লোম না উঠলেও নাকের ত্বকের যত্নে লোমকূপ পরিষ্কার রাখা জরুরি।
Published : 28 Mar 2024, 03:58 PM
নাকের উপরিভাগের ত্বকে সুক্ষ্ম ছিদ্রগুলোকে বলা হয় ‘নোজ পোর্স’ বা নাকের লোমকূপ।
লোম না গজালেও এই লোমকূপগুলোর কাজ হল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে তেল নিঃসরণ করা।
সবারই নাকের ত্বকে এই ধরনের সুক্ষ্ম ছিদ্র রয়েছে। তবে সমস্যা হয় তখনই যখন নাকের লোমকূপে ময়লা, ধুলা জমে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে ব্রণ বা ত্বকে নানান সমস্যা দেখা দেয়।
“কারও কারও নাকের লোমকূপ দেখতে বেশ বড় হয়। সেক্ষেত্রে করার কিছু নেই। এটা প্রাকৃতিক”- ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবেই মন্তব্য করেন নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘ওয়েইল মেডিকেল কলেজ অফ কর্নেলি ইউনিভার্সিটি’র ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. হ্যাডলি কিং।
তিনি বলেন, “তৈলাক্ত ও ব্রণ প্রবণ ত্বকে লোমকূপ বেশি দৃশ্যমান হয়। যে কারণে সেখানে দ্রুত ময়লা জমে। দেখতেও বাজে লাগে।”
দৃশ্যমান লোমকূপের আকার কমানো যায় না। বংশগতি ছাড়াও বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে।
বয়স বৃদ্ধি: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমে। যে কারণে লোমকূপের আকার বেড়ে যায়।
নিউ ইয়র্ক’য়ের আরেক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রোজ মারি ইনজেলেটন বলেন, “বয়সের সঙ্গে ত্বকের ‘ইলাস্টিসিটি’ হ্রাসের কারণে নাঁকের লোমকূপ আকারে বড় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।”
এক্সফলিয়েটিং: রূপচর্চার এই পন্থায় ত্বকের ময়লা ও মৃত চামড়া দূর করা হয়। তবে অতিরিক্ত এক্সফিলিয়েটিং’য়ের কারণে নাকের লোমকূপ বড় হয়ে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সাধারণত সপ্তাহে দুবার এক্সফিলিয়েট করার পরমর্শ দেয়।
হরমোনস: ডা. কিং বলেন, “হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও মানসিক চাপ থেকে ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়। এর ফলে লোমকূপ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।”
যে কারণে দিতে পারে ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস’য়ের সমস্যা।
নাকের লোমকূপের আকার কি ছোট করা যায়?
এই বিশেষজ্ঞদের মতামত হল- নাক বা মুখ যেটাই হোক, যাদের লোমকূপ বড় তাদেরটা সেভাবে ছোট বা অদৃশ্যমান করা যায় না। তাই নিয়মিত পরিষ্কার ও এক্সফলিয়েশন করলে লোমকূপ দেখতে পরিষ্কার লাগে।
এক্ষেত্রে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ও ল্যাক্টিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকে মসৃণভাব পাওয়া যায়।
লোমকূপ পরিষ্কার রাখার পন্থা
নিয়মিত ত্বকের যত্ন না নিলে লোমকূপে ময়লা ও তেল জমে ব্যাক্টেরিয়া গজানোর পরিবেশ তৈরি হয়। যা থেকে দেখা দেয় ব্রণ ও ‘ব্রেকআউটস’। তাই পরিষ্কার রাখার জন্য নানান পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
পরিষ্কার করা: লোমকূপদের সুখী রাখতে পরিষ্কার করা জরুরি। এজন্য সাধারণ হালকা ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ত্বকের উপরিভাগে থাকা তেল ধুয়ে ফেলতে হবে। এর ফলে এক্সফলিয়েট করা ও অন্যান্য উপাদান ব্যবহারের উপযুক্ত অবস্থা তৈরি হবে ত্বকে।
এক্সফলিয়েট: রাসায়নিক এক্সফিলিয়েটরস, যেমন- আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিডস (এএইচএএস), বেটা হাইড্রোক্সি অ্যাসিডস (বিএইচএএস) সমৃদ্ধ পরিষ্কারক মৃত চামড়া, তেল ও ময়লা দূর করতে ভালো কাজ করে।
ঘরে এসব উপাদান এক্সফলিয়েট করার পাশাপাশি ‘নৌজ স্ট্রিপস’ ব্যবহার করা যেতে পারে।
মাস্ক ব্যবহার: কয়লা বা ‘চার্কোল মাস্ক’ লোমকূপ পরিষ্কারে জাদুর মতো কাজ করে।
ময়েশ্চারাইজার: লোমকূপ পরিষ্কারের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কারণ এক্সফলিয়েট করার পর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, যে কারণে তেলের নিঃসরণ বাড়ে। এই সমস্যা এড়াতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার জরুরি।
স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ব্যবহার: ত্বকের ময়লা গভীর থেকে পরিষ্কার করতে এই অ্যাসিড কার্যকর।
ডা. কিং বলেন, “ত্বকের উপরিভাগ ছাড়াও লোমকূপের গভীর থেকে ময়লা ও তেল পরিষ্কারে খুব ভালো কাজ করে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড।”
তবে রূপচর্চার রুটিনে এই ধরনের কোনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী যোগ করার আগে ত্বক-বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
ছবি: পেক্সেল্স ডটকম।
আরও পড়ুন