সেই সঙ্গে কমে কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ।
জরিপের মাধ্যমে গবেষকরা দেখেন, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে ‘ফ্লার্ট’ করা একদিকে যেমন কাজের চাপ সামলানোর ক্ষমতা বাড়ায় তেমনি সহকর্মীদের মাঝেই আপনি প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে পারেন। তবে অবশ্যই সীমা লঙ্ঘন করা চলবে না।
এই বিষয়ে তিনটি পৃথক জরিপ চালান যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লেয়া শেপার্ড ও তার দল।
দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বা হয়রানিমুলক নয় কিন্তু ভালোলাগার ইঙ্গিতপূর্ণ কৌতুক করা বা ‘ফ্লার্ট’ করাকে যদি সবাই স্বাভাবিকভাবে নেয় তবে যার সঙ্গে কৌতুক করা হচ্ছে সেই নারী কিংবা পুরুষ কাজের নেতিবাচক মানসিক চাপ থেকে সুরক্ষা পায়।
এর কারণ হল, যার সঙ্গে এই ‘ফ্লার্ট’ করা হচ্ছে সে নিজেকে সবার বন্ধু ভাবে, নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং ‘ফ্লার্ট’কে তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রশংসা হিসেবে দেখে। সবকিছু মিলে কাজের চাপের নেতিবাচক প্রভাব সামলানো তার জন্য সহজ হয়।
জরিপের ফলাফল প্রকাশ পায় ‘অর্গানাইজেইশনাল বিহেভিয়ার অ্যান্ড হিউম্যান ডিসিশন প্রসেস’ শীর্ষক জার্নালে।
সেখানে শেপার্ড বলেন, “সময়ভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, ‘ফ্লার্ট’ করার ব্যাপারটাকে যদি কেউ উপভোগ করে তবে তা তার মানসিক অবস্থা ভালো থাকে।”
এই জরিপের জন্য শেপার্ড ও তার গবেষক দল যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ফিলিপিনের কয়েকশ কর্মজীবী নারী-পুরুষের মতামত পর্যালোচনা করেন, যাদের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে ‘ফ্লার্ট’ করা হয়েছে।
গবেষকরা বলেন, এই ‘ফ্লার্ট’ যে সবসময় ‘রোমান্টিক’ হতে হবে এমনটা নয়, সহজাত প্রবৃত্তিগত আচরণও হতে পারে। এমনকি সীমা লঙ্ঘন না করলে বৈবাহিক সম্পর্ক আছে এমন নারী-পুরুষও এই ধরনের কৌতুক উপভোগ করেন।
প্রথম জরিপেই গবেষকরা নির্ধারণ করেন ঠিক কতটুকু কৌতুক বা ‘ফ্লার্ট’ করাটা নিরাপদ, হয়রানি বা ইঙ্গিতপূর্ণ নয়। আরও দিক সামনে আসে এই জরিপের মাধ্যমে, তা হল ব্যক্তিগত জীবনের প্রেমের গল্প, যাতে সামান্য যৌনতাও অনেকসময় মিশে থাকে, যা সহকর্মীরা উপভোগ করেছেন। এই বিষয়ে বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারীর মনোভাব ছিল নিরপেক্ষ।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে যারা হয়রানিমুলক নয় এমন ‘ফ্লার্ট’ বেশি পেয়েছেন তারা কাজের চাপের নেতিবাচক প্রভাবগুলো ততই ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছেন। তবে এই ‘ফ্লার্ট’ তখনই বিপত্তি বাঁধে যখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই কাজ করতে শুরু করেন।
গবেষকরা বলেন, “কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর কাছ থেকে ‘ফ্লার্ট’য়ের শিকার হওয়া কতটা হয়রানিমূলক হতে পারে তা আমরা সবাই জানি। তবে আমাদের জরিপে দেখা গেছে সব ‘ফ্লার্ট’ হয়রানিমূলক নয়, বরং কিছু ‘ফ্লার্ট’ সহকর্মীদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং মানসিক চাপ কমায়।”
এবিষয়ে আরও বিস্তারিত পর্যালোচনা প্রয়োজন এবং গবেষকদের বিশ্বাস তাদের এই জরিপের ফলাফল অন্যান্য গবেষকদের সেই পর্যালোচনায় অনুপ্রেরণা যোগাবে।
আরও পড়ুন