নিজে করা আর পেশাদার হাতে করা ফেইশলের মধ্যে পার্থক্য থেকেই যায়।
Published : 03 Jan 2024, 11:53 AM
দক্ষ হাতে ফেইশলের পরে ত্বক পরিচর্যার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষ বুঝতে পারে এবং অনেকেই ত্বকের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হয়।
পেশাদার ফেইশলের পরে ত্বকের নানান সমস্যা দূর হয়। চোখে ধরা পড়েনি এমন অনেক অসামঞ্জস্যতাও হারিয়ে যায়। ফলে ত্বক দেখতে অনেক বেশি টানটান, মসৃণ ও উজ্জ্বল লাগে।
তবে যত্ন নিতে ঠিক কতদিন পরপর ত্বকের পরিচর্যা বা দক্ষ ফেইশল করাতে হবে সে সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকে খুব খুব ঘন ঘন ফেইশল করেন এতে ত্বকের ক্ষতি হয়।
কত দিন পর পর ফেইশল করা উচিত?
সাধারণত, ত্বকের ধরন বুঝে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর পর ফেইশল করা উচিত।
কারণ ত্বকের কোষের পুনর্গঠন হতে বা নতুন কোষ গজাতে প্রায় চার সপ্তাহের মতো সময় লেগে যায়।
রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘ইনডার্মা স্টুডিও’র সৌন্দর্যবিশেষজ্ঞ এবং প্রতিষ্ঠাতা নিকেল টেম্পল বলেন, “ত্বকের বিশেষ কোনো সমস্যা যেমন- ব্রণ, অকালে বয়সের ছাপ অথবা হাইপার পিগমেন্টেইশন হলে সাধারণত ঘন ঘন ফেইশল অর্থাৎ, দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর পর করার প্রয়োজন পড়তে পারে। কারণ এগুলোর বাড়তি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যখন সামনে কোন বড় অনুষ্ঠান থাকে তখন আমি একসাথে সর্বাধিক ভালো ফলাফলের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিসেবার পরিকল্পনা করে থাকি যেমন- ‘লিফটিং’, ‘এক্সফলিয়েশন’ এবং ‘ডিপ ক্লিনিং’। আর যখন খুব বেশি চাপ প্রবল দিন কাটে তখন কিছুটা আরাম ও প্রশান্তির জন্য আলতো মালিশের প্রয়োজন মনে করি।”
চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর পর নিয়মিত ফেইশল করা কেবল ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায় না বরং নিজেকে খুব প্রাণবন্ত করতেও সহায়তা করে।
ঘরে বনাম পেশাদার ফেইশল
ঘরে ফেইশল করার মতো প্রয়োজনীয় বা উন্নত মানের জিনিস থাকতে পারে। এক্ষেত্রে মনে হতে পারে যে, ঘরে ফেইশল করাই যথেষ্ট, স্যালনে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে কার্যকারিতার দিক থেকে এই দুই ধরনের ফেইশলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
টেম্পল বলেন, “প্রাথমিকভাবে ইউরোপিয়ান ফেইশল করতে ৬০ মিনিটের মতো সময় লাগে। এতে সাধারণত ক্লিনজিং, মাস্ক, স্টিম, এক্সট্রাকশন ও ম্যাসাজ বা মালিশ অন্তর্ভুক্ত থাকে।”
তিনি আরও বলেন, স্যালনে সৌন্দর্যবিদরা যে ধরনের ফেইশল করেন তা মূলত ‘ডিপ ক্লিনিং’ বা গভীর থেকে ত্বক পরিষ্কারের কাজ করে। এতে স্টিমার এবং এক্সট্রাকশনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়।
সাধারণত, বিশেষভাবে তৈরি ডিভাইস ব্যবহার করা হয় যা প্রদাহ কমায় এবং এদের মালিশ করার ধরনের কিছুটা পার্থক্য থাকে। ফলে ত্বকে টানটান ভাব আসে এবং ফোলা ভাব কমাতে ভূমিকা রাখে।
এখানে অনেক বেশি পেশাদার ভিত্তিক প্রসাধনী যেমন ঘন ‘পিলস’, উন্নত মানের ‘ব্যাক বার’ এবং খুচরা প্রসাধনী পাওয়া যায় যা ত্বকের বিশেষ চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।
অন্যদিকে, এর সুবিধা হল তাদের জ্ঞান ও ত্বক সম্পর্কে বোঝার ক্ষমতা যা সবকিছুই আপনার ত্বকের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান দিতে প্রয়োজন।
সৌন্দর্যবিদেরা সাধারণত ত্বকে ডর্মা প্ল্যানিং, এলইডি থেরাপি, মাইক্রোকারেন্ট, গুয়া শা, মাইক্রো নিডেলিং, কেমিকেল পিল, দক্ষ মালিশের কৌশলের মাধ্যমে প্রাথমিক ত্বকের পরিচর্যা করে থাকেন।
এছাড়াও ত্বকের বিশেষ কোনো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষ সেবা যেমন- লেজার ট্রিটমেন্ট, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ও অন্যান্য ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা দিয়ে থাকে।
টেম্পল বলেন, “এইগুলো ফেইশলের সাথে বাড়তি ৩০ মিনিট যোগ করা হয়। যা ত্বকের ধরন ও সমস্যা বুঝে নির্ধারণ করা হয়।”
ফেইশলের পরে করণীয়
ফেইশলের পরে ত্বকের পরিচর্যা করা বাঞ্ছনীয়। মানে হল- সন্ধ্যায় এবং সকালে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করা এবং সপ্তাহে দুয়েকবার বাড়তি যত্ন নেওয়া বা ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
টেম্পল বলেন, “আপনি দিনে দুবার ত্বকের যত্ন নেওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু একজন সৌন্দর্যবিদ প্রতি চার থেকে ছয় সপ্তাহ বা মৌসুম ভিত্তিক, কোনো অনুষ্ঠানের আগে বা বিশেষ কোনো ত্বকের সমস্যায় আপনার ত্বকের পরিচর্যা করে দেয়।”
ত্বকের কার্যকর যত্ন নেওয়ার জন্য বাড়িতে অনেক কিছুই করা যায়। তবে একটি নিয়ম মেনে ত্বক পরিচর্যা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আর ত্বক ভালো রাখতে ঘনঘন নতুন প্রসাধনী ব্যবহার না করাই ভালো।
ছবি: আরিনা ক্রাসনিকোভা, পেক্সেলেস ডটকম।
আরও পড়ুন