উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড

দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড প্রাণিজ ছাড়াও উদ্ভিজ্জ খাবার থেকেও পাওয়া যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2022, 07:32 AM
Updated : 14 April 2022, 07:32 AM

সুস্বাস্থ্য ‍ও দীর্ঘায়ুর জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আসা খাবার খাওয়া পরামর্শ দেন। তবে উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে একটি ‍গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া সম্ভব নয়। তা হল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড।

চর্বিযুক্ত মাছ যেমন- স্যামন, ম্যাকারেল ইত্যাদি থেকে এই উপাদান মেলে।

ওমেগা থ্রি’য়ের প্রদাহনাশক বৈশিষ্ট্য আর হৃদযন্ত্র ও জ্ঞানীয় সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার গুণাগুণের কল্যাণে অনেক বিশেষজ্ঞ দাবি করেন এটি মানুষকে দীর্ঘায়ু দিতে সক্ষম। তবে এই উপাদান মানুষ খুব স্বল্প মাত্রায় গ্রহণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘হার্বালাইফ নিউট্রিশন’য়ের বিশ্বব্যাপি পুষ্টি-বিষয়ক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক পুষ্টিবিদ সুজ্যান বোয়ারম্যান বলেন, “এই পুষ্টি উপাদান মানুষ তার নিজের শরীরে তৈরি করতে পারে না। তাই ভোজ্য উৎস থেকে এর সরবরাহ নিশ্চিত করা ছাড়া উপায় নেই।”

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “কোষের ঝিল্লি তৈরির অন্যমত প্রধান উপাদান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। পাশাপাশি এটি তৈরি করে সংকেতবাহী ‘মলিকিউল ইকোস্যানয়েড’স যা হৃদযন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র এবং ‘এন্ডোক্রাইন সিস্টেম’কে প্রভাবিত করে। চোখ ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্যও ওমেগা থ্রি জরুরি।”

বোয়ারম্যান আরও জানান, “কয়েক ধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। ‘আলফা লিনোলিক অ্যাসিড (এএলএ) পাওয়া যায় তিশির তেল, সয়াবিন তেল, ‘ক্যানোলা অয়েল’, ‘চিয়া সিডস’, বাদাম ইত্যাদি উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে। ‘ডোকাসাহেক্সানয়িক অ্যাসিড (ডিএইচএ)’ এবং ‘আইকোসাপেন্টাইনোয়েক অ্যাসিড (ইপিএ)’ পাওয়া যায় মাছ, মাছের তেল ও ‘ক্রিল অয়েল’য়ে। ”

তাহলে যারা উদ্ভিদভোজি তারা কি শুধুই এএলএ পাবে, বাকি দুটো পাবে না?

যুক্তরাষ্ট্রের স্বনদস্বীকৃত পুষ্টিবিদ ক্যাথি সেগাল বলেন, “ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ মেডিসিন’য়ের ‘ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ড’য়ের মতে, ১৯ বছর বা তার বেশি বয়সের একজন স্বাস্থ্যবান পুরুষের প্রতিদিন দরকার ১.৬ গ্রাম ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই বয়সের একজন স্বাস্থ্যবান নারীর দৈনিক প্রয়োজন ১.১ গ্রাম। গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করতে হবে ১.৪ গ্রাম আর স্তন্যদান করার সময় দরকার ১.৩ গ্রাম ওমেগা থ্রি।”

তিনি আরও বলেন, “সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হলো ‘ডিএইচএ’ আর ‘ইপিএ’ যা পাওয়া মাছ ও সামুদ্রিক খাবারে। এএলএ উদ্ভিজ্জ উৎসের হওয়ায় তা সহজলভ্য। একে শরীর সামান্য পরিমাণে ‘ডিএইচএ’ ও ‘ইপিএ’তে পরিবর্তন করে নিতে পারে।”

“তারপরও ‘ডিএইচএ’ আর ‘ইপিএ’য়ের ঘাটতি রয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সামুদ্রিক উদ্ভিজ্জ খাবার খেতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ‘অ্যালজি অয়েল সাপ্লিমেন্ট’ গ্রহণ করতে পারেন।”

মোদ্দাকথা, উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের চাহিদা পুরোপুরি মেটানো সম্ভব। তবে সব ধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের সববরাহ হল কি-না সেটা নিশ্চিত করতে ঝক্কি একটু বেশি পোহাতে হবে।

তাই যারা বিন্দুমাত্র মাছ খান না তাদের ‘সি উইড’, ‘কেল্প’ ও অন্যান্য সামুদ্রিক উদ্ভিদ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন