সব ধরনের পুষ্টি উপাদান শুধু উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে মেটানো সম্ভব নয়।
Published : 25 Dec 2022, 06:21 PM
বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত হতে পারেন শুধু উদ্ভিজ্জ খাবার খেলে।
উদ্ভিজ্জ খাবার বেছে নেওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কারও মাংসে অ্যালার্জি, কেউ আবার শারীরিক বা সেচ্ছায় প্রাণিজ খাবার খাওয়া বাদ দেন।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, শুধু উদ্ভিজ্জ খাবার এমনকি মাংসের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য প্রোটিনের উৎস যেমন- সয়া বা মটর থেকেও সব পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে না।
নিউট্রিয়েন্টস সাময়িকীতে প্রকাশিত সুইডেনের ‘চামার্জ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি’র করা এই গবেষণায় ৪৪টি ভিন্ন ধরনের মাংসের বিকল্প খাবার পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এর মধ্যে সয়া ও মটর ধরনের খাবারের পাশাপাশি গাঁজানো পদ্ধতিতে সয়া দিয়ে তৈরি খাবারও ছিল।
গবেষকরা দেখতে পান, মাংসের বিকল্প এসব খাবারে যেমন নানান ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমনি পুষ্টি-রোধী উপাদান ‘ফাইটেইটস’য়ের কারণে লৌহ ও জিঙ্ক দেহে শোষিত হয় খুবই কম পরিমাণে।
পুষ্টির অভাব ঘটাতে পারে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন
“সব প্রোটিন একভাবে তৈরি হয় না”, বলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ও লিভিং ডটফিট’য়ের পুষ্টিবিষয়ক পরামর্শদাতা ক্যাথরিন জার্ভাসিও।
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “মাংসের তুলনায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে চর্বি, কোলেস্টেরল ও ক্যালরি কম থাকে। তবে এই গবেষণায় দেখা গেছে কিছু উপাদানের ঘাটতিও রয়েছে।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “মাংসের বিকল্প মানে উদ্ভিদ। আর উদ্ভিজ্জ উপাদানে প্রাকৃতিক ভাবেই ‘ফাইটেইটস’ থাকে যা ফসফরাস সঞ্চিত করার মাধ্যমে তাদের বংশবৃদ্ধি ও বেড়ে ওঠাতে সাহায্য করে। উদ্ভিদের জন্য উপকারী হলেও এটা পুষ্টি-রোধী উপাদান হওয়াতে কিছু পুষ্টি শোষণে বাধা দেয়। এরমধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক ও লৌহ।”
যা খাওয়া উচিত
জার্ভাসিও বলেন, “যদিও দেখা গেছে সয়া দিয়ে গাঁজানো পদ্ধতিতে তৈরি খাবার পুষ্টি উপাদান শোষণে সমস্যা করে না। কারণ গাঁজানো প্রক্রিয়াতে ‘ফাইটেইটস’ ভেঙে যায়। তারপরও আমি বলবো, প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের সুষম গ্রহণই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।”
প্রাণিজ প্রোটিনে কোলেস্টেরল ও চর্বি থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহ এবং জিঙ্গ পাওয়া যায়, সেগুলো দেহের জন্য উপকারী। অন্যদিকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকে লৌহ ও জিঙ্ক না পেলেও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে ও কম ক্যালরি গ্রহণে ভূমিকা রাখে।
তাই জার্ভাসিও পরামর্শ দেন, “যারা এরপরও শুধু উদ্ভিজ্জ খাদ্যাভ্যাস চালিয়ে যেতে চান তাদের উচিত হবে পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করা। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মেটাতে তারা যেমন সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দিতে পারবে, তেমনি প্রয়োজনে ‘সাপ্লিমেন্ট’ গ্রহণে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারে।”
আরও পড়ুন
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড