খাবারে কৃত্রিম রং কি খারাপ?

রঙিন খাবার দেখতে বেশ লাগে। তবে পেটের ভেতর সেই রং কী করে, কে জানে!

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2022, 11:41 AM
Updated : 16 Sept 2022, 11:41 AM

‘ফুড কালার’য়েও কারও কারও সমস্যা হতে পারে।

খবরে অনেক সময় প্রকাশ প্রায়, নির্ধারিত খাবার রং না মিশিয়ে সাধারণ রং মেশানো হচ্ছে। ভেজালের এই যুগে অতিরিক্ত মুনাফার জন্য অসাধুদের এই কাজ থেকে রেহাই পেতে ভালো দোকান থেকে হয়ত খাবার কিনছেন।

তবে ‘আসল খাবার রং’ ব্যবহার করলেও কি রেহাই মিলবে?

খাদ্য-বিশেষজ্ঞদের এই বিষয়ে নানান মত রয়েছে। আছে পরস্পর বিরোধী গবেষণা।

প্যাকেট ও বোতল-জাত খাবার কেনার সময় খেয়াল করলে দেখা যাবে- এসবের গায়ে লাল ৪০, হলুদ ৫ এবং বাকি হলুদ ৬ সমৃদ্ধ রঞ্জক দেওয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সত্যি বলতে- এই তিন রংয়ের মিশ্রণেই খাবার বর্ণিল করা যায়। দেখতেও লাগে আকর্ষণীয়।

খাদ্য রঞ্জক এবং রং সব সমানভাবে তৈরি করা হয় না। আর কিছু দেশ নির্দিষ্ট রং ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অন্যান্য দেশে সেগুলো হয়ত নিষিদ্ধ থাকে। 

উদাহরণ দিতে গিয়ে ‘ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ মেলিসা রিফকিন বলেন, “যেমন- ‘গ্রিন নম্বর থ্রি’ যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’ থেকে অনুমোদিত। ফলে সেই দেশে এই রং ব্যবহার করা গেলেও ইউরোপে সেটা নিষিদ্ধ।”

আবার ইউরোপেও এরকম অনেক রং নিষিদ্ধ করা আছে যা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহার করা হয়।

নিউ ইয়র্ক’য়ের এই পুষ্টিবিদ আরও জানান, খাবার রঙিন করতে প্রাকৃতিক রং হিসেবে ব্যবহার করা হয় ‘বেটা ক্যারোটিন’ এবং ‘বিট’য়ের রঞ্জক। এছাড়া বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় এরকম অধিকাংশ রঞ্জকই পেট্রোলিয়াম ভিত্তিক।

খাদ্য-রঞ্জক সম্পর্কিত দাবীগুলোর মধ্যে একটি হল, রঞ্জকের প্রতি সংবেদনশীলদের এসব খাবার গ্রহণে ‘হাইপারঅ্যাক্টিভিটি’ বা অতিরিক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হতে পারে। যদিও অনেক গবেষণায় এর প্রমাণ মেলেনি।

আবার কিছু গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, খাবারে কৃত্রিম রং মনোযোগের ঘাটতি ও ‘হাইপার অ্যাক্টিভিটি’ তৈরি করতে পারে।

তবে এফডিএ’র মতে, খাদ্য রঞ্জককে অনিরাপদ মনে করার যথাযথ কোনো প্রমাণ নেই। আর কৃত্রিম খাবার রং শরীরের জন্য এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে কি-না তা জানতে আরও গবেষণায় প্রয়োজন রয়েছে।

খাবার রং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে কি-না তা জানার পাশাপাশি রংগুলোতে পাওয়া যেতে পারে এমন দূষকগুলোর বিষয়েও উদ্বেগ রয়েছে।

মেলিসা বলেন, “বেনজিডিন’, হচ্ছে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী এজেন্ট, যা লাল ৪০, হলুদ ৫ এবং হলুদ ৬-এ পাওয়া যেতে পারে। যদিও এই দূষকটির পরিমাণ এই রঞ্জকগুলোতে যথেষ্ট কম বলে মনে করা হয়, তবে তা কতটা সত্য সেটা ভাববার বিষয়।” 

কৃত্রিম রংয়ের কারণে দেখা দিতে পারে অ্যালার্জির সমস্যা। সুইডেনের ‘ইউনিভার্সিটি হসপিটাল, উপসালা’র চর্মরোগ-বিভাগের করা গবেষণায় দেখা গেছে- হাঁপানি, আমবাত ইত্যাদি রোগের জটিলতা খাবারের কৃত্রিম রংয়ের কারণে হতে পারে।

এছাড়াও যাদের আমবাত ও ফোলাভাবের সমস্যা রয়েছে তাদের ওপরে এই রং বা রঞ্জকের প্রতিক্রিয়া গুরুতর হতে পারে বলে জানা যায় গবেষণা থেকে।

আরও পড়ুন

Also Read: কিছু সাধারণ খাবারের অদ্ভুত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

Also Read: যেসব খাবারের বাড়তি অংশ খাওয়া নিরাপদ না

Also Read: চুলের রং থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি