বয়সের আগে মস্তিষ্ক বয়স্ক হওয়ার লক্ষণ

মেজাজের ঘন ঘন ওঠা-নামা বা ‘মুড সুইং’ বেশি ঘটার কারণ হতে পারে মস্তিষ্ক দ্রুত বুড়ো হচ্ছে। 

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2023, 12:49 PM
Updated : 22 May 2023, 12:49 PM

বয়স বাড়ার সঙ্গে যেসব বিষয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয় সেগুলো মধ্যে একটি হল জ্ঞানীয় পতন।

যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’ ও ফ্রান্সের ‘সেন্টার ফর রিসার্চ ইন এপিডেমিওলজি অ্যান্ড পপুলেইশন হেল্থ’য়ের যৌথভাবে করা গবেষণা অনুসারে- বোঝার ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি কমা ও যুক্তি খণ্ডণের ক্ষমতা- মাঝ বয়সে মানে, প্রায় পঁয়তাল্লিশের শুরু থেকে হ্রাস পায়।

এটা বয়স বাড়ার স্বাভাবিক লক্ষণ। তবে কিছু লক্ষণ আছে যা এর মাত্রাতিরিক্ততা ও ক্ষতিকর দিক ইঙ্গিত করে।

ইটদিস নটদ্যাট ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক’য়ের ইন্টার্নাল মেডিসিনের চিকিৎসক ও ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘রো’র ‘মেডিকেল কনটেন্ট’য়ের পরিচালক মাইক বোল বলেন, “কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ দেখে বোঝা যায় দেহের বয়সের তুলনায় মস্তিষ্কের বয়স বেশি হচ্ছে। ফলে জ্ঞানীয় ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।” 

এমন পাঁচটি লক্ষণ ও এক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে জানান তিনি।

বোল বলেন, “বয়স বাড়ার সঙ্গে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কিছু অংশ সংকুচিত হয়। যার সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষ ও অন্যান্য অংশের সংযোগ থাকতে পারে যেমন- ‘মাইক্রোভাস্কুলার ডিজিজ’ বা বিভিন্ন জ্ঞানীয় কার্যক্রম অন্যান্য রোগের সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিচিতি লাভ করে থাকে।”

“যদি, জ্ঞানীয় দক্ষতা খুর তাড়াতাড়ি ও অপ্রত্যাশিত মাত্রায় হয়ে থাকে তাহলে এর অর্থ পারে অন্য কোনো অভ্যন্তরীণ সমস্যা, যার সমাধান করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে। অনেক সময় পুষ্টির চাহিদা পূরণ বা অন্যান্য কোনো পন্থা অবলম্বনে মাধান করা যায়।”

ভারসাম্য বোধ হারানো

নমনীয়তা ও শক্তির ভারসাম্য দুইটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া হেল্থ’য়ের করা গবেষণা অনুযায়ী দেহ সোজা রাখার জন্য দুটোই দরকারী।

গবেষণায় দেখা গেছে, ভারসাম্য হ্রাস পাওয়া শুরু করে বয়স পঞ্চাশের পরে মধ্য বয়স থেকে।

বোলের মতে, “পেশির ভর হ্রাসের কারণেও ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সেটা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাড়ানো যায়। ভারসাম্যহীনতাও মস্তিষ্কের জন্য লাল পতাকা নির্দেশ করে।” 

চলাচলে সমস্যা ও সমন্বয়বোধ হ্রাস

‘লাল পতাকা’ চিহ্নিত আরেকটি লক্ষণ হল চলাচলে সমস্যা দেখা দেওয়া আর সমন্বয়বোধ কমে যাওয়া।

নিজের নড়াচড়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ‘সূক্ষ্ম নড়াচড়া’ করার ক্ষমতা সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে।

যুক্তরাজ্যের ‘সোশ্যাল কেয়ার ইন্সটিটিউট ফর এক্সিলেন্স’য়ের তথ্যানুসারে, স্মৃতিভ্রংশের কিছু সাধারণ প্রাথমিক বিপজ্জনক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে সমন্বয় ও স্বীকৃতি হারানো, বিভ্রান্তি, স্মৃতিশক্তির সমস্যা ও যোগাযোগ দক্ষতা কমা।

শব্দ ভুলে যাওয়া বা কোনো ঘটনা মনে করতে না পারা

ডা. বোল বলেন, “মাঝে মধ্যে প্রয়োজনীয় শব্দ ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এটা যদি ঘন ঘন হয়ে থাকে তাহলে আলাদা করে বিবেচনা করার প্রয়োজন রয়েছে।”

অতীতের ছোটখাট ঘটনা ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি হারানো বা স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি তৈরিতে অক্ষমতা দেখা দেয়, তাহলে হতে পারে তা মস্তিষ্কের অবক্ষয়ের লক্ষণ।

প্রতিদিনের কাজে জটিলতা

দৈনন্দিন কাজ করতে অনুপ্রেরণা না পাওয়া স্বাভাবিক। তবে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন যেমন- চেকবুক লেখা বা বিল পরিশোধ করার মতো কাজ করতে যদি সাধারণের চেয়ে বেশি শ্রমসাধ্য বা ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে হয় তাহলে এই বিষয়ে বাড়তি নজর রাখার প্রয়োজন আছে।

মুড সুইং দেখা দেয়া

ডা. বোল বলেন, “মস্তিষ্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল মন মেজাজ বুঝতে পারা ও নিয়ন্ত্রণ করা।”

সাধারণ জীবনযাত্রা মেজাজে পরিবর্তন আনতে পারে।

তবে হঠাৎ করে অনুভূতি ও আচরণের পরিবর্তণ দেখা দিলে সে বিষয়েও সচেতন হতে হবে। অপ্রত্যাশিতভাবে মেজাজ পরিবর্তন বিষয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে খোলামেলা পরামর্শ করা উচিত।

আরও পড়ুন

Also Read: মস্তিষ্ক দ্রুত বুড়ো হচ্ছে যেসব খাবারে

Also Read: বেশি বয়সে হাঁটাহাঁটিতে যে ভুল করা যাবে না

Also Read: খাদ্যাভ্যাস যখন দ্রুত বয়স বাড়ায়