Published : 29 May 2023, 03:20 PM
রং-তত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা থাকলে ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করা যায় আত্মবিশ্বাসের সাথে।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের বস্ত্র ও বয়ন শিল্প বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমিনা রাহমান বলেন, “পোশাকের রং নির্বাচন ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। পোশাক বাছাই করার ক্ষেত্রে কোন ঋতুতে, কোথায় ও কখন যাওয়া হচ্ছে তার ভিত্তিতে পোশাকের তন্তু ও রং নির্বাচন করা জরুরি।”
“নিজের ব্যাক্তিত্বের কোন দিকটা ফুটিয়ে তুলতে চান সেটা মাথায় রেখে পোশাকের রং নির্বাচন করতে হবে। চেহারায় শুভ্র ও কোমলতা ফুটিয়ে তুলতে চাইলে হালকা ও স্নিগ্ধ রং বাছাই করতে হয়। আর যদি সাহসী ও আত্মবিশ্বাসীভাব ফুটিয়ে তুলে চান তাহলে বিভিন্ন রংয়ের সংমিশ্রণ, বৈপরীত্য অথবা ধারাবাহিকতার সমন্বয় ফুটিয়ে তুলতে হবে।”
টাইমসঅবইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘অ্যাটায়ারস বুটিক’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ফ্যাশন ডিজাইনার ভাইশালি কুমার আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব প্রকাশে রং নির্বাচনের ভূমিকা ও কৌশল সম্পর্কে জানান।
ত্বকের রং সম্পর্কে ধারণা থাকা
সাহসী ও আত্মবিশ্বাসীভাবে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য রং তত্ত্ব ব্যবহার করতে হলে আগে নিজের ত্বকের রং সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।
ত্বকের রংয়ের প্রধান তিনটা ভাগ রয়েছে- উষ্ণ, শীতল ও প্রাকৃতিক।
উষ্ণ ত্বকের অধিকারীরা সাধারণত হলুদাভ বা সোনালি বর্ণের হয়ে থাকে। শীতল যাদের তাদের বর্ণ কিছুটা গোলাপি বা নীলচে এবং প্রাকৃতিক রংয়ের অধিকারীদের বর্ণ শীতল ও উষ্ণ বর্ণের মিশেলে হয়ে থাকে।
পরিপূরক রং নির্বাচন
বর্ণ চক্রের বিপরীত দুইটি রং হল পরিপূরক রং। পরিপূরক রংয়ের ব্যবহারে সাহসী ও আকর্ষণীয় ভাব তৈরি হয় যেমন- ত্বকের রং উষ্ণ হলে- হলুদ পোশাকের সঙ্গের বেগুনি আনুষাঙ্গিক নির্বাচন করা যায়।
শীতল হলে নীল পোশাকের সঙ্গে কমলা আনুষাঙ্গিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই বিষয়ে শাহমিনা রাহমান বলেন, “পরিপূরক রংয়ের ব্যবহারে সাহসীভাবের পাশাপাশি উচ্ছ্বলভাবও প্রকাশ পায়। আনন্দপূর্ণ কোনো অনুষ্ঠানে এমন সমন্বয় বাছাই করা যেতে পারে।”
মনোক্রোমাটিক রং
এর অর্থ হল একই রংয়ের বিভিন্ন শেইডের ব্যবহার। এর ব্যবহারে পরিপাটিভাব ফুটে ওঠে।
যেমন- ত্বকের রং উষ্ণ হলে হলুদ পোশাকের সঙ্গে সরিষা রংয়ের জুতা ও তামাটে রংয়ের ব্যাগ ব্যবহার করা; শীতল রংয়ের অধিকারীরা নীল পোশাকের সঙ্গে হালকা নীল রংয়ের জুতা ও নেভি ব্লু রংয়ের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারে।
অধ্যাপক শাহমিনার মতে, “মনোক্রমিক রং ব্যবহারে রংয়ের বৈসাদৃশ্য এড়িয়ে খুব সহজেই সরল ও সাধারণ ও স্নিগ্ধভাব ফুটিয়ে তোলা যায়।”
মিশ্র ও মিলিত রং
মিশ্র ও মিলিত রং ব্যবহারে সাহসী ও স্বতন্ত্রভাব ফুটিয়ে তোলা যায়। বর্ণচক্রের পাশাপাশি থাকা যে কোনো দুটি রং বাছাই করার মাধ্যমে এই সমন্বয় তৈরি করতে হয়।
যেমন- ত্বকের রং উষ্ণ হলে লাল রংয়ের পোশাকের সঙ্গে কমলা রংয়ের জুতা ও হলুদ ব্যাগ ব্যবহার করা যায়। আবার ত্বকের রং শীতল হলে সবুজ রংয়ের পোশাকের সঙ্গে নীল জুতা এবং বেগুনি রংয়ের ব্যাগ ব্যবহার করা যায়।
“নিজেকে সম্পুর্ণ ভিন্নভাবে ও সকলের চেয়ে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে চাইলে পাশাপাশি অবস্থান করা দুটি রং বাছাই করা যেতে পারে। এটা অনুরূপ রং হিসেবে পরিচিত। এমন সমন্বয় করতে তিন থেকে ছয়টি পর্যন্ত রং বাছাই করা যায়,” বলেন শাহমিনা রাহমান।
রংয়ের মনোবিজ্ঞান
মানুষের আবেগ ও আচরণকে প্রভাবিত করে রং। নিজেকে সাহসী ও আত্মবিশ্বাসীভাবে উপস্থাপন করতে রং মনোবিজ্ঞানের প্রয়োগ ঘটানো যায়।
যেমন- লাল রং শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক, হলুদ আনন্দ ও আশাবাদের প্রতীক। তাই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করতে লাল পোশাক বা হলুদ রংয়ের টপ বাছাই করা যায়।
রং তত্ত্বের ধারণা বর্ণচক্র থেকে নিজের ত্বকের রংয়ের ধরন অনুযায়ী সঠিক রং বাছাই করে সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করে।
পরিপূরক রং, একরঙা রং, মিশ্রিত ও মিলিত বা অনুরূপ রং এবং রং মনোবিজ্ঞানের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিজেকে সবার চেয়ে যেমন আলাদাভাবে উপস্থাপন করা যায় একইভাবে দর্শন উজ্জ্বলতা বাড়ানো যায়।
নিজের জন্য সঠিক রং নির্বাচন নির্ধারন করতে বিভিন্ন রং নিয়ে খেলা করা বা পরীক্ষা করা ভালো উপায়।
আরও পড়ুন