লোমকূপ বন্ধ হলে ত্বকে দেখা দেবে ব্রণের সমস্যা।
বসন্তের আমেজে মন ভালো থাকলেও গরমের আগমনী বার্তা ত্বককে কিছুটা মলিন করে ফেলে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের পরেও যারা শীতকালীন ত্বক পরিচর্যায় চালিয়ে যান, তাদের লোমকূপ আটকে দেখা দেয় ব্রণ ও ‘ব্রেকআউট’য়ের সমস্যা।
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ এমিলি ট্রাম্পেটি এই বিষয়ে বলেন, “ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে ত্বক কেমন প্রতিক্রিয়া করে তা বুঝে উঠতে না পারলে আবদ্ধ লোমকূপের সমস্যা গুরুতরভাবে দেখা দেয়।”
“এই সময়ে ত্বক স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তৈলাক্ত, ঘর্মাক্ত হয়ে ওঠে। আর এই অবস্থায় শীতকালের প্রসাধনী ব্যবহার করা বা তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখা না হলে লোমকূপ আবদ্ধ হয়ে যায়।”
লোমকূপে তেলগ্রন্থি রয়েছে। তাই এগুলো পরিষ্কার রাখা উচিত। তেল, ওয়াক্স, কোলেস্টেরল ও মৃত কোষ লোমকূপকে আবদ্ধ করে ফেলে। অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের ফলে ত্বকে পানিশূন্যতা দেখা দেয়।
ত্বকে খুব বেশি তেল উৎপাদন ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ায়।
ট্রাম্পেটি বলেন, “অতিরিক্ত তেল উৎপাদন লোপকূপকে আবদ্ধ করে ফেলে এবং অন্যান্য জিনিস যেমন- মৃত কোষ, ওয়াক্স ও কোলেস্টেরল মিশে ব্রণ সৃষ্টি করে।”
অন্যদিকে, ত্বক পানিশূন্য অবস্থায় থাকলে লোমকূপে ময়লা আটকে যায় এবং ওপর থেকে পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভবপর হয় না।
কারণ যাই হোক, ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্রসাধনী ব্যবহারের মাধ্যমে লোমকূপ আবদ্ধ হওয়া কমানো সম্ভব।
লোমকূপ পরিষ্কার রাখা
ট্রাম্পেটি বলেন, “চারকোল মাস্ক ব্যবহার ও এক্সফলিয়েশন করা লোমকূপ পরিষ্কার রাখাতে উপকারী।”
“ত্বক খুব বেশি তৈলাক্ত হলে ‘ক্লে’, ভিটামিন সি ও নিয়াসিনামাইড সমৃদ্ধ চারকোল ভিত্তিক মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেই আমি। এগুলো লোমকূপ থেকে ময়লা বের করে নিতে চমৎকার কাজ করে। এছাড়াও ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং সুস্থতায় ভূমিকা রাখে।”
নিয়মিত মুখ পরিষ্কার রাখা
ত্বকের সুস্থতায় পরিষ্কার রাখা উচিত।
ট্রাম্পেটির মতে, “ত্বকের পরিচ্ছন্নতায় মনযোগী হতে হবে। কোনোভাবেই মেইকআপ নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া যাবে না।”
মৃদু ক্লেঞ্জার ব্যবহার ত্বক পরিষ্কারের পাশাপাশি আর্দ্রতা রক্ষা করতে সহায়তা করে।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
ত্বক সুস্থ রাখতে ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প নেই। তবে ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় তা ত্বকের জন্য খুব বেশি ভারী বা হালকা হয়ে যাবে।
মিশ্র থেকে তৈলাক্ত ত্বক
মিশ্র ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তুলনামূলক হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ প্রসাধনী ত্বকের চিটচিটেভাব কমায় এবং তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
শুষ্ক থেকে সাধারণ ত্বক
ত্বক শুষ্ক হলে এর আর্দ্রতা রক্ষা করতে কিছুটা ভারী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
ট্রাম্পেটি বলেন, “উন্নত আর্দ্রতারক্ষাকারী ময়েশ্চারাইজার লোমকূপে প্রবেশ করে ময়লা ও জীবাণু বাইরে ঠেলে দেয় এবং আর্দ্রতা রক্ষা করে।”
হায়ালুরনিক অ্যাসিড, মাশরুমের নির্যাস বা গ্লিসারিন লোমকূপকে আবদ্ধ না করেও আর্দ্রতা রক্ষা করতে সহায়তা করে।
চাপ প্রয়োগ না করা
লোমকূপ পেশি নয় যে এটা বড় বা ছোট হবে। কিন্তু এর ওপরে চাপ প্রয়োগ করলে শক্ত হয়ে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বড় হয়ে যায়।
ট্রাম্পেটি বলেন, “অকারণে চাপ প্রয়োগ বা খোঁচখুঁচি করলে ত্বকের লোমকূপকে বড় করে ফেলে। তাই আমি এর থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেই। এই কাজ সাময়িকভাবে লোভনীয় হলেও দীর্ঘমেয়াদের জন্য ক্ষতিকর।
ছবির মডেল: মিথিলা। মেইকআপ: ভূবন হাওলাদার। ফটোগ্রাফার: শরিফ আহমেদ। সৌজন্যে: ত্রয়ী ফটোগ্রাফি স্টুডিও।
আরও পড়ুন