সম্পর্কে প্রতারিত হলে মনোযোগ নিজের দিকে দেওয়া উচিত।
Published : 16 Aug 2023, 03:40 PM
ভালোবাসার বন্ধন পরিবর্তিত হতে পারে। তবে প্রতারণার শিকার হলে বিশ্বাসের ভিত ভেঙে পড়ে।
অর্থাৎ সম্পর্কে প্রতারিত হওয়া মানে হল ভুল মানুষকে বিশ্বাস করা।
ভারতের সম্পর্ক-বিষয়ক পরামর্শক রুচি রুহ বিশ্বাসঘাতকতাকে ‘স্বেচ্ছায় বিশ্বাস নষ্ট করা’ হিসেবে আখ্যা দেন। এখানে সম্পর্কের মাঝে প্রতিশ্রুত প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতি নষ্ট হয়।
এই বিশেষজ্ঞ ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্বাস ঘাতকতার সহজ কিছু ধরন সম্পর্কেও জানান।
প্রতারণা: সম্পর্কে একজন যখন আরেকজনকে না জানিয়ে অন্য কারও সাথে শারীরিক বা মানসিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
অর্থনৈতিক: একজন যখন অন্যজনকে না জানিয়ে আর্থিক সম্পত্তি যেমন- সঞ্চয়, বন্ড ইত্যাদি খরচ করে বা কোথায় খরচ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে সঙ্গীকে সঠিক তথ্য না দেয়।
আপত্তিকর আচরণ: ক্ষতিকর ব্যবহার যেমন- অসম্মান, মিথ্যা বলা, প্রতারণা, তথ্য প্রকাশ না করা, নীরব আচরণ, কঠোর আচরণ এমনকি শারীরিক বা যৌন হয়রানি করে।
বিশ্বাস ভেঙে ফেলা: ব্যক্তিগত তথ্য, গোপনীয়তা, সংবেদনশীল তথ্য এমনকি ছবি বা ভিডিও অন্যের কাছে প্রকাশ করা।
যারা এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়, তারা প্রথমে নিজেকেই দোষারোপ করা শুরু করেন।
সঙ্গীর যে প্রশ্ন হতে পারে প্রতারণার পূর্বাভাস
যে কারণে সঙ্গী প্রতারণা করতে পারে
ব্যাখ্যা করে রুচি বলেন, “প্রত্যেকের উচিত নিজের আবেগ ও অনুভূতি যেমন- ব্যথা, মন খারাপ, লজ্জা, অপরাধবোধ বা সঙ্গীকে হারানোর ভয় এমনকি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা ইত্যাদি নিয়ে সঙ্গীর সাথে কথা বলা।”
সঙ্গীর সাথে অনুভূতি নিয়ে স্পষ্ট যোগাযোগ করা জরুরি। বুঝদার সঙ্গী আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে, দায়িত্ব নেয় এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সচেষ্ট থাকে।
এর কোনোটাই যদি সঙ্গীর মাঝে দেখা না দেয় তাহলে ভবিষ্যতে সম্পর্ক আগানোর বিষয়ে আরেকবার ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে।
আত্মোপলব্ধি আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সম্পর্কে জড়ানোর পরে অনেকেই নিজের ভালো থাকা খারাপ থাকাকে প্রাধান্য দেন না।
এই বিষয়ে রুচি আরও বলেন, “পুনরায় নিজের প্রতি যত্নশীল ও নিজেকের ভালোবাসা অনুশীলন যেমন- ধ্যান, যোগ ব্যায়াম, বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ ইত্যাদি ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। ফলে নিজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়।”
বিশ্বাসঘাতকের সাথে তাল মেলানো একটা ব্যক্তিগত প্রক্রিয়া।
রুচির মতে, “ক্ষমা নিজেকে শান্তি দেয় এবং ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করে। প্রতারককে ক্ষমা করার পাশাপাশি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়া সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ক্ষমা করে যদি নতুনভাবে আবার সম্পর্কে জড়ানো হয় তাহলে বাকি জীবনে ক্ষমা করার দায়িত্বভার ক্ষমাদানকারীর ওপরেই বর্তায়।”
তাই ক্ষমা করে পুনরায় সম্পর্কে জড়াতে চাইলে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখা জরুরি।
রুচির মতে, সম্পর্কে প্রতারিত হলে মনোযোগ নিজের দিকে দেওয়া উচিত।
তিনি পরাশর্শ দিতে গিয়ে বলেন, “পরিবার, বন্ধু এমনকি প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সংকোচবোধ করা যাবে না। প্রথমে খুব কঠিন মনে হলেও নিজেকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভুললে চলবে না।”
সুস্থ জীবনে ফিরে আসার ক্ষেত্রে বাইরে হাঁটতে যাওয়া, কফি খাওয়া, পছন্দের খাবার খাওয়া, যোগ ব্যায়াম বা স্ট্রেচ করা ইত্যাদি সাহায্য করবে।
ঘুমানো ও নিজেকে সতেজ রাখার চেষ্টা করতে হবে। সব মিলিয়ে নিজেকে গোছানো ও শান্ত হওয়ার জন্য সময় দেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন