পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।
Published : 26 Mar 2025, 09:18 PM
দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি সন্জীদা খাতুন। লেখক, গবেষক, সংগীতজ্ঞ, শিক্ষক, সংগঠকসহ নানা পরিচয় রয়েছে তার। এই মানুষটি তার পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন বাঙালির সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় বিকাশে।
ভাষা আন্দোলনের সময় ‘মিনু আপা’ নামে পরিচিত এই সংগ্রামী নারী ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক।
সন্জীদা খাতুন তার শিক্ষাজীবন কাটিয়েছেন কামরুন্নেসা গার্লস স্কুল এবং ইডেন কলেজের আঙ্গিনায়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৮ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
পেশাগত জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছায়ানট প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য।
তার হাত ধরেই বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ছায়ানট। এই সংগঠনের আয়োজনে বাংলা নববর্ষের সকালে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আজ একটি জাতিগত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
এছাড়াও তিনি প্রচলিত ধারা থেকে ভিন্নধর্মী শিক্ষার ধারক ‘নালন্দা’ প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
সন্জীদা খাতুন এত কিছুর ভিড়ে লেখালেখিও করতেন। তার লেখা বইয়ের সংখ্যা ১৬টি, যার মাধ্যমে তিনি পাঠককে নিয়ে গেছেন বাঙালি মননের গভীরে।
অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার এবং ভারতের পদ্মশ্রীসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
পহেলা বৈশাখের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে, মঙ্গলবার, তিনি না-ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসবে আর কখনো তাকে দেখা যাবে না। তবে তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণা হয়ে বেঁচে থাকবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।