শীতকাল তার দাপট হারাচ্ছে ক্রমেই, প্রভাব পড়ছে শীতের পোশাকের বাজারেও।
Published : 30 Jan 2020, 05:45 PM
উপভোগ্য আবহাওয়ার পাশাপাশি ফ্যাশনের দিক থেকেও শীত ঋতু যেন সোনায় সোহাগা। বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট, সোয়েটার, স্যুট, ব্লেজার, টুপি, মাফলার, হুডি, চাদর ইত্যাদিতে রাজপথ যেন ফ্যাশন শো’য়ের মঞ্চে পরিণত হয়। শীতের শেষ প্রান্তে এসেও বাজারে শীতের কাপড়ের কমতি নেই, সঙ্গে আছে মুল্যছাড়ের পসরা।
কমদামে বিভিন্ন মানের শীতের কাপড় কেনার জন্য রাজধানীর নিউ মার্কেটের এলাকার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া মুশকিল সব শপিং সেন্টারের জন্যই। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার জন্যই পছন্দসই শীতের পোশাক সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাবে এই অঞ্চলে। ভালো পোশাক খুঁজে নেওয়ার দক্ষতা থাকলে বঙ্গবাজারও কেনাকাটার জন্য বেশ সাশ্রয়ী।
নিউ মার্কেটে শীতের কাপড়ের কমতি নেই। তবে ক্রেতার ভীড় আগেকার মতো থাকলেও শীতের পোশাকের ক্রেতা খুবই সামান্য। ফুটপাথের ভ্রাম্যমান দোকান থেকে শুরু করে জাকজমকপূর্ণ বড় দোকান পর্যন্ত সবখানেই শীতের কাপড় ঝুলছে। তবে ক্রেতাদের তাতে মনযোগ নেই। ফলে বিক্রেতারাও অল্প দামেই ছেড়ে দিচ্ছেন।
নুরজাহান মার্কেটের দোকানি সাদেক হোসেন বলেন, “শীতের শুরুতে হুডি বিক্রি করেছি সর্বনিম্ন আটশ টাকায়। এখন চারশ থেকে পাঁচশ হলেও ছেড়ে দিচ্ছি। জ্যাকেট দেড় হাজারের নিচে দাম বলায় অনেক ক্রেতা ফিরিয়ে দিয়েছি, বিক্রিও কম হয়নি। তবে অনেক পোশাক এখনও রয়ে গেছে। তাই এক হাজার বারোশ টাকাতেই বিক্রি করে দিচ্ছি।”
ক্যাটস আই’তে চলছে ৩০ শতাংশ মূল্যছাড়। রিচম্যান দিচ্ছে ৫০ শতাংশ। টুয়েলভ’য়ে চলছে ৭০ শতাংশ। সেইলর’য়ে ৪০ শতাংশ। অকাল্টস’য়ে ৫০ শতাংশ। ‘এক্সটেসি’তে ৪০ শতাংশ। ‘ইয়েলো’তে ৫০ শতাংশ। ‘ইনফিনিটি মেগা মল’য়ে ৫০ শতাংশ। প্রায় সকল ফ্যাশন ঘরেই চলছে শীতের পোশাকে মূল্যছাড়। তাই নামিদামি ফ্যাশন ঘরগুলোর শীতের পোশাক যারা গলাকাটা দাম দিয়ে কিনতে চাননি, তাদের জন্য এখনই সুবর্ণ সুযোগ।
আরেকটা ভালো উপায় হবে বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক ও অন্যান্য বড় শপিং মলগুলো। যেখানে একজায়গায় সব ফ্যাশন ঘরগুলো ঘুরে ফেলতে পারবেন।
বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে করে বিক্রি হওয়া শীতের পোশাকগুলোও আজকাল আর ফেলনা নয়। বিশেষ করে এসব ভ্যানে থাকা ‘প্যারাসুট’ কাপড়ের ‘উইন্ড ব্রেকার’ আর ঘরে পরার ‘ট্রাউজার’য়ের বিক্রি চোখে পড়ার মতো।
‘উইন্ড ব্রেকার’ কিনতে নুন্যতম তিনশ টাকা গুনতে হয় সব ঋতুতেই। সেখানে ভ্যান থেকে একশ থেকে দুইশ টাকাতেই ভালোমানের পণ্য পাওয়া যায়। তবে একটু সময় নিয়ে এবং তীক্ষ্ণ চোখে খুঁজতে হবে। কপাল ভালো হলে জিন্সের জ্যাকেটও মিলতে পারে।
চামড়ার জ্যাকেট কেনার জন্য এখনকার থেকে ভালো সময় হয়না। ফ্যাশন ঘরগুলোতে ছাড় তো চলছেই, পাশাপাশি হাজারিবাগ এলাকাতেও দামাদামি করে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্যাকেট কেনা যাবে।
সজীব লেদার হাউজের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ মুজাহিদ বলেন, “জ্যাকেট বানিয়ে নিতে সর্বনিম্ন খরচ পড়ে মজুরিসহ আট থেকে নয় হাজার টাকা। ‘রেডিমেইড’গুলোর মধ্যে ভালোমানের চামড়ার জ্যাকেট কিনতেও এমনটাই খরচ পড়ে। তবে শীতের শেষ সময়ে ‘রেডিমেইড’ জ্যাকেটগুলোর দাম কমিয়ে এনেছি সর্বনিম্ন পাঁচ হাজারে।
সামনের শীতের জন্য উষ্ণ কাপড়ের সংগ্রহ বাড়াতে এই সুযোগ কাজে লাগানো যেতেই পারে।