মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে সাত বীরকে মরণোত্তর বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে আছে জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নানান স্মৃতি।
Published : 16 Dec 2015, 12:09 PM
বিজয়ের মাসে তাঁদেরকে সম্মান জানানো পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন জায়গাগুলো থেকে।
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ চত্বরে রয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের সমাধি। মসজিদের পূর্ব আঙিনার দক্ষিণ পাশে বর্ণিল পাথরে বাঁধাই করা দুটি সমাধির একটি ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের। মসজিদের দেয়ালের বাইরে নির্মাণ করা হয়েছে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর স্মৃতিসৌধ।
এছাড়া বরিশালের বাবুগঞ্জে তাঁর সম্মানে ইউনিয়নের নামকরণ করা হয়েছে ‘মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর’ ইউনিয়ন। আর নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার।
বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে পাকিস্তান সরকার করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণীর একটি সমাধিস্থানে সমাহিত করেছিল। তবে ২০০৬ সালের ২৩ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে এনে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থানে সমাহিত করা হয়। এই বীর সেনানীর সম্মানে এখন নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা রামনগর গ্রামের নাম ‘মতিউর নগর’। এখানে আছে একটি গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান
সর্বকনিষ্ঠ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের মৃতদেহ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে সামান্য দূরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পারিবারিক সমাধিস্থানে শায়িত ছিল। নিচু জায়গা হওয়ায় সমাধিটি এক সময় পানিতে তলিয়ে যায়। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকার হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে। পরে তাঁর দেহাবশেষ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকার বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থানে সমাহিত করা হয়।
এছাড়া শ্রীমঙ্গলের ধলই সীমান্তে আছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ। তাঁর নিজ গ্রাম ঝিনাইদহের ‘খোর্দ খালিশপুর’য়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে হামিদনগর। সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে হামিদুর রমান স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামালের সমাধিসৌধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগরে। তার সম্মানে ভোলা জেলার মৌটুপীর গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে কামাল নগর। বাংলাদেশ সরকার সেখানে নির্মাণ করেছে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ
এই বীর সেনার সমাধি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ার চরে। তবে তাঁর জন্মস্থল ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার সালামতপুরের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘রউফ নগর’। সরকার সেখানে প্রতিষ্ঠা করেছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিনের সম্মানে তাঁর গ্রাম নোয়াখালী জেলার বাগপাদুরা’র নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে আমিননগর। তাঁর বাড়ির সামনে সরকার নির্মাণ করেছে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ’র সমাধি যশোর জেলার কাশিপুর গ্রামে। এই বীরশ্রেষ্ঠকে সম্মান জানাতে তাঁর জন্মস্থান নড়াইল জেলার সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে নূর মোহাম্মদ নগর। সরকার সেখানে গড়ে তুলেছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার।