‘এয়ারপোর্ট অ্যাংজাইটি’ যে কারও হতে পারে। বিশেষ করে বিমানে প্রথম ভ্রমণ করলে।
Published : 10 Dec 2023, 06:17 PM
বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে উদ্বেগ কাজ করা স্বাভাবিক। কারণ অনেকেরই উড়তে ভয় লাগে।
আবার প্রথম যারা বিমান ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা কাজ করে বিমানবন্দর নিয়ে যা ‘এয়ারপোর্ট অ্যাংজাইটি’ হিসেবে পরিচিত।
উপায় জানা থাকলে এই উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ও ভ্রমণ আরামদায়ক হয়।
রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন থেরাপিস্ট ও লাইফ কোচ ড্যানিয়েল রিনাল্ডি বলেন, “এমন অনুভূতি হওয়া অস্বাভাবিক বা অবাস্তব নয়।”
তার মতে, “বিমানবন্দর অনেক বড় ও জটিল জায়গা। যারা সাধারণত খুব একটা ভ্রমণ করেন না তাদের জন্য আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। পাশাপাশি ভ্রমণের মানসিক চাপ উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দেয়।”
তাছাড়া অনেক মানুষের ভিড়ে জায়গা খুঁজে না পাওয়া, কোথায় যেতে হবে তা বুঝে উঠতে না পারা, পরিবেশ প্রতিকূল না থাকা ইত্যাদি উদ্বেগ বৃদ্ধি করে।
নিজের অনুভূতিকে মূল্য দেয়া
মাঝেমধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই উদ্বেগ কাজ করতে পারে, এমনটা বিমানবন্দরেও হয়। তাছাড়া বিমানবন্দরে এমন অনেক ধাপ পার হতে হয় যা কোনো শান্ত ব্যক্তির মাঝেও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক থেরাপিস্ট ক্রিস্টিনা গ্রানাহান বলেন, “অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, অধিকাংশ মানুষ ‘ফ্লাইট’ ধরতে পারবেন না এমন ভয়ে থাকেন। এটা বিমান যাত্রার কয়েক দিন বা সপ্তাহর আগে থেকে শুরু হতে পারে। তবে এর মাত্রা তীব্র হয় বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরে।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্লাইট ‘মিস’ করার পাশাপাশি, সন্ত্রাসী, অপরিচিত অবস্থা, ব্যাগ রেখে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া-সহ নানান নিরাপত্তা ও আইনগত বিষয়গুলো উদ্বেগ সৃষ্টি করে।”
এমন পরিস্থিতি খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি বিমানবন্দরে একা নন আপনার সাথে আরও অনেকেই রয়েছে।
বাড়তি সময় দেওয়া
বিমানবন্দরে অনেক ঘটনা ঘটতে পারে যা আমাদের আওতার বাইরে। যেমন- লম্বা লাইন পড়া, যান্ত্রিক ত্রুটি ইত্যাদি।
তাই যে কোনো পরিস্থিতি সামলাতে হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত হওয়া জরুরি।
রিনাল্ডি বলেন, “পূর্ণ প্রস্তুতি উদ্বেগ কমাতে পারে। যেমন- যাত্রার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখা, আগে থেকে ব্যাগ গুছিয়ে রাখা, পুনরায় যাত্রার বিবরণী খেয়াল করা ইত্যাদি। বিমানবন্দরে আগে পৌঁছানো এবং সকল মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামলে নিতে নিজেকে যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত।”
গাড়িতে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে রাস্তার সার্বিক অবস্থা, যানজট বা কোনো সমাবেশ আছে কিনা সে সম্পর্কে আগে থেকে সজাগ থাকা প্রয়োজন।
ব্যাগ প্রস্তুত করা
লাগেজ গোছানোর সময় এর ওজন বিমানের নির্ধারিত ওজনের সমান আছে কি-না তা দেখে নিতে হবে। প্রয়োজনে আগে থেকে মেপে নিতে হবে। এতে অহেতুক ঝামেলা এড়ানো যায়।
সঠিক পোশাক পরিধান করা
গ্রানাহান বলেন, “আরামদায়ক পোশাক ও জুতা পরা উচিত। এতে ঠাণ্ডা বা ঘামে কষ্ট হবে না।”
কয়েক স্তরের পোশাকের ক্ষেত্রে যাতে সহজে পরা ও খোলা যায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ বিমানবন্দর ও বিমানের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা না গরম থাকবে তা আগে থেকে বোঝা যায় না।
গভীর শ্বাস নেওয়া
রিনাল্ডি, নিজেকে শান্ত করার কৌশল হিসেবে বড় শ্বাস নেওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বা গেটে বসে অপেক্ষা করার সময় ধীরে ধীরে নাক দিয়ে বড় বড় শ্বাস গ্রহণ করা ও মুখ দিয়ে ছাড়া উচিত। এতে স্নায়ুতন্ত্র প্রশমিত হবে এবং উদ্বেগ কমবে।”
নিজেকে ব্যস্ত রাখা
নিজেকে শান্ত রাখতে মনকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে পডকাস্ট বা অডিওবুকে কারও মজার সাক্ষাৎকার অথবা আকর্ষণীয় কোনো ঘটনা শোনা যেতে পারে।
তাছাড়া পছন্দের গান শোনা উদ্বেগ কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
কথা বলা
রিনাল্ডি পরামর্শ দেন, “যাত্রার সময় পাশের যাত্রীর সাথে কথা বলা উদ্বেগ কমাতে সহায়ক। এতে মানসিক ও আবেগিক সহায়তা পাওয়া যায়।”
কারও সাথে কথা বলা বা অভিজ্ঞতা সহভাগিতা করা স্বাচ্ছন্দ্য অনুভবে সহায়ক।
আরও পড়ুন