ছোলা থেকে পূর্ণ পুষ্টি পেতে কাঁচা খাওয়াই ভালো।
Published : 27 Mar 2023, 05:23 PM
কেবল খেতেই সুস্বাদু নয় ছোলাতে রয়েছে নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা।
নির্দিষ্ট কোনো মাসেই নয়, সারা বছর ছোলা খেয়ে নানান পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব।
‘নোমাদিস্তা নিউট্রিশন’য়ের কর্ণধার লস অ্যাঞ্জেলেস’য়ের পুষ্টিবিদ মাশা ডেভিস বলেন্ রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “ছোলা অসাধারণ খাবার। এটা ভেষজ প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন ও খনিজের ভালো উৎস।”
সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে ডেভিস, যতটা সম্ভব তাজা ছোলা খাওয়ার পরামর্শ দেন। অর্থাৎ শুকনা বা টিনজাত ছোলা শরীরের জন্য উপকারী। তবে টিনজাত ছোলা রান্না করার আগে, এতে থাকা বাড়তি লবণ বা সংরক্ষক ধুয়ে রান্না করতে হবে।
তবে ভেজানো কাঁচা ছোলা থেকে মিলবে বেশি উপকার।
ছোলার পুষ্টিগুণ
ভেষজ প্রোটিনের ভালো উৎস: পেশি পুনর্গঠন থেকে শুরু করে হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি বেলার খাবার অথবা নাস্তায় ছোলা খাওয়া প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।
প্রতি এক আউন্স ছোলাতে তিন গ্রাম প্রোটিন থাকে। এতে মেথিওনিন ছাড়া প্রায় সব ধরনের অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। যে কারণে ছোলাকে উচ্চ মান সম্পন্ন ভেষজ প্রোটিনের উৎস বলা হয়।
আঁশ সম্পন্ন: ছোলাতে প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে উন্নত মানের আঁশ। প্রতি এক আউন্স ছোলাতে দুই গ্রাম আঁশ থাকে, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে।
প্রোটিন এবং আঁশ একসঙ্গে হজমে খুব ভালো কাজ করে। আর পেট ভরা রাখতে ভূমিকা রাখে।
ছোলার নিম্ন ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: কোনো খাবার খাওয়ার পরে রক্তের শর্করা যত দ্রুত বৃদ্ধি পায় তার পরিমাপ করা হয় ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাধ্যমে।
ছোলাতে এর মাত্রা কম, স্কেলে এর মাত্রা ২৮। ছোলা উচ্চ প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ হওয়াতে এটা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
২০০৮ সালে ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ার ‘ইউনিভার্সিটি অফ তাসমানিয়া’র করা গবেষণায় দেখা গেছে যারা সপ্তাহে ৭২৮ গ্রাম ছোলা খান তাদের অনাহারের সময়ে ইনসুলিনের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটি’, ‘দি ওহিয়ো স্টেইট ইউনিভার্সিটি কলাম্বাস’ ও ‘আটলান্টা নিউট্রিশন কমিউনিকেইশন’য়ের করা সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু কার্বোহাইড্রেইট গ্রহণের পরিবর্তে এর সঙ্গে ছোলার তৈরি হামাস যোগ করে খাওয়ার ৪৫ মিনিটের মধ্যে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সহায়তা করছে।
লৌহের চাহিদা পূরণ করে: এক কাপ ছোলাতে ৪.৭ মি.লি. গ্রাম লৌহ, ২.১ মি.গ্রা. ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যা দেহে লৌহের ঘাটতি পূরণ ও শোষণে সহায়তা করে।
‘রেড মিট’ ও ‘শেলফিশ’সহ নির্দিষ্ট কিছু মাংস, মাছ উচ্চ লৌহ সমৃদ্ধ, যা লৌহের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। যারা এসব খাবার থেকে বিরত থাকেন তাদের দেহে দৈনিক ১৮ মি.লি. গ্রাম লৌহের ঘাটতি দেখা দেয়।
লৌহের ঘাটতি রক্ত শূন্যতা, দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব সৃষ্টি করে। সালাদে ছোলা, মটর বা হামাসের ওপরে মরিচ ছিটিয়ে খাওয়া লৌহের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।
হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে: প্রোটিন ও আঁশের পাশাপাশি ছোলাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি শক্তিশালি ভিটামিন ও খনিজ। যেমন ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম।
প্রদাহের কারণে হৃদরোগ হয়; এসব খনিজ প্রদাহ কমাতে ভূমিকা রাখে। আর পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান: ছোলাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি ও সেলেনিয়াম যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ছোলা খাওয়ার সময়ে বিউটোরেইট নামক ‘শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড’ তৈরি করে দেহ, যা অসুস্থ ও মৃত কোষ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
এতে রয়েছে ভোজ্য বায়ো-অ্যাক্টিভ যৌগ লাইকোপিন, বায়োকানিন এ এবং সাপোনিন্স- এগুলো নানান ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুন: