মানসিক চাপ কমাতে পারে শারীরিক কর্মকাণ্ড যা হৃদস্বাস্থ্য উন্নতিতে প্রভাব ফেলে।
Published : 29 Apr 2024, 04:29 PM
সাধারণ জ্ঞান হিসেবে জানা কথা যে, ব্যায়াম মানসিক ও হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে।
শারীরিক উপকরিতা ছাড়াও সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ব্যায়াম মানসিক চাপের সঙ্কেত কমিয়ে দেয় মস্তিষ্কে। ফলে হৃদসংক্রান্ত অসুস্থতায় ভোগার মাত্রা হ্রাস পায়।
‘আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণার জন্য ‘ম্যাস জেনারেল ব্রিগাম বায়োব্যাংক’য়ের ৬০ বছর বয়সি ৫০ হাজার অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক কর্মকাণ্ড, মানসিক চাপ সম্পর্কিত মস্তিষ্কের সংকেত ও হৃদস্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
ম্যাস জেনারেল হসপিটাল’য়ের হৃদবিজ্ঞানি ও বস্টনের ‘হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল’য়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আহমেদ তাওয়াকোল এই গবেষণার ভিত্তিতে বলেন, “যারা বেশি ব্যায়াম করেছেন তাদের মস্তিষ্কে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় মানসিক চাপের সংকেত কমতে দেখা গেছে।”
আর এরফলে কমেছে হৃদরোগের ঝুঁকি- সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন এই চিকিৎসক।
গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও ডেনভার’য়ে অবস্থিত ‘ন্যাশনাল জিউইশ হেল্থ’য়ে ‘কার্ডিওভাস্কুলার প্রিভেনশন অ্যান্ড ওয়েলনেস’য়ের পরিচালক ডা. অ্যান্ড্রু ফ্রিম্যান একই প্রতিবেদনে বলেন, “এই ধরনের গবেষণার ভিত্তিক তথ্য যখনই প্রকাশিত হয় তখন সেই অনুসারে জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিবর্তন করা উচিত।
এই যে তথ্যটা পাওয়া গেল, একটা যেমন খরচের ব্যাপার নেই তেমনি ওষুধের চাইতে ভালো পদ্ধতি।
তাওয়াকোল বলেন, “আশ্চর্যজনকভাবে আমরও আরও দেখতে পেয়েছি, যারা মানসিক চাপে ভুগছেন তাদের তুলনায় যার ভুগছেন না- তাদের ক্ষেত্রে উপকারিতা দ্বিগুন।”
এছাড়া হৃদসংক্রান্ত অসুস্থতার ঝুঁকি কমার সাথে ব্যায়াম করার পরিমাণ ছাড়াও, পরিবেশ ও পারিবারিক ইতিহাসও প্রভাব রাখে।
যাদের মানসিক চাপে ভোগার কোনো ইতিহাস নেই তাদের হৃদসংক্রান্ত অসুস্থতার ঝুঁকি কমার ক্ষেত্রে সপ্তাহে ৩শ’ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যথেষ্ট। তবে যারা বিষণ্নতায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে পরিমাণ বাড়াতে হবে- জানান তাওয়াকোল।
যেভাবে কাজ করে
“ব্যায়াম মানসিক চাপের সংকেত কমায় আর মস্তিষ্কে কর্মকাণ্ড-বিষয়ক সংকেত বাড়ায়”- বলেন, ডা. তাওয়াকোল।
মানসিক চাপের সংকেতের সাথে প্রদাহ, স্নায়ুতান্ত্রিক জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ ও ধমনি আটকে যাওয়ার রোগের সম্পর্ক রয়েছে। আর ব্যায়াম এসবের মাত্রা কমিয়ে হৃদসংক্রান্ত অসুস্থতার ঝুঁকি কমায়।
যে ধরনের ব্যায়াম কার্যকর
নির্দিষ্ট কোনো একটি ব্যায়াম যে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
ফ্রিম্যান বলেন, “শরীরচর্চা বজায় রাখতে খেলোয়াড় হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে মনে রাখতে হবে মানব শরীর তৈরি হয়েছে নড়াচড়া করার জন্য। যত নড়াচড়া হবে বিশেষ করে প্রকৃতির মাঝে- ততই সেটা উপকারী। এই গবেষণার তথ্যও সেটাই প্রমাণ করে।”
তিনি আরও বলেন, “হতেই পারে আপনি হাঁটতে বা সাইকেল চালাতে পছন্দ করেন না। না করলে নাই। সেগুলো জোর করে করতে হবে না। বরং কোনো শারীরিক কর্মকাণ্ড আপনাকে ভালোলাগায় সেটা খুঁজে বের করুন।”
খালি মনে রাখতে হবে, শরীরের যোগ্যতা অনুযায়ী একটু বেশি জোড় দিতে হবে। যেমন- ইতিমধ্যেই যদি হাঁটায় অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তবে এবার সময় হয়েছে একটু জোরে হাঁটা বা দৌড়ানোর।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন
ব্যায়াম ছাড়াও স্বাস্থ্যবান থাকার পন্থা