খাবার থেকেও টেস্টোস্টেরন বাড়ানোর পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
Published : 22 Jun 2023, 06:32 PM
শুধু যৌন আকাঙ্ক্ষা তৈরিতে নয়, পেশি গঠনেও ভূমিকা রাখে টেস্টোস্টেরন হরমোন।
এছাড়া হাড়ের ভর, চর্বির ভারসাম্যতা রক্ষা এবং রক্ত কোষ ও শুক্রানু উৎপাদনেও প্রভাব রাখে। এই হরমোন পেশির ভর ও শক্তিকে প্রভাবিত করে।
দ্যা ফার্স্ট টাইম মম’স প্রেগনেন্সি কুকবুক’, ‘দ্যা সেভেন ইনগ্রিডিয়েন্স হেলদি প্রেগনেন্সি কুকবুক’ এবং ‘ফুয়েলিং মেইল ফার্টিলিটি’ বইয়ের মার্কিন লেখক ও নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ লরেন মানাকার বলেন, “টেস্টোস্টেরন কেবল পুরুষ হরমোন না। নারীদেরও স্বাভাবিক মাত্রায় টেস্টোস্টেরন থাকে। আর এই মাত্রা কমে গেলে হাড়ের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়, ‘লিবিডো’ হ্রাস পায় এবং রজঃচক্রে অনিয়ম দেখা দেয়।”
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও জানান, ব্যক্তির টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নানান বিষয় যেমন- স্থূলতা, নির্দিষ্ট ওষুধ, থাইরয়েডের কার্যকারিতার নিম্ন মাত্রা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে।
এছাড়াও, খাদ্যাভ্যাস টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় প্রভাব রাখে। কিছু খাবার সরাসরি টেস্টোস্টেরনের ওপরে প্রভাব না রাখলেও খাবার তালিকায় তা যোগ করার মাধ্যমে উপকার পাওয়া যায়।
কম চর্বির খাবার, উচ্চ প্রোটিন এবং ভাজাপোড়া খাবার টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে প্রদাহরোধী খাবার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে ইতিবাচক সাড়া দেয় এমন কয়েকটি খাবার হল-
কুমড়ার বীজ: জিংকের প্রাকৃতিক উৎস যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে অবস্থিত, ‘ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের করা গবেষণায় দেখা গেছে, জিংক স্বল্পতায় বয়স্ক ব্যক্তিকে ছয় মাস জিংক সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার পর তার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা দ্বিগুন হয়।
টেক্সাসে অবস্থিত ‘এক্সারসাইজ অ্যান্ড স্পোর্ট নিউট্রিশন ল্যাব’য়ের আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, আট সপ্তাহ ধরে যেসব কলেজ ফুটবল খেলোয়াড় রাতে জিংক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন, তাদের টি লেভেল বৃদ্ধি ও পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
আদা: এই মসলাতেও আছে জিংক। আদা অণ্ডকোষে অক্সিডেটিভ চাপ কমায়, নির্দিষ্ট অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এঞ্জাইমের কার্যকারিতা বাড়ায়, রক্তের শর্করা স্বাভাবিক রাখে, নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। এসব বিষয় টেস্টোস্টেরনে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
ডালিমের রস: প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জ পলিফেনল যৌগ সমৃদ্ধ এই ফলের রস, যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।
দুধ: আছে ১৩টি অত্যবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান যার মধ্যে একটি কম পরিচিত, বোরন।
এটা পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায় বলে প্রমাণ মিলেছে, ইসরায়েলের আরিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের করা গবেষণায়।
দুধের চর্বি এড়াতে চাইলে শুকনা ও রান্না করা মটর, আলুবোখারা, আলু ও সবজি থেকেও বোরন গ্রহণ করা যায়।
স্যামন: ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস এবং সেলেনিয়াম’য়ের মতো প্রচুর পরিমাণে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিকারক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
ব্রাজিলের ‘নর্থ ফ্লুমিনেন্স স্টেট ইউনিভার্সিটি’ ও ইতালির ‘ইউনিভার্সিটি অফ পাজুয়া’র যৌথভাবে করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষরা ৯০ দিনের জন্য সম্পূরক স্যামন তেল গ্রহণ করার ফলে তাদের টেস্টোস্টেরণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন