রাম কোটাকে দেখলে প্রথম প্রথম একটু ধাঁধাঁয় পরতে হয়। আচ্ছা এটা কি কোনো ধরণের বানর? এটা কি খুব বড় কোনো ইঁদুর জাতীয় প্রাণী? কিন্তু যখন জানা যায় এটা কাঠবিড়ালি তখন একটু অবাক না হয়ে উপায় কী? এত বড় কাঠবিড়ালি? তার আবার মুখ দেখতে ইঁদুরের মতো। হাত পা বানরের মতো? এমন লম্বা লেজ। বানরের মতো পা বেয়ে দ্রুত চলা, সামনের পা দুটিকে হাতের মতো ব্যবহার করে খাবার খাওয়া। এটা বানর না হয়ে কীভাবে যায়?
Published : 09 Oct 2017, 02:23 PM
রাম কোটা একটা কাঠবিড়ালি। ওদের বসবাস ঘন বনে লম্বা বৃক্ষের একদম উপরের দিকে। ফলে ওদের সম্পর্কে মানুষ খুব কমই জানে। সাধারণত মানুষের তৈরি বনেও ওরা থাকে না। শুধু প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়া বনেই ওদের দেখা মেলে।
বিশাল এ কাঠবিড়ালি মূলত তৃণভোজী। এরা একই সঙ্গে ফল, ফলের ভিতরের শক্ত বীজ খেতে পারে, এমনকি তারা পাতাও খায়, বিশেষ করে কচি পাতা ওদের বেশ পছন্দ।
রাম কোটার পোশাকি নাম বড় কাঠবিড়ালি বা বড় কালো কাঠবিড়ালি ইংরেজিতে বলা হয় মালায়ান জায়েন্ট স্কুইরেল (Malayan giant squirrel)। রাম কোটা লম্বায় এক মিটারের বেশি হতে পারে। মাথা-দেহ ৪২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৬০ সেন্টিমিটার হতে পারে। ওজন প্রায় দুই কেজির মত। দেহের ওপরটা গাঢ় বাদামি থেকে কালো রঙের। গাল, গলা, বুক-পেট ও চার হাত-পায়ের ভেতরের দিকটা হালকা হলুদ বা সাদা রঙের। লম্বা লেজ কালো ও ঝোপালো হুলো বেড়াল আর ঘোড়ার মাঝামাঝি একটা অবস্থা। ওদের কান দুটোও বেশ বড় কালো। কানে গোছার মতো চুল থাকে।
বিশাল এই কাঠবিড়ালিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠবিড়ালির খেতাব দেওয়া হয়েছে। তবে দুঃখের কথা হচ্ছে এই কাঠবিড়ালির নাম আইইউসিএনের বিপদগ্রস্ত তালিকায় উঠে গিয়েছে। কারণ এক তো এই প্রাণীগুলো থাকেই ঘন বনে। আমাদের যুগে পৃথিবীতে সব জায়গায়ই ঘন বন পাওয়া দায়! তার উপর উঁচু গাছ পাওয়া তো আরও কঠিন। মানুষ নিত্যদিন নানান কাজে এইসব গাছগুলোকে নির্বিচারে কেটে ফেলছে। কাঠবিড়ালিগুলি যাবে তো কথায় যাবে?
চীন, নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া এই দেশগুলোতে রাম কোটাকে দেখতে পাওয়া যায়। তবে যেহেতু ওরা গভীর বনে থাকে সেখানে তাদের জীবনকাল কেমন সেটা বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছেন না তবে আবদ্ধ অবস্থায় ওরা ১৯ বছরের মধ্যে বাঁচে।