্রেক হওয়া।”

“সাইকোলজিস্ট’রা এই শব্দ দিয়ে ঘটনাটিকে শনাক্ত না করলেও একথা ঠিক যে ঘুম পর্যাপ্ত না হলে আসলেই যে কোনো হাস্যকর ঘটনাকে আরও বেশি হাস্যকর মনে হয়। অনুভূতিটা অনেকটা মাতলামির মতো”, ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাইবে ব্যাখ্যা দেন তিনি।

আরও বলেন, “ঘটনা শুরু হয় মস্তিষ্কের ‘প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স’ থেকে। মস্তিষ্কের এই অংশ মানুষের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে। শিশুদের এই অংশ পুরোপুরি বিকশিত হয় না বলেই তারা খুব সহজেই আনন্দিত হয়।”

‘প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স’ মূলত আবেগের লাগাম হিসেবে কাজ করে। এই অংশই সিদ্ধান্ত নেয় আবেগ বাইরে প্রকাশ করা হবে কি-না।

তবে একজন মানুষ যখন অত্যন্ত ক্লান্ত থাকে তখন এই লাগাম সঠিকভাবে কাজ করে না, নিয়ন্ত্রণ হারায়। ফলে ওই ব্যক্তির সকল আবেগই চরম আকারে প্রকাশ পায়।

শামওয়ে বলেন, “অর্থাৎ যখনই দেখবেন সামান্য ঘটনায় আপনার প্রতিক্রিয়া বাড়াবাড়ি মাত্রায় হচ্ছে, কাজে মনযোগ দিতে পারছেন না, হতাশা গ্রাস করছে, বুঝতে হবে আপনার ঘুমের অভাব হয়েছে।”

ঘুমের এই ঘাটতি অত্যন্ত মারাত্মক সমস্যা, স্বল্প মেয়াদে এবং দীর্ঘ মেয়াদেও। এই মানুষগুলো খিটখিটে মেজাজে থাকে, যানবাহন চালানো, হাঁটাচলা সবই বিশৃঙ্খল হয় এবং স্মৃতিশক্তি হয় অত্যন্ত দুর্বল। পাশাপাশি তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও হবে দূর্বল, রক্তচাপ বাড়বে, বাড়বে হৃদরোগের ঝুঁকিও।

করণীয়

শামওয়ে বলেন, “করণীয় মূলত ঘুমানো। তবে চাইলেই তো আর ঘুমিয়ে পড়া যায় না। স্বল্প মেয়াদে মানসিক চাপ সামাল দেওয়ার ক্ষমতা শরীরের জৈবিকভাবেই আছে। কালেভদ্রে জীবনের প্রয়োজনের মানসিক চাপ, ঘুমের ঘাটতি নিয়ে কাজ করে যেতে হলে তাতে সমস্যা নেই। তবে এটা যদি জীবনের নিয়মিত ঘটনা হয়ে যায় তবে সমস্যা।”

তিনি পরামর্শ দেন, “আপনার ক্ষেত্রে যদি ঘটনাটি এমন হয় তবে এখনই অন্য সবকিছু বাদ দিয়ে ঘুমকে প্রাধান্য দিন। কফি কিংবা এনার্জি ড্রিংক পান করে সাময়িক স্বস্তি পেতে পারেন, কাজ শেষ করার সুযোগ পেতে পারেন, তবে সেটা ক্লান্তির সমাধান নয়। সমাধান হল পর্যাপ্ত ঘুম। অনিদ্রা বা ‘ইনসোমনিয়া’ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।”