রুটি কোনটা খাবেন? সাদাটা নাকি বাদামিটা?
Published : 28 Dec 2023, 04:18 PM
গম থেকে প্রস্তুত আটা ও ময়দা থেকেই তৈরি হয় পাউরুটিসহ অন্যান্য রুটি।
তবে সাদা ও বাদামি রুটির মধ্যে পুষ্টিবিষয়ক অনেক পার্থক্য রয়েছে।
আটা ও ময়দার রুটির মধ্যে পার্থক্য
আটা দেখতে কিছুটা লালচে আর ময়দা দেখতে হয় সাদা।
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন পুষ্টিবিদ লিসা মিলব্র্যান্ড বলেন, “সাদা রুটির জন্য তৈরি করা ময়দা অনেক বেশি মিহি করা হয়। ফলে অনেক পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায়। তুষ (আঁশ সমৃদ্ধ অংশ) ও খোসা (পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ) সরানোর ফলে শ্বেতসার সমৃদ্ধ অ্যান্ডোস্পার্ম ছাড়া আর কিছু থাকে না।”
গোটা গমের আটা তুষ ও অঙ্কুর সমৃদ্ধ যা মজাদার পুষ্টিকর রুটি, পাস্তা ও বেইক করা খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
গোটা গম থেকে প্রস্তুতকৃত আটার রুটির স্বাস্থ্যোপকারিতা
এই ধরনের রুটিতে পুষ্টিগুণ যেমন থাকে তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিশেষত যদি এগুলো পরিশোধিত বেইক করা খাবারের পরিবর্তে গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ: গম আঁশ সমৃদ্ধ। তাই এর থেকে তৈরি আটার রুটিতেও আঁশ থাকে প্রচুর।
এক টুকরা সাদা রুটিতে এক গ্রামের কম পরিমাণ আঁশ থাকে। অন্যদিকে, আটার রুটিতে প্রায় চার গ্রাম পরিমাণ আঁশ পাওয়া যায়। ফলে দৈনন্দিন আঁশের চাহিদার ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম এর মাধ্যমে মেটানো যায়।
পুষ্টিগুণ বেশি: গোটা গমের আটার তৈরি খাবারের পুষ্টিমান পরিশোধিত সাদা ময়দার তুলনায় বেশি (যদি না এতে বাড়তি ভিটামিন ও খনিজ উপাদান যোগ করা হয়ে থাকে)।
ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম এবং ফোলেইট গোটা গমের আটার তৈরি রুটিতে পাওয়া যায়।
প্রোটিনের মাত্রা বেশি: ময়দা বা সাদা আটার চাইতে লাল আটার তৈরি রুটিতে ২৫ শতাংশ বেশি পরিমাণ প্রোটিন থাকে। ফলে ধীরে পরিপাক হয় এবং পেশির ভর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে: গবেষণায় দেখা গেছে, যে গোটা শস্যের তৈরি খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা প্রদাহ কমায়, বিশেষত যাদের আগে থেকেই এই ধরনের কোনো জটিলতা আছে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: গোটা গমের আটার রুটিতে আছে জটিল কার্বোহাইড্রেইট যা পরিপাকে বেশি সময় নেয়। ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় না।
পরিশোধিত ময়দার রুটিতে এই মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: গোটা গমের আটার তৈরি রুটিতে তুলনায় পুষ্টিমান বেশি থাকায় হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়। বিশেষত, বয়স্কদের হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতে পারে।
সাবধানতা
যদিও গোটা গম থেকে তৈরি আটার রুটি বেশ স্বাস্থ্যকর। তবে কারও হজমের সমস্যা থাকলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন- সেলিয়াক ডিজিজ, গ্লুটেন সংবেদনশীলতা অথবা অ্যালার্জি বা অস্বস্তিকর বাওয়েল সিনড্রোম।
এক্ষেত্রে গমের রুটি ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ব্যথা, পেট ফোলাভাব অথবা গ্যাস সৃষ্টি করে থাকে।
যেভাবে বুঝবেন রুটিটি সম্পূর্ণ গোটা গমের আটা থেকে তৈরি
পণ্য ক্রয়ের আগে ভালোমতো ওপরে লেবেলটা পড়ে নিতে হবে। যদি লেবেলের গায়ে লেখা থাকে ৫০% প্লাস, মানে হল এতে প্রতি পরিবেশনে কমপক্ষে অর্ধেক পরিমাণ গোটা শস্য রয়েছে।
অন্যদিকে যদি ১০০% থাকলে বুঝতে হবে এতে প্রতি পরিবেশনে সম্পূর্ণ গোটা শস্যের পুষ্টিগুণ পাওয়া যাবে।
তাছাড়া গোটা গমের তৈরি আটার রুটির রং হবে লালচে।
আরও পড়ুন